বাংলাদেশের মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের কী হয়েছে

বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৩ রান করেন তানজিম। গতকাল চট্টগ্রামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টি–টোয়েন্টিতেপ্রথম আলো

শিরোনামের প্রশ্নটা করা হয়েছিল গতকাল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টি–টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের হারের পর সংবাদ সম্মেলনে আসা তানজিম হাসানকে। ‘উত্তরটা আমার কাছে নেই’—জানিয়ে মুচকি হাসি দিয়েছেন এই পেসার।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসে শেষ ওভারে ৩ ছক্কাসহ ২২ রান দেন তানজিম। কিন্তু ব্যাটিংয়ে দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৩ রান করেন। এমনিতে তাঁর ব্যাটিং–সামর্থ্য আছে। যদিও এখন পর্যন্ত খুব ভরসা করার মতো কিছু করে ফেলতে পারেননি। গতকাল নিজের ব্যাটিং–সামর্থ্য সুযোগটা পেয়েছিলেন মূলত টপ ও মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায়। এটাও বাংলাদেশ দলের জন্য নতুন কিছু নয়।

এ বছর টি–টোয়েন্টিতে নিজেদের সেরা সময় পার করছে বাংলাদেশ। এক পঞ্জিকাবর্ষে ম্যাচ জেতার সংখ্যায় তারা ছাড়িয়ে গেছে আগের সব বছরকে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হওয়ার আগে টানা চারটি টি–টোয়েন্টি সিরিজও জিতেছে তাঁরা। অথচ এ বছর খেলা ২৫ টি–টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের গড় ১১৯.৮৩ স্ট্রাইক রেটে। টেস্ট খেলুড়ে সব দেশের তুলনায়ই তা কম।

মিডল অর্ডারে প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছেন না তাওহিদ হৃদয়
প্রথম আলো

এ বছর মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের কাছ থেকে মাত্র দুটি ফিফটি পেরোনো ইনিংস পেয়েছে বাংলাদেশ। ২৩ ম্যাচ খেলে জাকের আলী একটি ও ১৯ ম্যাচ খেলা তাওহিদ হৃদয় পেয়েছেন আরেকটি ফিফটি। টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোর মধ্যে এ বছর মিডল অর্ডারদের কাছ থেকে ফিফটি পাওয়ার তালিকায় বাংলাদেশের নিচে শুধু শ্রীলঙ্কা। কিন্তু তারা এই সংস্করণে ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশের অর্ধেকের কম।

দলের মিডল অর্ডারে কেন এই হাল, পেস বোলার তানজিমের স্বাভাবিকভাবেই এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারার কথা নয়, ‘এটা আসলে ব্যাটসম্যানরা ভালো ব্যাখ্যা করতে পারবে। সত্যি বলতে এই উত্তরটা আসলে আমার কাছে নেই।’

আরও পড়ুন

তবে গতকাল যে মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানরা দায়িত্ব নেননি, এ নিয়ে তেমন সংশয় নেই তানজিমের। বিশেষত যখন পাওয়ারপ্লে শেষ হয়ে যাওয়ার পর ফিল্ডাররা ছড়িয়ে পড়েছিলেন, তখন চাইলেই এক–দুই রান করে নিয়ে দলকে তারা এগিয়ে নিতে পারতেন বলে মনে করেন তানজিম। তাঁর ভাষায়, ‘মিডল অর্ডার নিয়ে আমি অবশ্যই চিন্তিত। তাঁদের খেলাটাকে আরও গভীরে নেওয়ার সুযোগ ছিল। ফিল্ডাররা ছড়িয়ে পড়ার পর এক–দুই রান করে নিয়ে তারা তা করতে পারত। আমি মনে করি আরেকটু দায়িত্ব নিতে হবে।’

অধিনায়ক লিটন নিজেও রান পাননি গতকাল প্রথম টি–টোয়েন্টিতে
প্রথম আলো

মিডল অর্ডার নিয়ে অসন্তোষ স্পষ্ট ছিল অধিনায়ক লিটন দাসের কণ্ঠেও। পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে দাঁড়িয়ে তিনি সরাসরি শামীম হোসেনের নাম ধরেই সমালোচনাই করেছেন। শেষ ১৩ ম্যাচে ৬ বার দুই অঙ্কের ঘরেও পৌঁছাতে পারেননি শামীম, এর মধ্যে তিনবার শূন্য আর দুবার আউট হয়েছেন ১ রানে।

গতকালও জেসন হোল্ডারের বলে জোর করে পুল করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে গেছেন ৪ বলে ১ রান করে। অধিনায়কের ক্ষোভটা স্পষ্ট এ কারণে। কিন্তু একা আর শামীম কোথায়, বাংলাদেশের এখন দুশ্চিন্তা পুরো মিডল অর্ডার নিয়েই। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে পরের দুই ম্যাচে কি তা কাটিয়ে উঠতে পারবেন তাওহিদ হৃদয়–শামীমরা?

চট্টগ্রামে আগামীকাল সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ। তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ ৩১ অক্টোবর।

আরও পড়ুন