আম্পায়ারদের সিদ্ধান্তে ধারাবাহিকতা ছিল না: মাহমুদ

ডারবান টেস্টে আম্পায়ারদের দেওয়া সিদ্ধান্ত নিয়ে সন্তুষ্ট নন বাংলাদেশের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদফাইল ছবি

ডারবান টেস্টে সিদ্ধান্ত দেওয়ার ক্ষেত্রে আম্পায়ারদের ধারাবাহিকতা ছিল না, এমন বলেছেন বাংলাদেশের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ। আম্পায়ারদের সিদ্ধান্ত পক্ষে এলে ২৭৪ রানের জায়গায় ১৮০ রান তাড়া করতে হতো বাংলাদেশকে, মাহমুদের দাবি এমন। নিরপেক্ষ আম্পায়ার ফিরিয়ে আনার বিষয়টি আইসিসির বিবেচনা করা উচিত বলেও মনে করেন বাংলাদেশের সাবেক এই অধিনায়ক।

আম্পায়ারদের সিদ্ধান্ত নিয়ে অসন্তুষ্টি দেখা গেছে খেলোয়াড়দের মধ্যেও
এএফপি

ডারবান টেস্টের চতুর্থ দিন নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে নিরপেক্ষ আম্পায়ার ফিরিয়ে আনার কথা বলেছেন পারিবারিক কারণে এ টেস্টে না খেলা সাকিব আল হাসান। চতুর্থ দিন পর্যন্ত ডারবান টেস্টে এলবিডব্লুর রিভিউয়ে চারটি আম্পায়ারস কল হয়েছে, এর তিনটিই ছিল বাংলাদেশের রিভিউয়ে। আর চতুর্থ দিন প্রথম ২টি উইকেটই বাংলাদেশ পেয়েছিল রিভিউ নিয়ে, যদিও ঠিকঠাক রিভিউ করলে উইকেট পেতে পারত আরেকটিও। অবশ্য পরে ১টি উইকেট পেলেও সেটি আবার বদলে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকার নেওয়া রিভিউয়ে।

আরও পড়ুন

তবে দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে সরাসরিই আম্পায়ারিংয়ের সিদ্ধান্ত নিজেদের বিপক্ষে যাওয়ার কথা বলেছেন মাহমুদ, ‘একটা টেস্ট ম্যাচে একটা সিদ্ধান্ত, একটা ব্যাটসম্যানের আউট হয়ে যাওয়ার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে। আজ সকাল থেকে আমরা সবাই দেখেছি, লুকোনোর কিছু নেই—বেশ কিছু সিদ্ধান্ত আমাদের বিপক্ষে গেছে। হয়তোবা সিদ্ধান্তগুলো যদি আগেই পেতাম (আমাদের পক্ষে), আমরা ২৭০ না তাড়া করে ১৮০ তাড়া করতে পারতাম।’

ডারবানে আম্পায়ারদের অনেক সিদ্ধান্তই চোখে লেগেছে
এএফপি

এরপরই নিরপেক্ষ আম্পায়ার ফিরিয়ে আনার ‘দাবি’ জানিয়েছেন তিনি, ‘আম্পায়ারদের প্রতি সব রকমের সম্মান আছে। “আম্পায়ার ইজ দ্য বেস্ট জাজ”, তাদের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হবে। হয়তোবা একটা রিভিউ ভয়ে নেওয়াই হয়নি আমাদের, নিলে আরেকটা উইকেট পেতাম। সত্যি কথা বলতে, আম্পায়ায়ের সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে এত অধারাবাহিকতা অনেক দিন পর দেখলাম। এখন তো সারা বিশ্বই খুলে গেছে, সে ক্ষেত্রে আম্পায়ারিংয়ের বিষয়টা আইসিসির আরেকটু দেখা উচিত। নিরপেক্ষ আম্পায়ার দেওয়া উচিত।’

আম্পায়ারদের এমন সিদ্ধান্তের প্রভাব খেলার ওপর পড়ে, মাহমুদ মনে করিয়েছেন সেটিও, ‘এ উইকেট বোলারদের জন্য একটু হলেও সহায়ক, তবে সেটি স্পিনারদের জন্য। পেসারদের ক্ষেত্রে কিন্তু কঠিন, একেবারে ঠিক জায়গায় বল ফেলেই উইকেট নিতে হবে। পুরো গতি আর ছন্দে লম্বা স্পেল করা বোলারের জন্য কঠিন। তখন যদি দেখে একটা উইকেট পেতে পারত (কিন্তু পায়নি), তাহলে মনোবল ভেঙে যায়।’

নিরপেক্ষ আম্পায়ার থাকলে খেলাটা আরেকটু স্বচ্ছ হয়, সেটি সবাই-ই চাই আমরা
খালেদ মাহমুদ

আজ এমন ঘটনার উদাহরণও দিয়েছেন মাহমুদ, ‘মিরাজের এমন একটা আবেদন নাকচ হয়ে যাওয়ার পর ওভারের বাকি ৪-৫টা বলই শর্ট লেংথে করেছে। “আম্পায়ার ইজ দ্য বেস্ট জাজ”, কিন্তু দুই দলের জন্যই ধারাবাহিক থাকতে হয়। আমাদের চাওয়া, নিরপেক্ষ আম্পায়ার হলে সবচেয়ে ভালো হয়। আপনি সব রকম চেষ্টা করতে পারেন, জয়-পরাজয় থাকতেই পারে, এটা খেলার অংশ। কিন্তু কথা হচ্ছে, নিরপেক্ষ আম্পায়ার থাকলে খেলাটা আরেকটু স্বচ্ছ হয়, সেটি সবাই-ই চাই আমরা।’

আরও পড়ুন

করোনাভাইরাস মহামারির আগে টেস্ট ম্যাচ পরিচালনা করা দুজন অন ফিল্ড আম্পায়ারই থাকতেন নিরপেক্ষ দেশের, ওয়ানডেতে যে সংখ্যা ছিল এক। তবে করোনার কারণে সে নিয়ম শিথিল করে স্থানীয় অফিশিয়ালদের দিয়ে ম্যাচ পরিচালনা করানো শুরু করে আইসিসি। অবশ্য বাংলাদেশের মতো যেসব দেশে আইসিসির এলিট প্যানেলের আম্পায়ার নেই, সেখানে টেস্ট ম্যাচে সাধারণত একজন নিরপেক্ষ আম্পায়ার দায়িত্ব পালন করেছেন এ সময়েও।
ডারবান টেস্টে অন ফিল্ড দায়িত্ব পালন করছেন মারাইস এরাসমাস ও আড্রিয়ান হোল্ডস্টক। গত বছর আইসিসির বর্ষসেরা আম্পায়ারের পুরস্কার পাওয়া এরাসমাসের এটি ৭১তম টেস্ট, হোল্ডস্টকের সপ্তম টেস্ট।

আরও পড়ুন