মিয়াঁদাদের সেই রেকর্ড, ৩৮ বছর পরও যা ছুঁতে পারেননি কেউ

জাভেদ মিয়াঁদাদএএফপি

শুরু নাগপুরে, শেষ হায়দরাবাদে। মাঝে জামশেদপুর, শারজা, লন্ডন, নটিংহাম, বার্মিংহাম। মাঠ বদলেছে, বদলেছে প্রতিপক্ষ ও টুর্নামেন্ট। কিন্তু টানা ৯টা ম্যাচে যা বদলায়নি, তা হলো জাভেদ মিয়াঁদাদের ব্যাটে রান। ৭৮, ৭৮*, ৭৪, ৬০, ৫২*, ১১৩, ৭১*, ৬৮, ১০৩! ১৯৮৭ সালের ২৪ মার্চ থেকে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত টানা ৯ ওয়ানডেতে ৫০ ছাড়ানো ইনিংস খেলা মিয়াঁদাদের সেই কীর্তি আজ পর্যন্ত ছুঁতে পারেননি আর কেউ।

আরও পড়ুন

নাগপুরে ভারতের বিপক্ষে ৬ ম্যাচ সিরিজের পঞ্চম ম্যাচে শুরু হয়েছিল ব্যাট হাতে মিঁয়াদাদের সেই অবিশ্বাস্য যাত্রা। সিরিজের শেষ ম্যাচটা ছিল জামশেদপুরে। এরপর শারজাতে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও ভারতের বিপক্ষেও টানা তিন ফিফটি। ফর্মটা টেনে নিয়ে গেলেন ইংল্যান্ড সফরেও—তিন ম্যাচ সিরিজে এক সেঞ্চুরির সঙ্গে দুই ফিফটি। দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি পেলেন হায়দরাবাদে ১৯৮৭ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের প্রথম ম্যাচেও, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। মিয়াঁদাদের সেই দারুণ পথচলা থেমে ছিল ওই বিশ্বকাপেই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাকিস্তানের পরের ম্যাচে, ফিলিপ ডিফ্রেটাসের বলে এলবিডব্লু হয়ে।

টানা ৯ ওয়ানডেতে ৫০ ছাড়ানো ইনিংস খেলেছিলেন মিয়াঁদাদ
পাকিস্তান ক্রিকেট

এরপর ৩৮ বছর পেরিয়ে গেছে, ওয়ানডে ক্রিকেট কত কিংবদন্তির আসা-যাওয়া দেখেছে, কিন্তু মিয়াঁদাদের সেই ধারাবাহিকতার পুনরাবৃত্তি করতে পারেননি আর কেউ। তবে একজন গিয়েছিলেন তাঁর খুব কাছাকাছি। তিনিও পাকিস্তানি—ইমাম-উল-হক!

আরও পড়ুন

শুধু যে বিখ্যাত চাচার কারণেই পাকিস্তান দলে খেলছেন না, সেটা ইমাম প্রমাণ করেছিলেন অভিষেক ওয়ানডেতেই সেঞ্চুরি করে। তবে ২০২১ সালের ১৩ জুলাই থেকে ২০২২ সালের ১২ জুন পর্যন্ত টানা ৭ ওয়ানডেতে ইমাম যা করেছেন, সেটা বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছিল মিয়াঁদাদকে। বার্মিংহামে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হাফ সেঞ্চুরিতে (৫৬) শুরু হয়েছিল ইমামের দুর্দান্ত এক পথচলা। এরপর লাহোরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজে দুটি সেঞ্চুরি ও একটা ‘প্রায়’ সেঞ্চুরি (১০৩, ১০৬, ৮৯*)। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এর পরের সিরিজে টানা তিন ওয়ানডেতে আরও তিন ফিফটি (৬৫, ৭২, ৬২)।

পাকিস্তান ওপেনার ইমাম-উল-হক
এএফপি

টানা ৭টি ৫০ ছাড়ানো ইনিংসের পর মনে হচ্ছিল, মিয়াঁদাদকে পেরিয়ে যেতে না পারলেও তাঁর পাশে অবশ্যই বসতে যাচ্ছেন ইমাম। কারণ, পাকিস্তানের পরের দুটি ওয়ানডে ছিল নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে। কিন্তু কী কপাল, এমন অবিশ্বাস্য ফর্মে থাকা ইমাম নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচেই আউট হয়ে গেলেন মাত্র ২ রানে!

আরও পড়ুন

কাকতালীয়ভাবে, একই সময়ে মিয়াঁদাদকে ছোঁয়ার দিকে এগোচ্ছিলেন বাবর আজমও। যে ৭টা ম্যাচে ইমাম ৫০ ছাড়ানো ইনিংস খেলেছেন, তার মধ্যে প্রথম ছয়টিতে চারটি সেঞ্চুরি আর দুটি হাফ সেঞ্চুরি বাবরেরও। মন্দ কপাল তাঁর, ২০২২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেটায় মাত্র ১ রানে আউট হয়ে গিয়ে ইমামের চেয়ে পিছিয়ে পড়েন।

বাবর আজম
এএফপি

তবে শুধু বাবর নন, ওয়ানডেতে টানা ছয় ম্যাচে ৫০ বা এর বেশি রানের ইনিংস খেলার রেকর্ড আছে আরও চারজনের—ক্রিস গেইল, রস টেলর, কেইন উইলিয়ামসন ও গর্ডন গ্রিনিজ।
কিন্তু মিয়াঁদাদ আর হতে পারেননি কেউই।

‌‌মিয়াঁদাদের সেই ৯ ইনিংস

আরও পড়ুন