৯৪ রান করে ৯৪ রানেই হার হংকংয়ের, শুভসূচনা আফগানিস্তানের

এশিয়া কাপের উদ্বোধনী ম্যাচে আফগানিস্তানের কাছে পাত্তা পায়নি হংকং। আফগানরা করেছিল ১৮৮, হংকং করতে পেরেছে এর অর্ধেক ৯৪ রান।

এশিয়া কাপের উদ্বোধনী ম্যাচে আফগানিস্তানের কাছে পাত্তা পায়নি হংকংছবি: এসিসি

উদ্বোধনী ম্যাচ আবুধাবিতে। অথচ মঙ্গলবার স্থানীয় সময় দুপুর পর্যন্তও রশিদ খান ও ইয়াসিম মুর্তজা ছিলেন ১৩০ কিলোমিটার দূরের শহর দুবাইয়ে। কারণ, এশিয়া কাপের ট্রফি উন্মোচন ও অধিনায়কদের সংবাদ সম্মেলন। দুবাইয়ে যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা সেরেই রশিদ–ইয়াসিমকে ফিরতে হয়েছে আবুধাবিতে। এরপর শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে গিয়ে দুজন টস করেছেন।

টস জিতে হংকং অধিনায়ক ইয়াসিমকে বোলিংয়ে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন আফগানিস্তান অধিনায়ক রশিদ। আয়ুশ শুক্লার করা টুর্নামেন্টের প্রথম বলেই চার মেরে এশিয়া কাপে নিজের আগমনী বার্তা দিয়েছেন সেদিকউল্লাহ আতাল। সেই আতালই শেষ পর্যন্ত দলকে টেনেছেন। তাঁর অপরাজিত ৭৩ রান ও আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের বিধ্বংসী ফিফটিতে ৬ উইকেটে ১৮৮ রান তুলেছিল আফগানিস্তান।

জবাবে নাইব–ওমরজাই–ফারুকি–গজনফরদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে হংকং ৯ উইকেট হারিয়ে করতে পেরেছে এর অর্ধেক। মানে, ৯৪ রান করে ৯৪ রানেই হেরেছে হংকং। এশিয়া কাপে এ নিয়ে হংকংয়ের বিপক্ষে দুবারই জিতল আফগানিস্তান। আবুধাবিতে আজকের আগে মিরপুরে ২০১৬ সালে হংকংকে ৬৬ রানে হারিয়েছিল আফগানরা।

শুরুতে দারুণ কিছুর আভাস দিয়েছিল হংকং
ছবি: এসিসি

পাওয়ারপ্লেতে রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরানকে ফিরিয়ে দারুণ কিছুর আভাস দিয়েছিল হংকং। তবে এরপর অভিজ্ঞ মোহাম্মদ নবীর সঙ্গে ৫১ রানের জুটি গড়ে পরিস্থিতি সামাল দেন আতাল। নবীকে ফিরিয়ে কিঞ্চিৎ শাহ এই জুটি ভাঙার পর গুলবদিন নাইবকেও দ্রুত আউট করেন। কিন্তু আজমতউল্লাহ ওমরজাই নেমেই হংকং বোলারদের ওপর চড়াও হলে ম্যাচ আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।

আরও পড়ুন

ইনিংসের ১৯তম ওভারের টানা তিন ছক্কার পর চার মেরে ২০ বলে ফিফটি পূরণ করেন ওমরজাই, যা এখন আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে কোনো আফগান ব্যাটসম্যানের দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরি। ওমরজাই ভেঙেছেন নবীর রেকর্ড (২০১৭ সালে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ২১ বলে ফিফটি)।

টি–টোয়েন্টিতে আফগানিস্তানের হয়ে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড এখন আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের
ছবি: এসিসি

টি–টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটি পাওয়া আতাল শেষ পর্যন্ত ৫২ বলে ৭৩ রানে অপরাজিত থাকেন। হজরতউলাহ জাজাই ও মোহাম্মদ শাহজাদের পর তৃতীয় আফগান ওপেনার হিসেবে পুরো ২০ ওভার খেলেছেন তিনি।

তবে বাঁহাতি এই ওপেনারকে এমন ইনিংস খেলতে দেওয়ার পেছনে হংকংয়ের ফিল্ডারদেরও ভূমিকা আছে। পূর্ব এশিয়ার দলটি ক্যাচ ছেড়েছে পাঁচটি, এর মধ্যে আতালই তিন-তিনবার ‘জীবন’ পেয়েছেন। এই ম্যাচে হংকংয়ের সবচেয়ে সফল বোলার কিঞ্চিৎ শাহর বোলিং কোটা কেন পূরণ করা হলো না, তা এক রহস্যই হয়ে থাকবে।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পাওয়ারপ্লেতে ২২ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে হংকং। এরপর দেখার বিষয় ছিল একটাই—তারা ১০০ রান করতে পারে কি না। হংকং ইতিহাসের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক বাবর হায়াত তখনো টিকে থাকায় মনে হচ্ছিল হয়তো পারবে।

আরও পড়ুন

কিন্তু ১৩তম ওভারে হায়াত আউট হলে দলটির রান তোলার গতি আরও শ্লথ হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত তারা ২০ ওভার খেললেও করতে পারে ৯৪ রান।

আফগান ওপেনার সেদিকউল্লাহ আতাল পুরো ২০ ওভার খেলেছেন
ছবি: এসিসি

হংকংয়ের শুধু দুজন ব্যাটসম্যান দুই অঙ্ক ছুঁতে পেরেছেন—তিনে নামা হায়াত (৩৯) ও অধিনায়ক ইয়াসিম (১৬)। বাকি নয়জনের রান মুঠোফোন নম্বরের মতো—৫, ০, ০, ৪, ৬, ৬, ৬, ১*, ১*।

আফগানিস্তানের নাইব ও ফজলহক ফারুকি ২টি করে উইকেট নিয়েছেন। ১টি করে শিকার রশিদ, ওমরজাই ও নুর আহমেদের। হংকংয়ের দুজন ব্যাটসম্যান রানআউট হয়েছেন। অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ম্যাচসেরা হয়েছেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই।

আফগানিস্তানের পরের ম্যাচ আগামী মঙ্গলবার বাংলাদেশের বিপক্ষে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

আফগানিস্তান: ২০ ওভারে ১৮৮/৬ (আতাল ৭৩, ওমরজাই ৫৩, নবী ৩৩; কিঞ্চিৎ ২/২৪, শুক্লা ২/৫৪, আতিক ১/৩২)।

হংকং: ২০ ওভারে ৯৪/৯ (হায়াত ৩৯, ইয়াসিম ১৬; নাইব ২/৮, ফারুকি ২/১৬, ওমরজাই ১/৪, নুর ১/১৬, রশিদ ১/২৪)।

ফল: আফগানিস্তান ৯৪ রানে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: আজমতউল্লাহ ওমরজাই।