এবার অস্ট্রেলিয়াকেও হারাতে চায় নেদারল্যান্ডস

অনুশীলনে দুই অধিনায়ক অস্ট্রেলিয়ার কামিন্স (বাঁয়ে) ও নেদারল্যান্ডসের স্কট এডওয়ার্ডসছবি : এএফপি

সংবাদ সম্মেলনের শুরু থেকেই মিচেল মার্শকে বেশ ফুরফুরে মনে হলো। সাংবাদিকদের করা কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে বেশ রসিকতাও করলেন। প্রথম দুই ম্যাচ হারের পর অস্ট্রেলিয়া যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ চারে ঢুকে পড়েছে, মার্শও শুরুর দুই ম্যাচের ব্যর্থতা ঝেড়েছেন ৫২ আর ১২১ রানের দুটি ইনিংস উপহার দিয়ে।

অস্ট্রেলিয়ার দীর্ঘদেহী অলরাউন্ডারের হাসিখুশি থাকার আরেকটি কারণ হতে পারে ‘দ্বিতীয় ঘরে’ ফিরতে পারা। আইপিএলে তিনি খেলেন দিল্লি ক্যাপিটালসে। বিশ্বকাপে আজ নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচটা তো দিল্লিতেই।

‘মোড়লদের’ ছোট দলগুলোর বিপক্ষে খেলতে না চাওয়ার যে অনীহা, সেটা ফুটে উঠেছে অস্ট্রেলিয়া-নেদারল্যান্ডসের বেলায়ও। দুই দল সব সংস্করণ মিলিয়ে মুখোমুখিই হয়েছে মোটে দুবার। সেটাও দুই বিশ্বকাপে—২০০৩ ও ২০০৭ সালে।

রিকি পন্টিংয়ের মহাপরাক্রমশালী অস্ট্রেলিয়ার কাছে পাত্তাই পায়নি নেদারল্যান্ডস
ছবি : এএফপি

দুই ম্যাচের ফল যে একদমই একপেশে ছিল, অনুমান করার জন্য সাল দুটির দিকে আরেকবার তাকালেই চলছে। রিকি পন্টিংয়ের মহাপরাক্রমশালী ওই অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে শুধু নেদারল্যান্ডস কেন, কেউই তো কুলিয়ে উঠতে পারেনি। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচের হিসাব বাদ দিলে এবারের বিশ্বকাপে প্রস্তুতি ম্যাচেও মুখোমুখি হয়েছিল দুই দল। বৃষ্টিতে ম্যাচটা পণ্ড হওয়ার আগে হ্যাটট্রিকে গা গরম করেছিলেন মিচেল স্টার্ক।

আরও পড়ুন

অস্ট্রেলিয়ার একচেটিয়া আধিপত্য এখন আর না থাকলেও অন্তত নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে না পারার বড় কোনো কারণ নেই। বিশ্বকাপের সঙ্গে আঠার মতো লেগে আছেন, এমন কারোরও এ ম্যাচ নিয়ে খুব একটা আগ্রহ থাকার কথা ছিল না। কিন্তু এ ম্যাচে চোখ রাখতে হচ্ছে উড়তে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকাকে চমকে দিয়ে ডাচরা অঘটনের জন্ম দেওয়াতেই। প্রোটিয়াদের হারানোর আত্মবিশ্বাস নিয়ে এরপর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও লড়াই করেছে ডাচরা।

দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে অঘটনের জন্ম দিয়েছে নেদারল্যান্ডস
ছবি : এএফপি

সেমিফাইনালের কক্ষপথে ভালোভাবে ফিরলেও নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে পা হড়কানোর ‘ভয়’ হয়তো কাজ করছে অস্ট্রেলিয়ানদের মনে। চাপটা তাই অস্ট্রেলিয়ার ওপরই বেশি থাকবে বলে মানছেন মার্শ, ‘বিশ্বকাপে সহজ ম্যাচ বলে কিছু নেই। সব ম্যাচেই চাপ ও ঝুঁকি আছে। (ছোট) দলগুলো বেশ ভালো করছে। সব ম্যাচেই আমাদের সেরা প্রস্তুতি নিয়ে আসতে হচ্ছে। আগামীকালও (আজও) এর ব্যতিক্রম হবে না। আমরা নেদারল্যান্ডসকে সমীহ করছি। ওরা আমাদেরও কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে পারে। তবে আমি জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।’

আরও পড়ুন

চোট থেকে পুরোপুরি সেরে ওঠায় এ ম্যাচ দিয়েই বিশ্বকাপে প্রথম দেখা যেতে পারে ট্রাভিস হেডকে। সে ক্ষেত্রে ডেভিড ওয়ার্নারের উদ্বোধনী সঙ্গীর জায়গাটা হেডকে ছেড়ে দিতে হবে মার্শের। তবে ব্যাটিং অর্ডারের তিনে নেমে যেতে আপত্তি নেই বলে জানিয়েছেন মার্শ।

চোট থেকে সেরে ওঠা ট্রাভিস হেডকে আজ অস্ট্রেলিয়ার একাদশে দেখা যেতে পারে
ছবি : আইসিসি

নেদারল্যান্ডসের অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্সের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার যোগসূত্র অনেকেরই জানা। জন্ম অস্ট্রেলিয়ার প্রতিবেশী দেশ টোঙ্গাতে হলেও বেড়ে উঠেছেন মেলবোর্নে। খেলেছেন রাজ্য দল ভিক্টোরিয়ার দ্বিতীয় একাদশের হয়ে। টোঙ্গা, নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্বও আছে তাঁর।

আরও পড়ুন

এই যোগসূত্রের কারণেই বোধ হয় কাল সংবাদ সম্মেলনে নিজে না এসে সতীর্থ লোগান ফন বিককে পাঠালেন এডওয়ার্ডস। পেস বোলিং অলরাউন্ডার ফন বিক আরেকটি অঘটনের প্রত্যাশাই করছেন, ‘(আরেকটি অঘটন) কেন নয়? আমরা তো সেমিফাইনালে খেলতেই এসেছি। এটাই আমাদের লক্ষ্য। আমরা পরবর্তী প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করতে চাই। নেদারল্যান্ডস ক্রিকেটের গল্পটা বদলাতে চাই।’

দিল্লিতে আজ গল্পটা বদলাবে কি না, সেটা জানতে এমন অসম লড়াইয়েও চোখ রাখতে পারেন ক্রিকেটপ্রেমীরা।