আনোয়ার হোসেন খান দাবি করেন, তাঁর বয়স ৯৭ বছর। যদিও জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তাঁর বয়স ৮৮ বছর। তবে বয়সের কারণে তিনি একা চলাফেরা করতে পারেন না। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের এই বাসিন্দা আজ বৃহস্পতিবার গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন।
আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের পাগাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট দেন আনোয়ার হোসেন খান। তিনি ভোট দিয়ে ফেরার সময় সবাইকে উদ্দেশ করে গর্বের সঙ্গে বলছিলেন, ‘আমার ৯৭ বছর বয়স। আমি ভোট দিয়েছি।’
আনোয়ার হোসেন খান বয়সের কারণে কানে কম শোনেন। তাঁর সঙ্গে কথা একটু উচ্চস্বরে কথা বলতে হয়। প্রথম আলোর এ প্রতিবেদকের পরিচয় পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, তিনি ৭০ বছর ধরে সংবাদপত্রের এজেন্ট হিসেবে কাজ করেছেন। পাঠকের কাছে সংবাদপত্র পৌঁছে দেওয়াতেই তাঁর আনন্দ ছিল। এখন বয়সের কারণে তাঁর এই ব্যবসা দেখেন ছেলে ইমরান খান।
আনোয়ার হোসেন খান বলেন, তিনি ৭০ সালের নির্বাচন থেকে শুরু করে সব নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন। এটা তাঁর কাছে উৎসবের মতো। তবে তিনি ইভিএমে প্রথমবার ভোট দিয়েছেন। নিজের ভোট নিজেই দিয়েছেন। ইভিএমে তাঁর কোনো সমস্যা হয়নি।
পাগাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুটি ভোটকেন্দ্র। এই বিদ্যালয়ে ৩২৯ নম্বর কেন্দ্রে মোট ভোটার ১ হাজার ৮৯৫ জন। সকাল ১০টা পর্যন্ত ১৬১ জন ভোট দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন এই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার মো. মোরশেদ আল ফেসানী। তিনি বলেন, সকালে ভোটার–উপস্থিতি কম ছিল। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেটি বাড়ছে।
পাগাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩২৮ নম্বর কেন্দ্রে ভোটার–সংখ্যা ১৯৫৭। এই কেন্দ্রে সকাল ১০টা পর্যন্ত ১৮৬টি ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার নিজানুল করিম।
দুটি কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার জানিয়েছেন, স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুনের কোনো এজেন্ট বুথে আসেননি। তবে তাঁরা কেন আসেননি, সেটি বলতে পারছেন না তাঁরা। তবে সব কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা খানের পোলিং এজেন্ট দেখা গেছে।
জায়েদা খাতুন সাবেক মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের মা।
৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের আরেকটি কেন্দ্র টঙ্গী আশরাফুল উলুম ইসলামিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা কেন্দ্রের একটি বুথে গিয়ে দেখা যায়, স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুনের একজন এজেন্ট আছেন। তাঁর নাম শিল্পী রানী ঘোষ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডে তিনি ছাড়া জায়েদা খাতুনের আর কোনো এজেন্ট নেই। কেন নেই জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না।
টঙ্গী আশরাফুল উলুম ইসলামিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার মোহাম্মদ শোয়াইব ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, এই কেন্দ্রে ভোটার আছেন ২ হাজার ৫১৭ জন। বেলা পৌনে ১১টা পর্যন্ত ভোট দিয়েছেন ৪৮০ জন।
স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুনের এজেন্ট ভোটকেন্দ্রে নেই কেন, জানতে চাইলে প্রিসাইডিং অফিসার মোহাম্মদ শোয়াইব ভূঁইয়া বলেন, এটা তিনি জানেন না।