ইসি রাশেদা সুলতানা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম

বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম ফল পাল্টানোর যে অভিযোগ করেছেন, তার ভিত্তি নেই বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা। তিনি আজ বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন।

গতকাল বুধবার বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের উপনির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী এ কে এম রেজাউল করিম তানসেনের কাছে মাত্র ৮৩৪ ভোটের ব্যবধানে হেরে গেছেন হিরো আলম। ফলাফল ঘোষণার পর হিরো আলম অভিযোগ করেছেন, উপনির্বাচনের ফলাফল কারচুপি করা হয়েছে। ন্যায়বিচার পেতে উচ্চ আদালতেও যাওয়ার কথা বলেন তিনি।

আজ হিরো আলমের এই অভিযোগ নিয়ে নির্বাচন কমিশনে তাঁর দপ্তরে কথা বলেন ইসি রাশেদা সুলতানা। তিনি বলেন, ‘ফলাফল পাল্টে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন...এর কোনো ভিত্তি নাই। ’

রাশেদা সুলতানা আরও বলেন, ‘আমরা বগুড়ার জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলে, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা প্রত্যেকের সঙ্গে স্যার (সিইসি) নিজে কথা বলেছেন। তাঁরা আশ্বস্ত করেছেন এ ধরনের কোনো তথ্য তাঁদের কাছে নেই। ফলাফল শতভাগ ঠিকভাবে হয়েছে।’

নির্বাচনের ফল নিয়ে আর কোনো তদন্তে যাবেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘না। আমরা সন্তুষ্ট। ফলাফলের শিটগুলো আমরা নিজেরাও মিলিয়ে দেখেছি। সেখানে কোনো ব্যত্যয় নেই। একজন প্রার্থী যখন হেরে যায়, আমাদের দেশের কালচার এমনই। একজন প্রার্থী হেরে গেলে প্রশ্নবিদ্ধ করার একটা প্রবণতা আছে। এটা কেবল হিরো আলম নন, যতগুলো নির্বাচন করেছি, সব জায়গাতেই একই অবস্থা লক্ষ করেছি।’

আরও পড়ুন

ভোট চুরি হয়নি, লজ্জাজনকভাবে ফলাফল চুরি হয়েছে

গতকাল ফলাফল ঘোষণার আগেও অনিয়মের অভিযোগ করেন হিরো আলম। তিনি বলেন, ‘দুই উপজেলার ১১২টি কেন্দ্রেই এজেন্ট দিয়েছিলাম। কিন্তু কেন্দ্র থেকে এজেন্টদের ফলাফলের স্বাক্ষরিত কপি দেওয়া হয়নি।’

হিরো আলমের এ অভিযোগ প্রসঙ্গে রাশেদা সুলতানার বক্তব্য, ‘আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি, উনি নন্দীগ্রামে খুব একটা এজেন্ট দেননি। জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা হয়েছে। আমি নিজেও অনেকগুলো কেন্দ্র পরিদর্শন করেছি। সেখানে ওনার এজেন্ট পাইনি। কাহালুতে ওনার কিছু এজেন্ট ছিল। যেহেতু সেটা ওনার নিজের এলাকা। ওনার বাড়ি কাহালুতে। নন্দীগ্রামে ওনার বাড়ি নয়। যে কারণে খুব একটা এজেন্ট ছিল না।’

গতকাল বুধবার দুপুরে কাহালু-নন্দীগ্রামের বিভিন্ন কেন্দ্র ঘোরার পর হিরো আলম বলেছিলেন, ‘কাহালু-নন্দীগ্রামের অনেক কেন্দ্র ঘুরে ঘুরে দেকচি। ভোট খুব সুষ্ঠু হচ্চে। মাঠের অবস্থা খুবই ভালো। কাহালু-নন্দীগ্রামের নিশ্চিত এমপি হচ্চি।’

আরও পড়ুন

নির্বাচন কর্মকর্তাকে সিইসির ফোন, হিরো আলমের অভিযোগ খতিয়ে দেখার নির্দেশ

আজ নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘উনি হেরে গেছেন, এখন এসব অভিযোগ করছেন। টেলিভিশনে দেখেছি উনি বরাবরই বলেছেন ভোট ভালো হয়েছে। একটা সাক্ষাৎকারে বলেছেন হেরে গেলে কীভাবে নেবেন, উনি বলেছেন হেরে গেলে ফলাফল মেনে নেবেন। এখন উনি হেরে গেছেন। ওনার কষ্ট হয়েছে। কষ্ট নানাভাবে প্রকাশ করছেন। এটা উনি করতেই পারেন। একজন কিছু বললেই তো হয়ে যায় না। প্রমাণ থাকতে হবে।’

আরও পড়ুন

আমার বিজয় ছিনতাই হয়েছে, আদালতে রিট করব: হিরো আলম