প্রথম পরীক্ষাটা যেমন দিলেন নুরুল

টি–টোয়েন্টির অধিনায়কত্ব পাওয়ার পর প্রথম সংবাদ সম্মেলনে নুরুল হাসানছবি: প্রথম আলো

সকাল থেকেই মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের সংবাদ সম্মেলন কক্ষে ভিড়। নতুন টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক নুরুল হাসানের সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিতে সাংবাদিকেরা জড়ো হয়েছেন ঢাকার ঝিরিঝিরি বৃষ্টি মাথায় নিয়ে। বিসিবির মিডিয়া বিভাগের প্রধান তানভীর আহমেদও কক্ষের এক কোণে একটি চেয়ার টেনে বসলেন।

নতুন অধিনায়ক প্রথম আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে কেমন পারফর্ম করেন, সেটিই দেখছিলেন তিনি। এটা যেন নুরুলের অধিনায়কত্বের প্রথম পরীক্ষা! সেই পরীক্ষায় ২৮ বছর বয়সী নুরুল কেমন করেন, সেটাতেই যেন বিসিবির পরিচালক তানভীর আহমেদের যত আগ্রহ।

প্রায় ২০ মিনিট দীর্ঘ সংবাদ সম্মেলনে নুরুলকে বেশ কিছু বাউন্সার ছোড়া হলো, কিছু ইয়র্কারও। সবটাই নুরুল সামলেছেন স্বাচ্ছন্দ্যে। যেন কঠিন রান তাড়ার ম্যাচ এক ওভার বাকি থাকতেই জেতালেন এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান! সে জন্যই হয়তো নুরুলের সংবাদ সম্মেলনের মাঝে এক সাংবাদিক বলছিলেন, ‘তাঁকে তো বেশ আত্মবিশ্বাসী মনে হচ্ছে! এমন থাকলে ভালোই করবে আশা করি।’

আরও পড়ুন
জিম্বাবুয়ে সফরে বাংলাদেশের টি–টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক নুরুল হাসান
ছবি: প্রথম আলো

নুরুল অবশ্য অতীত কিংবা ভবিষ্যৎ—এই দুই কাল নিয়ে খুব একটা ভাবছেন না। আপাতত নুরুলের ভাবনায় শুধুই জিম্বাবুয়ে সফরের তিনটি টি-টোয়েন্টি। তিনি বলছিলেন, ‘অধিনায়কত্ব অবশ্যই গর্বের ব্যাপার। সামনে যে চ্যালেঞ্জটা আছে, সেটা নিয়ে ভাবছি।’

ঘরোয়া ক্রিকেটে অধিনায়কত্ব করছেন অনেক দিন হলো। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট, লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেট ও টি-টোয়েন্ট—সব সংস্করণেই তিনি নিজের ব্যক্তিত্বের ছাপ রেখেছেন। সেটা কী? নুরুলকে বলা হয় ‘টিম ম্যান’। নিজ দলের কাছেও তাঁর চাওয়া দলীয় ঐক্য বজায় রাখা। ঘরোয়া ক্রিকেটের সেই ধারাটা বজায় রাখতে চান তিনি, ‘ঘরোয়া ক্রিকেটে যখনই অধিনায়কত্ব করেছি, সব জায়গায় দল হিসেবে খেলার চেষ্টা করেছি। এই সংস্কৃতিটাই ধরে রাখতে চাই।’

আরও পড়ুন
প্রত্যাশা, রোমাঞ্চ—এসব আবেগ থেকে নিজেকে আজকাল দূরেই সরিয়ে রেখে ভালোই আছেন নুরুল
ছবি: প্রথম আলো

নুরুলের অধিনায়কত্ব অধ্যায়ের শুরু হবে ৩০ জুলাই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ দিয়ে। প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে বলেই একটা প্রত্যাশার চাপ থাকবে। তারুণ্যনির্ভর দলে নিজেদের প্রমাণ করারও একটা বিষয় আছে। নুরুল অবশ্য এসব বিষয় নিয়ে খুব একটা ভাবছেন না। প্রত্যাশা, রোমাঞ্চ—এসব আবেগ থেকে নিজেকে আজকাল দূরেই সরিয়ে রেখে ভালোই আছেন তিনি।

তাই এসব আবেগে গা ভাসাতে চান না এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান, ‘আমার জীবনে এই প্রত্যাশা আর আবেগ খুব কম। ফল বা অতীত নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করি না। অনেক দিন ধরেই আমি এটা করতে পারছি। আমার মনে হয়, এসব খুব একটা সমস্যা করবে না।’

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন নুরুল হাসান
ছবি: প্রথম আলো

তবে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সাবেক অধিনায়কদের থেকে পাওয়া শিক্ষাটা ঠিকই কাজে লাগাতে চান নুরুল। মাহমুদউল্লাহর অধিনায়কত্ব থেকে শিক্ষা নেওয়ার প্রশ্নে তিনি বলছিলেন, ‘আমি রিয়াদ ভাইয়ের অধীনে খেলে অনেক কিছু শিখেছি। সবার কাছ থেকেই শিখেছি। কিন্তু সবাই আলাদা ব্যক্তিত্ব। আমি আশা করি, সবার কাছ থেকে নেওয়া অভিজ্ঞতার সমন্বয় নিয়ে কাজ করতে চাই। বাংলাদেশ ক্রিকেটে আমাদের সিনিয়রদের অবদান এক-দুই কথায় বলে শেষ করা যাবে না। তাঁরা বাংলাদেশ ক্রিকেটকে একটা জায়গায় নিয়ে এসেছেন। এখন আমাদের জন্য সুযোগ সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।’

বাংলাদেশ দল নুরুলের অধীনে কী ধরনের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট খেলবে সেই প্রসঙ্গেও প্রশ্ন করা হয়েছিল। এ ব্যাপারে তিনি বলেছেন, ‘ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলাটা গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্যই চেষ্টা করব, যেন এটা করতে পারি। আগে থেকে ভেবে নিলে প্রক্রিয়া ঠিক থাকে না। আশা করি প্রক্রিয়াটা ধরে রাখতে পারব।’

আরও পড়ুন