সামাজিক পরিচয়–নির্বিশেষে সকল নারীর ক্ষমতায়ন

নাগরিক উদ্যোগ ও প্রথম আলোর আয়োজনে ‘সামাজিক পরিচয়–নির্বিশেষে সকল নারীর ক্ষমতায়ন’ শীর্ষক এক গোলটেবিল অনুষ্ঠিত হয় ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ঢাকার প্রথম আলো কার্যালয়ে।

আনু মুহাম্মদ

অধিকারকর্মী ও অধ্যাপক

গত ১৫ বছরে সমাজে শ্রেণিভিত্তিক বৈষম্য বেড়েছে। কিছু মানুষের হাতে বিপুল সম্পদ কেন্দ্রীভূত হয়েছে এবং ক্ষমতা আরও কেন্দ্রীকৃত হয়েছে। এই শ্রেণিগত বৈষম্য সমাজে বিশাল একটি সমস্যা সৃষ্টি করছে, যা শুধু ক্ষমতার কেন্দ্রীভূতকরণ এবং স্বার্থরক্ষার কারণে বেড়েছে।

অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ কীভাবে হবে, সে আলোচনা এখন করা দরকার। এখন সেই আলোচনার সুযোগ এসেছে। এই সুযোগ হাতছাড়া করা যাবে না। কারণ, এই সময়ে দুঃখজনক হলেও ‘বৈষম্যবাদী’ মতাদর্শেরও উত্থান ঘটেছে। নারী–পুরুষের বাইরে অন্য লিঙ্গপরিচয়ের মানুষ যে রয়েছে, তা এত দিন আলোচনার বাইরে ছিল। শ্রেণিগত বৈষম্যের কারণে মানুষ স্বৈরতন্ত্রের ব্যাপকতা দেখেছে।

বৈচিত্র্য ও বৈষম্যের যে পার্থক্য আছে, সেটাও আলোচনায় আনা উচিত। আমাদের বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে এবং বৈচিত্র্যকে রক্ষা করতে হবে। বৈচিত্র্য প্রাকৃতিক এবং সমাজের অস্তিত্বের জন্য অপরিহার্য। উদাহরণ হিসেবে, পাঁচটা আঙুল পাঁচ রকম, কিন্তু তারা কোনো বৈষম্যের শিকার নয়। তারা তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী কাজ করে এবং একে অপরের সঙ্গে সমন্বয়ে চলে। ঠিক একইভাবে, সমাজে বৈচিত্র্য থাকা স্বাভাবিক, কিন্তু বৈষম্য থাকা কোনোভাবেই উচিত নয়। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ মানে, সব বৈষম্যের উৎসকে চিহ্নিত করে তার বিরুদ্ধে দাঁড়ানো। বৈষম্যের চারটি প্রধান উৎস রয়েছে: ধর্মপরিচয়, জাতি, লিঙ্গ ও শ্রেণি।

বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গঠন করতে হলে আমাদের বৈষম্য নিয়ে প্রশ্ন করতে হবে এবং তার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। একই সঙ্গে বৈচিত্র্যকে উৎসাহিত করতে হবে এবং উদ্‌যাপন করতে হবে, কারণ বৈচিত্র্যের মধ্যেই আমরা সমৃদ্ধি ও সফলতা অর্জন করতে পারি।

সুমাইয়া ইসলাম

সদস্য, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন ও নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ নারী শ্রমিক কেন্দ্র

বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন কাজ করছে। বাংলাদেশে যেসব বিষয় সাধারণত সামনে আসে না, সেসব বিষয়ের গভীরে গিয়েও কাজ শুরু করেছে কমিশন। কমিশন থেকে বেশ কিছু কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা হচ্ছে নারীদের প্রতি বৈষম্য নিরসনের লক্ষ্যে। আমাদের চেষ্টা রয়েছে এতে যেন সমাজের সব পর্যায়ের নারীর অভিজ্ঞতা ও মতামত অন্তর্ভুক্ত হয়। একই সঙ্গে এটি বাস্তবসম্মত ও কার্যকর করতেও কমিশন চেষ্টা করছে।

গৃহশ্রমিক থেকে শুরু করে প্রতিটি নারী শ্রমিকের শ্রমের আইনগত স্বীকৃতি দিতে হবে। এটি মোটেও সহজ কাজ নয়। সমাজ ও ধর্মীয় কুসংস্কারের প্রভাবের কারণে বৈষম্যের শিকড় অনেক গভীরে ছড়িয়ে রয়েছে। নারী তো পুরুষের শত্রু নয়, বরং বৈষম্যই হচ্ছে বড় শত্রু।

আমাদের সামনে এখন আশার আলো রয়েছে, যা আমাদের বিশ্বাস করতে শেখাচ্ছে, সবাই একসঙ্গে কাজ করলে আমরা বৈষম্যের বিরুদ্ধে আরও শক্তিশালী হতে পারব।

নারীর সমতার আইন, বিধান, শিক্ষা ও চলাফেরার স্বাধীনতার ক্ষেত্রে আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আমরা বুঝতে শিখেছি, বলতে শিখেছি, আন্দোলন করতে শিখেছি।

নারীদের অনুরোধ করব, শক্ত হাতে নিজের জায়গায় দাঁড়ান। নারীর সমতা ও অধিকারের জন্য লড়াই চালিয়ে যান। আমাদের সঙ্গে যেকোনো প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন। এই লড়াই একসঙ্গে লড়তে হবে। কারণ, আমাদের ভবিষ্যৎ এই লড়াইয়ের ওপর নির্ভর করছে।

কল্পনা আক্তার

সদস্য, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন এবং সভাপতি, বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও শিল্পশ্রমিক ফেডারেশন

নারীরা যদি নিজেদের অধিকারের পক্ষে কথা না বলেন, তাহলে কেউ তাঁদের পক্ষে বলবে না। এই শিকল ভাঙতে হলে নারীদের নিজেদের কথা নিজেদেরই বলতে হবে। এই বাস্তবতায়, নিজেদের অধিকার আদায়ে সক্রিয় হওয়া অপরিহার্য। কারণ, আমাদের কথা যদি আমরা না বলি, কেউ বলবে না। এই লড়াই আমাদেরই করতে হবে।

নারীদের প্রতিদিনই নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়। আমাদের সমাজে নারীর এই সংগ্রাম ঘরে এবং কর্মক্ষেত্রে কেউ সেলিব্রেট করে না। অথচ এই সেলিব্রেশনটা অত্যন্ত জরুরি। নারী ক্ষমতায়নের যে শব্দ, সেটা ঘর থেকেই শুরু করতে হবে। নারীকে সম্মান করতে হলে পরিবারের প্রতিটি সদস্যকে তাঁর অবদান বুঝতে হবে। আমরা যৌনকর্মীদেরও শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি চাই। শ্রম আইন অনুযায়ী তাঁদের কাজ শ্রম হিসেবে গণ্য করা হয় না।

নারীর প্রতিবন্ধকতার সব শিকল ভাঙতে হবে। আমাদের কণ্ঠ জাগাতে হবে। কারণ, যদি একজনের জন্য কথা না বলি, সবার জন্য সমাধান আসবে না।

সংসদে নারীদের সংরক্ষিত আসন রয়েছে ঠিকই, যা শুধুই আলংকারিক। নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সরাসরি নির্বাচনের বিধান রেখে সংরক্ষিত আসনের বরাদ্দ রাখতে হবে। আমাদের নারীদের প্রতিনিধিত্ব করার মানসিকতা নিয়ে কাজ করতে হবে। সব কাজ আমরা নিজেরা করতে পারব না। সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। সবার কাছে আমার অনুরোধ, কথা বলা শুরু করুন—নিজের জন্য, সবার জন্য। সর্বত্র কথা বলুন। থেমে গেলে চলবে না।

জাকির হোসেন

প্রধান নির্বাহী, নাগরিক উদ্যোগ

আমাদের সমাজের প্রচলিত অনেক প্রথা পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতারই প্রতিফলন। ক্ষুদ্র জাতিসত্তা ও অন্যান্য জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিদ্যমান সামাজিক প্রথাগুলোর কারণে নারীদের নেতৃত্বের সুযোগ কম।

মাঠপর্যায়ে কাজ করতে গিয়ে দেখেছি, অনেক এলাকায় এক জনগোষ্ঠী আরেকজনকে গ্রহণ করতে চায় না। উদাহরণস্বরূপ, দলিত, হিজড়া ও উর্দুভাষী সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে যৌথ সামাজিক আন্দোলনে অংশগ্রহণের বিষয়ে অন্যরা আপত্তি করেন। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর অধিকার আদায় ও নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে এ প্রবণতার পরিবর্তন হওয়া প্রয়োজন। সামাজিক পরিচয়–নির্বিশেষে সব নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে হলে পারস্পরিক সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে এবং সমান সুযোগের ব্যবস্থা করতে হবে।

নাগরিক উদ্যোগ বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করছে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ও সংখ্যালঘুদের নিজস্ব সংস্থা ও নেতৃত্বই নিজেদের নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারে। আমাদের মতো প্রতিষ্ঠানের এখানে সহায়কের ভূমিকা নেওয়াই বাঞ্ছনীয়।

১৯৯৭ সালে ইউনিয়ন পরিষদে সরাসরি নারী সদস্য নির্বাচন শুরু হয়। এর পর থেকে নারীদের সামাজিক কাজে অংশগ্রহণ বেড়েছে। কিন্তু এখনো সমসুযোগের সৃষ্টি হয়নি, যাতে তাঁরা সমাজে সমপরিমাণ অবদান রাখতে পারেন। একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বৈষম্যহীন সমাজ গড়ার স্বপ্ন দেখি, যেখানে সব নাগরিকেরই পরিচয়–নির্বিশেষে সমমর্যাদা নিশ্চিত হবে।

নারীর ক্ষমতায়নের জন্য আমাদের বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জগুলোর দিকে নজর দিতে হবে। নেতৃত্ব, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং প্রান্তিক নারীদের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করার মাধ্যমে একটি সমতাভিত্তিক সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব।

মনি রাণী দাস

সাধারণ সম্পাদক, দলিত নারী ফোরাম

পারিবারিক ও সামাজিক বাধাগুলো নারীদের এগিয়ে যাওয়ার পথে সবচেয়ে বড় বাধা। শিক্ষালাভের সুযোগ থেকে দলিত নারীরা অনেক পিছিয়ে। যাঁরা পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন, তাঁরা তাঁদের অধিকার আদায়ে পিছিয়ে আছেন। এমনকি ঢাকা শহরের মতো জায়গায়ও তাঁদের পঞ্চায়েত কমিটির ভোট দেওয়ার অধিকার নেই। জাতীয় নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সুযোগ থাকলেও পঞ্চায়েত কমিটিতে কেন ভোট দেওয়ার অধিকার থেকে তাঁরা বঞ্চিত হবেন? আমাদের দলিত সমাজে নারীরা সালিসে অংশগ্রহণ বা বিচারকার্য পরিচালনা করাকে সহজভাবে নেওয়া হয় না।  

দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর অধিকার আদায়ের জন্য ২০১২ সাল থেকে বৈষম্যবিরোধী আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু জাতীয় সংসদে এখনো এই আইন পাস করা সম্ভব হয়নি।

নারীদের ক্ষমতায়নের জন্য প্রথমেই প্রয়োজন শিক্ষার প্রসার। শিক্ষিত দলিত নারীদের যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে। দলিত নারীরা যদি তাঁদের ক্ষমতা ও অধিকার বুঝতে পারেন, তবে তাঁরা সমাজে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনতে সক্ষম হবেন। 

নারীদের পাশাপাশি পুরুষদের মধ্যেও সচেতনতা তৈরি করতে হবে। পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা বদলানোর জন্য তাঁদেরও শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের আওতায় আনতে হবে। আমাদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠী অধিকার আন্দোলন’ পুরুষদের সঙ্গেও কাজ করছে। আমরা চাই বৈষম্য দূর করে একসঙ্গে কাজ করতে।

নারীদের অধিকারের লড়াই কেবল তাঁদের নিজস্ব লড়াই নয়; এটি একটি বৃহত্তর সামাজিক আন্দোলন। সমাজের প্রতিটি স্তরে পুরুষ ও নারীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমেই এই লড়াই সফল হতে পারে। এই পরিবর্তনের জন্য সরকারের সহযোগিতা এবং সমাজের সবার অংশগ্রহণ জরুরি।

জোবাইদা নাসরীন

অধ্যাপক, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

নারীর ক্ষমতায়ন শুধু অর্থনৈতিক উন্নয়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক দিক। নারীর ক্ষমতায়নের মাপকাঠি সবার জন্য এক রকম হতে পারে না, কারণ নারীদের অবস্থান, পরিবেশ ও প্রেক্ষাপট ভিন্ন।

নারী কোনো সমগোত্রীয় শ্রেণিভুক্ত নয়। একজন বাঙালি নারী যেমন হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ বা খ্রিষ্টান হতে পারেন, তেমনি ধর্মের মধ্যেও তাঁরা ভিন্ন ভিন্ন গোষ্ঠীতে অবস্থান করেন। আদিবাসী নারীদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য, যেমন চাকমা, গারো, সাঁওতাল ও অন্যান্য জনগোষ্ঠীর নারীরা ভিন্ন ভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হন। প্রান্তিক নারীদের জন্য ক্ষমতায়ন সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং। বিশেষ করে দলিত নারীরা ধর্ম, বর্ণ ও অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে অনেক বেশি প্রান্তিক অবস্থানে আছেন। এই প্রান্তিকতা তাঁদের ক্ষমতায়নের প্রক্রিয়াকে আরও জটিল করে তোলে।

নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে হলে রাজনৈতিক অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে এবং সমাজের সব স্তরে নারীদের সমানভাবে স্বীকৃতি দিতে হবে।

বেসরকারি সংস্থা, নারী সংগঠনগুলো দীর্ঘদিন ধরে নারীর অধিকার, সমতা ও সামাজিক ন্যায়ের জন্য সংগ্রাম করে আসছে। ক্ষমতায়ন শুধু নারী-পুরুষের সমতা নয়, বরং সমাজের প্রতিটি স্তরে নারীর সমান অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। নারীর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করতে হবে এবং তাঁদের সামাজিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। এসব প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।

নারীর ক্ষমতায়ন মানে পুরুষের বিরুদ্ধতা নয়, বরং পুরুষতন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াই। পুরুষও পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার শিকার। তাই পুরুষকেও নারীর সঙ্গে দাঁড়াতে হবে, পুরুষতন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে।

স্নিগ্ধা রেজওয়ানা

সহযোগী অধ্যাপক, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

নারীকে তাঁর নিজস্ব পরিচয় এবং আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এগিয়ে যেতে সহায়তা করাই হবে নারীর ক্ষমতায়নের মূলমন্ত্র। জলবায়ু পরিবর্তন, সামাজিক বৈষম্য ও অর্থনৈতিক প্রান্তিকতা নারীদের আরও অধঃস্তলতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এর থেকে উত্তরণের জন্য নীতিগত, মানসিক ও কাঠামোগত পরিবর্তন জরুরি। 

জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসন মানে শুধু সুবিধাভোগী নারীদের প্রতিনিধিত্ব নয়। এখানে শ্রমিকশ্রেণির নারী, হরিজন, চা–শ্রমিক এবং অন্যান্য প্রান্তিক নারীকে জায়গা দিতে হবে। নারীর ক্ষমতায়নের জন্য নীতিমালা ও সামাজিক মানসিকতার পরিবর্তন জরুরি।

নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে চূড়ান্ত সমাধানের পথে ‘ইন্টারসেকশনাল লেন্স’ প্রয়োজন। কোনো একক পদক্ষেপ দিয়ে সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। নারীর সামাজিক অবস্থান, অর্থনৈতিক ক্ষমতা ও অন্যান্য প্রান্তিক বাস্তবতাকে বিবেচনায় নিয়ে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

ফাতেমা সুলতানা শুভ্রা

সহযোগী অধ্যাপক, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

নারীর প্রতি সহিংসতার ক্ষেত্রে বহুমাত্রিক বৈষম্যের প্রভাব বিবেচনা করা প্রয়োজন। শুধু অস্ত্রধারী সহিংসতার বাইরেও মানসিক, সামাজিক এবং ভাষাগত বৈষম্যের দিকগুলোকে গুরুত্ব দিতে হবে। আইন ও নীতিমালার পুনর্বিবেচনা এবং নারীর প্রতি সহিংসতার পটভূমিতে আরও গভীরভাবে বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন।

বাংলাদেশের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে জবানবন্দি শুধু বাংলা ভাষায় রেকর্ড করা যায়, অন্য কোনো ভাষায় নয়। ফলে আদিবাসী নারী বা ভিন্ন ভাষাভাষী নারীরা আইনি সহায়তা পাওয়ার ক্ষেত্রেও বৈষম্যের শিকার হন।

টাঙ্গাইলে একবার গবেষণার কাজে গিয়েছিলাম। এক নারী ছিলেন, যাঁর ধর্ষণ মামলা কোনোভাবেই এগোয়নি। কারণ, তিনি দৃষ্টিহীন। তিনি ধর্ষণকারীকেই শনাক্ত করতে পারছিলেন না। নারীর প্রতি সহিংসতার সংজ্ঞা এবং আইনি প্রতিকারের ক্ষেত্রে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে হবে।

সাইমি ওয়াদুদ

প্রভাষক, আইন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

কোনো একজন ব্যক্তি একটি পরিচয়ের অধিকারী নন, বরং একাধিক পরিচয়ের মিশ্রণে তাঁর অস্তিত্ব নির্মিত হয়। একজন নারী যখন দরিদ্র, আদিবাসী, প্রতিবন্ধী কিংবা রূপান্তরকামী—এসব পরিচয়ের ভিন্নমাত্রা নিয়ে এগিয়ে আসেন, তখন তার জীবনে সৃষ্ট বৈষম্যগুলোকেও সেভাবেই দেখতে হবে।

ইতিবাচক বৈষম্যের লক্ষ্যে নারী কোটা, আদিবাসী কোটা, প্রতিবন্ধী কোটা অথবা লিঙ্গবৈচিত্র্য কোটা ইত্যাদি ভাবা হয়ে থাকে। কিন্তু আন্তসংযুক্ততার ভাবনা এতে অনুপস্থিত। ২০২২ সালে প্রস্তাবিত বৈষম্য নিরোধ আইন নিয়ে যথেষ্ট আলোচনা হচ্ছে না।

নারী, আদিবাসী, প্রতিবন্ধী ও অন্যান্য প্রান্তিক গোষ্ঠীর জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক আইন এবং নীতিমালা প্রণয়ন না করলে বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য অর্জন করা অসম্ভব। এ জন্য আইন, নীতিমালা এবং তা বাস্তবায়নের প্রতিটি ধাপে আন্তসংযুক্ততার বিষয়টি বিবেচনায় রাখতে হবে।

সুলতানা বেগম

সভাপতি, গ্রিন বাংলা গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশন

আমাদের পোশাক খাতের উৎপাদনে নারী শ্রমিকেরা মুখ্য ভূমিকা রাখলেও তাঁরা মজুরির ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হন। একই কাজের জন্য পুরুষের তুলনায় নারীদের কম মজুরি দেওয়া হয়।

সরকারি চাকরিতে ছয় মাস মাতৃত্বকালীন ছুটি দেওয়া হলেও পোশাকশিল্পে এই ছুটি মাত্র চার মাস। এই বৈষম্য দূর করা খুবই জরুরি; কারণ, এটি নারীর পেশাগত অগ্রগতিতে বাধা সৃষ্টি করে।

বাংলাদেশে ট্রেড ইউনিয়ন ও ফেডারেশনে নারী প্রতিনিধিত্ব অত্যন্ত সীমিত। অনেক ফেডারেশনে নারীবিষয়ক সম্পাদক পদ থাকলেও তা কার্যকরভাবে নারীদের স্বার্থ রক্ষা করতে পারে না।

যতক্ষণ পর্যন্ত প্রতিটি ফেডারেশনের নেতৃত্বে নারীদের যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত করা না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত নারীর প্রকৃত মর্যাদা নিশ্চিত হবে না। তাই প্রতিটি শ্রমিক সংগঠনে নারী প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধির উদ্যোগ নিতে হবে।

ডালিয়া চাকমা

লিড, জেন্ডার অ্যান্ড ইন্টারসেকশনালিটি, এসপিএআরসি

বাংলাদেশে ‘আদিবাসী নারী’ বলতে মূলত চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা আদিবাসীদের কথা বেশি করে আলোচিত হয়। কিন্তু এর বাইরেও দেশে অর্ধশতাধিক আদিবাসী জাতিগোষ্ঠী রয়েছে। আদিবাসীদের সমস্যাগুলো একরৈখিকভাবে দেখা হয়। এর ফলে অন্য আদিবাসীদের সংকটগুলো ঠিকমতো উঠে আসে না। আদিবাসীদের পরিচয়–সংকট এই প্রতিনিধিত্বের অভাব থেকেই আসে।

নারী উন্নয়নকর্মীদের ভূমিকা ও অংশগ্রহণের কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামে নারী হেডম্যান এবং নারী কার্বারিদের ক্ষমতায়ন হচ্ছে। তাঁরা নারীদের সমস্যাগুলো নিয়ে কথা বলার সুযোগ পাচ্ছেন। ফলে আদিবাসী নারীরা তাঁদের প্রতি সহিংসতা নিয়ে কথা বলতে পারছেন।

পার্বত্য চট্টগ্রামে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে আদিবাসী নারীদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে রয়েছে। তাঁদের জীবনের নিরাপত্তা, সুষ্ঠু বিচার ও স্থিতিশীলতা আনতে হবে। তাহলেই আদিবাসী নারীরা ক্ষমতায়নের পথে এগিয়ে যাবে।

ফওজিয়া খোন্দকার ইভা

মানবাধিকার কর্মী ও প্রতিষ্ঠাতা, প্রাগ্রসর

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলো থেকে যে কাজ শুরু হয়েছিল, তার অন্যতম ছিল ‘ইন্টারসেকশনালিটি’—যেটি সমাজে বিভিন্ন ধরনের বৈষম্য ও অসামঞ্জস্যগুলোকে একত্রে বিচার করার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা। একসময় নারীর ক্ষমতায়নের ধারণা সমগোত্রীয় ছিল। দরিদ্র নারীদের মধ্যেও প্রতিবন্ধী নারী, আদিবাসী নারী ও আরও অনেক বৈষম্যের শিকার নারী রয়েছে। আমি মনে করি, এই নারীদের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত না করে নারীর ক্ষমতায়ন প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।

অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নারীর জীবনমান পরিবর্তনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নারীর সামগ্রিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে, নারীর গৃহপরিসর ও জনপরিসরের কাজগুলোকে সমান গুরুত্ব দিয়ে সমন্বিত করতে হবে। যত দিন না আমরা এই গৃহপরিসরের কাজগুলোকে সামাজিক স্বীকৃতি দেব, তত দিন নারীর ও পুরুষের মধ্যে সমতা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে না। তাই, আমাদের সমাজে বিদ্যমান বৈষম্য দূর করতে হলে, ইন্টারসেকশনালিটি এবং নারীর ক্ষমতায়ন বিষয়ে কাজ করতে হবে।

প্রভাত টুডু

আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট

আমরা নারী-পুরুষ সাম্যের কথা বলি, কিন্তু আদিবাসী ও দলিত নারীদের মধ্যে এখনো বড় বৈষম্য বিরাজমান। স্বাধীনতার পাঁচ দশক পরেও জাতীয় সংসদে আদিবাসী নারীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। উত্তরবঙ্গের আদিবাসী সংগঠনগুলো দীর্ঘদিন ধরে সংরক্ষিত আসনে একজন ‘আদিবাসী নারী’ প্রতিনিধি নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে, কিন্তু সেই দাবি উপেক্ষিত থেকে গেছে।

উত্তরবঙ্গের ৩৯টি আদিবাসী নারী সম্প্রদায় উত্তরাধিকারসূত্রে জমি বা সম্পত্তির ভাগ পান না। অধিকাংশ ক্ষেত্রে হিন্দু উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী তাঁদের অধিকার নির্ধারিত হয়, যা আদিবাসী নারীদের জন্য বৈষম্যের একটি বড় উদাহরণ। এমনকি খ্রিষ্টধর্ম অনুসারী আদিবাসী নারীরাও এই বৈষম্যের শিকার, কারণ তাঁদের উত্তরাধিকারও এখনো হিন্দু আইন অনুযায়ী নির্ধারিত হয়।

আদিবাসী নারীদের স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে প্রতিনিধিত্বের সুযোগ দিতে হবে। উত্তরবঙ্গ থেকে শুরু করে দেশের সব অঞ্চলের নারীদের জাতীয় সংসদসহ প্রশাসনিক পর্যায়ে অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি।

তামান্না সিং বারইক

প্রতিনিধি, চা–বাগান দলিত কমিউনিটি

বাংলাদেশে সিলেট ও চট্টগ্রামে চা জনগোষ্ঠীর বসবাস ২০০ বছর পেরিয়ে গেছে। ব্রিটিশ ভারতের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে চা জনগোষ্ঠীর মানুষেরা সিলেট অঞ্চলে এসেছে। এত দীর্ঘকাল পরেও চা জনগোষ্ঠীর অবস্থা এখনো শোচনীয়। বেশির ভাগ নারী শ্রমিক চাপাতা তোলার কাজ করেন।

চা–বাগানে নারীরা নানা সমস্যার সম্মুখীন হয়, যার মধ্যে অর্থনৈতিক সমস্যা সবচেয়ে বড়। এখানে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ সীমিত। চা–বাগানে নারীদের জন্য আলাদা টয়লেটের ব্যবস্থা নেই। নারীদের জন্য প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এখানে পর্যাপ্ত চিকিৎসক নিয়োগ দিতে হবে। চা–বাগানে নারীদের শিক্ষার প্রসার ও ক্ষমতায়ন বৃদ্ধির জন্য আমাদের আরও উদ্যোগী হতে হবে।

এ ছাড়া বাল্যবিবাহ রোধে কাজ করতে হবে, জাতপাতের সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নিতে হবে এবং নারীদের জন্য বাংলাদেশের সব আইন সুনির্দিষ্টভাবে চা–শ্রমিকদের জন্য বাস্তবায়ন করতে হবে।

রিনা আকতার

সভাপতি, কল্যাণময়ী নারী সংঘ

আমরা কাজ করি ভাসমান যৌনকর্মী বোনদের নিয়ে, যারা সমাজের সবচেয়ে অবহেলিত একটি অংশ। আমাদের বড় সমস্যা হলো, আমাদের মেয়েরা যখন মারা যায়, তখন তাদের কবর দিতে কিংবা শেষকৃত্য সম্পন্ন করার জন্য কেউ পাশে থাকে না। আমাদের মেয়েদের অনেকেরই জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নেই। কারণ, তাদের বেশির ভাগেরই স্থায়ী কোনো বাসস্থান নেই। সামাজিকভাবে তারা যেন বৈষম্যের শিকার না হন, সেই উদ্যাগ নিতে হবে।

আমাদের মেয়েরা নিজেদের কাজের কথা বাইরে বলতে ভয় পায়। কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের পেশার জন্যও একটি সম্মানজনক জায়গা থাকা উচিত, যেন সমাজ আমাদের পাশে দাঁড়ায়। আমরা কাজ করি। আমরাও শ্রম দেই। আমাদের এই পেশাকে এখনো সমাজ স্বীকৃতি দেয়নি।

আমরা চাই সমাজ আমাদেরও শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি দিক। সমাজ আমাদের পাশে রাখুক এবং আমাদের জন্য একটি ভালো জায়গা তৈরি করুক।

আভা মুসকান তিথি

ট্রান্সজেন্ডার নারী

বাংলাদেশে নারী অধিকার নিয়ে অনেক কাজ হচ্ছে। তবে যাঁরা নিজেকে নারী মনে করেন, কিন্তু জন্মগতভাবে নারী নন—তাঁদেরকে সমাজের মানুষেরা এখনো গ্রহণ করছে না। আমরা মুখে বলি, আমরা বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চাই, কিন্তু নিজেদের অজান্তেই আমরাও কি বৈষম্য করি না?

নারী অধিকারকর্মীদের সেমিনার, আলোচনা বা বৈঠকে আমরা সাধারণত শিক্ষিত নারীদেরই দেখি। কিন্তু বৈচিত্র্যময় জনগোষ্ঠী, যেমন ট্রান্সজেন্ডার বা রূপান্তরিত নারীদের সেই জায়গায় রাখছি না, তাঁদের নিয়ে ভাবছি না, তাঁদের কথা বলছি না। নারী অধিকারকর্মীদের বলব, হিজড়া ও ট্রান্সজেন্ডার নারীদের আলোচনায় এবং কর্মক্ষেত্রে যুক্ত করতে হবে। তাঁদের কথাও শুনতে হবে। ট্রান্সজেন্ডার নারীদেরও তো ক্ষমতায়ন প্রয়োজন।

নারী হিসেবে রূপান্তরিত নারীদের গ্রহণ এবং তাঁদের অধিকার রক্ষা নারীবাদী ও মানবাধিকার আন্দোলনের প্রতি সত্যিকারের অঙ্গীকার প্রকাশ করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

কাজল রেখা

প্রতিনিধি, উর্দুভাষী কমিউনিটি

বেশির ভাগ উর্দুভাষী নারী শিক্ষার ক্ষেত্রে এখনো অনেক পিছিয়ে রয়েছেন। নিজে শিক্ষিত না হলেও উর্দুভাষী নারীরা নিজের সন্তানকে লেখাপড়া করাচ্ছেন। তাঁরা এখন শিক্ষার গুরুত্ব বুঝতে পেরেছেন এবং নিজের সন্তানকে শিক্ষার দিকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।

উর্দুভাষী নারীদের অবস্থার কথা বললে বলতে হয়, তাঁরা শিক্ষার ক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে রয়েছেন। প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়েও তাঁদের সচেতনতা খুব কম।

কর্মক্ষেত্রে সঠিক মজুরি না পাওয়ার কারণে পিছিয়ে যাচ্ছেন। উর্দুভাষী নারীরা অনেক দক্ষ। তাঁরা বিভিন্ন হাতের কাজ করতে পারেন, যেমন জামাকাপড়ের সুতার কাজ, কারচুপির কাজ ইত্যাদি। তবে তাঁরা তাঁদের এই দক্ষতাগুলো ঠিকমতো বাজারজাত করতে পারছেন না।

এর ফলে তাঁরা জীবিকা ও উপার্জনে পিছিয়ে পড়ছেন। এসব বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে আরও কাজ করা প্রয়োজন। বিশেষ করে যুব সম্প্রদায়ের এই বিষয়ে আরও বেশি উদ্যোগ নিতে হবে।

এ ছাড়া আরও অংশগ্রহণ করেন সোহরাব হাসান, যুগ্ম সম্পাদক, প্রথম আলো। রাবেয়া বেবী, স্টাফ রিপোর্টার, দৈনিক ইত্তেফাক । রীতা ভৌমিক, সাংবাদিক। সুনিতা নেপালী, প্রফেশনাল ফেলো, এনওআরইসি, নেপাল। আনিতা নেপালী, প্রফেশনাল ফেলো, এনওআরইসি, নেপাল। নাদিরা পারভীন, প্রকল্প ব্যবস্থাপক, নাগরিক উদ্যোগ। মৌসুমী রায়, প্রকল্প কর্মকর্তা, নাগরিক উদ্যোগ। সঞ্চালনা: ফিরোজ চৌধুরী, সহকারী সম্পাদক, প্রথম আলো

সুপারিশ

  • অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ কীভাবে হবে, সে আলোচনা এখন দরকার।

  • দলিত, চা–জনগোষ্ঠী, হিজড়া ও উর্দুভাষী সংখ্যালঘু নারীদের অগ্রগতির লক্ষ্যে পদক্ষেপ নিতে হবে।

  • গৃহশ্রমিক থেকে শুরু করে প্রত্যেক নারীর আইনগত স্বীকৃতি দিতে হবে।

  • নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়টি ঘর থেকেই শুরু করতে হবে।

  • বৈষম্যবিরোধী আইন জাতীয় সংসদে পাস করতে হবে।

  • নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে হলে রাজনৈতিক অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে।

  • জলবায়ু পরিবর্তনে নারী কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তা আলোচনায় আসা দরকার।