স্ত্রীরা সঙ্গে থাকায় ভারত সিরিজ হারেনি, কারণ অন্য

অস্ট্রেলিয়ায় ৩–১ ব্যবধানে বোর্ডার–গাভাস্কার ট্রফি হেরেছে ভারত।এএফপি

অস্ট্রেলিয়ায় বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফি হেরে আসার পর ভারতের ক্রিকেটাররা এখন চাপের মধ্যে। যার অংশ হিসেবে ভারতের ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই খেলোয়াড়দের জন্য অবশ্য পালনীয় হিসেবে ১০টি নির্দেশনা দিয়েছে। যার মধ্যে আছে বিদেশ সফরে স্ত্রী-সন্তানদের বেশি দিন সঙ্গে না রাখা, আলাদাভাবে হোটেলে, মাঠে না যাওয়ার নির্দেশনা।

ভারতের সাবেক ক্রিকেটার হরভজন সিং এ সব নির্দেশনা দেখে যারপরনাই বিরক্ত। তাঁর মতে, অস্ট্রেলিয়ায় ভারতের হারের কারণ খেলোয়াড়দের সঙ্গে স্ত্রী-সঙ্গী থাকা নয়। অন্যান্য নির্দেশনাও তাঁর কাছে নতুন মনে হচ্ছে না। এমনকি বিভিন্ন বিষয়ে প্রধান কোচ থেকে পূর্ব অনুমতির যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, সেটিও সঠিক সিদ্ধান্ত নয় বলছেন হরভজন।

চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটারদের জন্য বিসিসিআইয়ের ১০ দফা নির্দেশনার বিষয়ে হরভজন পিটিআইকে বলেন, ‘আমি যখন মিডিয়ার মাধ্যমে ভ্রমণ নীতি সম্পর্কে পড়লাম, নতুন কিছুই দেখলাম না। আমি যখন শেষবার চুক্তিবদ্ধ খেলোয়াড় ছিলাম, তার সঙ্গে পার্থক্য নেই। ১০ পয়েন্টের অন্তত ৯টাই পুরোনো। এর মধ্যে পরিবারের ভ্রমণ, একই হোটেলে থাকা, অনুশীলনের বাধ্যবাধকতা সবই আগের মতো।’

ভারতের হয়ে ১৯৯৮ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত তিন সংস্করণে ৩৬৭ ম্যাচে খেলেছেন হরভজন। দীর্ঘ সময়ের অভিজ্ঞতার প্রেক্ষিতে এই অফ স্পিনার বলেছেন, ‘আমি যখন খেলেছি, তখনো এ সব নিয়ম কার্যকর ছিল। প্রশ্ন হচ্ছে, তাহলে এই নিয়মগুলো পাল্টাল কে, কখন পাল্টাল? এটা অনুসন্ধান করা দরকার।’

আরও পড়ুন

বিসিসিআই নিয়ম করেছে, এখন থেকে ৪৫ দিনের বেশি সময়ের সফরে খেলোয়াড়েরা সর্বোচ্চ ১৪ দিন স্ত্রী-সঙ্গীদের সঙ্গে রাখতে পারবেন। এটি নতুন কিছু নয়, ভারত এ কারণে অস্ট্রেলিয়ায় ৩-১ ব্যবধানে সিরিজ হারেওনি বলে মনে করেন হরভজন, ‘এ সব কথা মূল প্রসঙ্গ থেকে মনোযোগ সরানোর জন্য। স্ত্রী, সঙ্গীরা দুই মাস সঙ্গে ছিল বলে আমরা হেরেছি, ব্যাপার এটা নয়। কেউ কেউ আলাদাভাবে যাতায়াত করেছে বলেও হারিনি। হেরেছি আমরা খারাপ ক্রিকেট খেলেছি বলে। আমরা তো দেশেও (নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩-০ ব্যবধানে হারের সিরিজে) ভালো ব্যাটিং করতে পারিনি। ব্যাটসম্যানদের ফর্মের অবস্থা চরম বাজে। এ সব বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? নাকি শুধু মাঠের বাইরের বিষয় নিয়েই বেশি আলোচনা হয়েছে।’

বোর্ডার–গাভাস্কার ট্রফিতে রান করতে পারেননি বিরাট কোহলি, লোকেশ রাহুলরা
এএফপি

বিসিসিআইয়ের ১০ নির্দেশনার একটি হচ্ছে ম্যাচ বা সিরিজ আগেভাবে শেষ হয়ে গেলে খেলোয়াড়েরা টিম হোটেল ছাড়তে পারবেন না। এটিও আগে থেকেই চর্চিত হয়ে এসেছে বলে জানান হরভজন, ‘আমাদের সময়ে কোনো ম্যাচ তিন দিনের মধ্যে শেষ হয়ে গেলে বা পরের ম্যাচের আগে এক সপ্তাহ বিরতি থাকলেও  শচীন টেন্ডুলকার, সৌরভ গাঙ্গুলী বা অনিল কুম্বলেকে মুম্বাই, কলকাতা বা বেঙ্গালুরুতে চলে যেতে দেখিনি। সবাই দলের সঙ্গে থাকত, পরের গন্তব্যে যেত।’

আরও পড়ুন

হরভজনের মতে বিসিসিআইয়ের নির্দেশনাগুলোর মধ্যে ব্যাগেজে ১৫০ কেজি বহনের পয়েন্টটিই নতুন, তাদের সময়ে আরও কম নেওয়া যেত।

ভারতের সাবেক স্পিনার হরভজন সিং
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

বিসিসিআই জানিয়েছে, বিশেষ পরিস্থিতিতে নির্দেশনা পালনে অপারগ হলে পূর্ব অনুমতি নিতে হবে। সেই অনুমতিদাতাদের মধ্যে অন্যতম প্রধান কোচ গৌতম গম্ভীর। তবে এটির সমালোচনা করেছেন হরভজন, ‘আমাদের সময়ে যে কোনো বিষয়ে পূর্ব অনুমতির জন্য বিসিসিআইকে লিখতে হতো। সুতরাং অনুমোদনের দরকার হলে বিসিসিআইকে মেইল করলেই তো হয়। কেন প্রধান কোচকে এ সবের মধ্যে ঢুকতে হবে। তার কাজ হচ্ছে মাঠে কাজ করা, টেকনিক্যাল দিক দেখা। প্রশাসনিক ব্যাপার বিসিসিআইয়ের ওপর ছেড়ে দেওয়া উচিত।’

আরও পড়ুন