বিদেশি শক্তি দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক বসানোর পরিকল্পনা বিএনপির: ওবায়দুল কাদের
বিদেশি শক্তিকে দিয়ে বিএনপি দেশে দুই বছরের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার বসানোর পরিকল্পনা করছে, এমন অভিযোগ করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর হাজারীবাগে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত ‘শান্তি সমাবেশে’ এ কথা বলেন তিনি। সমাবেশে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘এখন আবার বিদেশি শক্তিকে দিয়ে ওয়ান-ইলেভেনের মতো দুই বছরের জন্য নিজেদের ইচ্ছে অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়ক একটা বসাবে। আর আমরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ললিপপ খাব? কেমনে এটা মনে করলেন? সব খবর আমরা রাখি। কোথায় কোথায় ষড়যন্ত্র হচ্ছে? ওয়ান-ইলেভেনের দুঃস্বপ্ন দেখে আর লাভ নেই।’
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘বিএনপি এখনো মনে মনে মন কলা খাচ্ছে। নিজের দলের ফখরুদ্দীন, মঈনুদ্দিনকে বসাবে। আমরা বেঁচে থাকতে সেটা আর হবে না।’
তত্ত্বাবধায়ক সরকার উচ্চ আদালত বাতিল করেছেন উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, উন্নত বিশ্বের কোনো দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো আজব সরকার কোথাও নেই। বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে মনে মনে ‘মন কলা’ খাচ্ছে। মানুষ পোড়াবে, দেশে বিশৃঙ্খলা করবে এমন তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রয়োজন নেই। বিএনপি আসুক বা না আসুক, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে।
আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার সময় শেষ—বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি একটু জানতে চাই, ফখরুল সাহেব, আমীর খসরু সাহেব, কবে শেষ? দিন-তারিখ বলুন। ১৪ বছর ধরে তো শুনছি। বলে রোজার ঈদের পর, কোরবানির ঈদের পর, তারপর বলে বর্ষার পর, পরীক্ষার পর। এই বছর না ওই বছর? আন্দোলন হবে কোন বছর? দেখতে দেখতে ১৪ বছর। মানুষ বাঁচে কয় বছর?’ তিনি আরও বলেন, ‘ফখরুল সাবেক, সময় যখন শেষ, প্রেস কনফারেন্স (সংবাদ সম্মেলন) করার সময়টা জানিয়ে দেবেন? আমরা এক গোছা গোলাপ, রজনীগন্ধা নিয়ে হাজির হব। সময়টা বলেন। যেন আমরা সময়মতো আপনাদের হাতে ক্ষমতা তুলে দিতে পারি।’
নিত্যদিনের জনভোগান্তি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, লোডশেডিং একেবারেই বন্ধ হবে। নিত্যপণ্যের দাম ও সংকট কমে যাবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, দুই সিটি নির্বাচনে মানুষের অংশগ্রহণে বিএনপি হতাশ। তারা দুঃস্বপ্ন দেখেছিল সাধারণ মানুষও ভোট বর্জন করবে। আওয়ামী লীগ পরাজিত হলে বিএনপি বলবে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। এ ছাড়া কখনোই তারা সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা স্বীকার করবে না।
ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনা যখন বিদেশে সম্মানিত হন, বাংলাদেশের মানুষ খুশি হয়। কষ্ট পায় বিএনপি। তাদের কলিজা শুকিয়ে যায়। শেখ হাসিনা সম্মান আনছেন দেশের জন্য, এটা যখন দেখে, তখন তাদের মুখের দিকে তাকানো যায় না।
নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগ প্রস্তুত উল্লেখ করে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী। যারা বাধা দেয়, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি তাঁদের বাধা দেয় কি না, তা দেখতে চান তাঁরা। তিনি বলেন, গাজীপুর, খুলনা, বরিশালের মতো সামনের সব নির্বাচন সুন্দর হবে। সংবিধানের নিয়ম কারও জন্য অপেক্ষা করে না।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন ও কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, ঢাকা ১০ আসনের সংসদ সদস্য শফিউল আলম মহিউদ্দিন প্রমুখ। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, সঞ্চালক ছিলেন ঢাকা দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির।