বাংলাদেশের আপাতত চাওয়া—আগামীকাল সারা দিন ব্যাটিং করা

দ্বিতীয় দিন শেষে শ্রীলঙ্কার চেয়ে ৪৭৬ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশপ্রথম আলো

শুরুটা মন্দ হয়নি। শ্রীলঙ্কার ৫৩১ রানের বিশাল লক্ষ্যের জবাবে বাংলাদেশ দল দ্বিতীয় দিনের শেষ বেলায় ব্যাটিংয়ে নেমে উদ্বোধনী জুটি থেকে পেয়ে যায় ৪৭ রানের জুটি। এমন বড় কিছু নয়, কিন্তু মাহমুদুল হাসান ও জাকির হাসানের সিলেট টেস্টে যে পারফরম্যান্স, তাতে এটাকেও খুব খারাপ মনে হচ্ছে না। তবে ম্যাচের প্রেক্ষাপট বলছে, ৪০-৫০ রানের জুটি দিয়ে বাংলাদেশ চট্টগ্রাম টেস্ট বাঁচাতে পারবে না।

এই টেস্টে লড়াই করতে হলে বাংলাদেশকে বড় রান করতে হবে, অন্তত শ্রীলঙ্কার প্রথম ইনিংসের স্কোরের কাছাকাছি যেতে হবে। আপাতত বাংলাদেশ এত দূরের চিন্তা করতে চাচ্ছে না। নাজমুলদের প্রাথমিক লক্ষ্য একটাই—আগামীকাল সারা দিন ব্যাটিং করা।

দলের ভাবনাটা জানা গেল ব্যাটিং কোচ ডেভিড হেম্পের কথায়। দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে তিনি বলেন, ‘আমরা এখনো জেতার কথা চিন্তা করেই খেলছি। শুনতে হয়তো অদ্ভুত লাগছে। কারণ, আমরা ৪৮০ রানে (আসলে ৪৭৬) পিছিয়ে আছি। তবে আপাতত আমাদের আগামীকালের দিনটা পার করতে হবে। যদি তা করতে পারি, আমরা পরের দিনটাও সামলে নেব। যদি তা করতে পারি, তাহলে যেকোনো কিছুই হতে পারে। প্রথমত, আমাদের আগামীকালের তিন সেশন জিততে হবে।’

দিনের শেষ ভাগে আউট হওয়ার আগে ভালোই খেলছিলেন মাহমুদুল হাসান
শামসুল হক

জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের উইকেট এখনো যথেষ্টই ব্যাটিং–সহায়ক। এমন কন্ডিশনে সেই অর্থে ব্যাটসম্যানদের চ্যালেঞ্জ একটাই—নতুন বল। মাত্র ১৫ ওভার পুরোনো হয়েছে বল, এখনো এটিকে তাই নতুনই বলা যায়। এটাকেই আগামীকাল সকালে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের বড় চ্যালেঞ্জ মনে করছেন হেম্প, ‘নতুন বল সব সময় হুমকির। ছেলেরা এ নিয়ে যথেষ্ট অনুশীলন করছে। কী ভালো সিদ্ধান্ত নিচ্ছি? রান করার সুযোগগুলো নিতে পারছি? পা সামনে বা পেছনে যাচ্ছে তো? উইকেট অনুযায়ী ব্যাটিং করতে পারছি? খেলাটা সব সময়ই বদলাচ্ছে। আমাদের নিজেদের পারফরম্যান্সে সততার সঙ্গে দৃষ্টি দিতে হবে এবং খেলাটাকে সামনে এগিয়ে নিতে হবে।’

আরও পড়ুন

জাকির-নাজমুলরা তা করতে পারবেন বলে আস্থা আছে হেম্পের, ‘ওরা ভালো খেলোয়াড়। এখন তাদের ভালো সিদ্ধান্ত নিতে হবে, কোন বলটা মারতে হবে, কোনটা থামাতে হবে, তা দেখতে হবে। ভালো দলের ব্যাটসম্যানরা ব্যাটিংয়ের সময় ভালো সিদ্ধান্ত নেয় এবং সেটা লম্বা সময় ধরে নেয়। আপনাকে বোলারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে।’ হেম্প উদাহরণ হিসেবে আজ বিকেলের প্রায় দেড় ঘণ্টায় বাংলাদেশ দলের দুই ওপেনারের ৪৭ রানের জুটির উদাহরণ টেনেছেন। সিলেট টেস্টের দুই ইনিংসের তুলনায় দুজনই যে ভালো ব্যাটিং করেছেন, মনে করিয়ে দিয়েছেন সেটাও।

দ্বিতীয় দিনেও ক্যাচ মিসের কারণে ভুগেছে বাংলাদেশ
প্রথম আলো

চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশ দলের ওপর বড় রান করার এমন চাপ না–ও আসতে পারত। বাজে ফিল্ডিংয়ের আরও একটি দিনই এই চাপে ফেলেছে বাংলাদেশকে। হেম্পেরও তা না মেনে উপায় নেই, ‘আমরা এটা অস্বীকার করতে পারব না। এটা (ক্যাচ হাতছাড়া) তো হয়েছেই। এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি। কেউই তো ক্যাচ ছাড়তে চায় না। বোলাররা কঠোর পরিশ্রম করে সুযোগ সৃষ্টি করছে। আপনাকে সে সুযোগগুলো নিতে হবে।’

স্লিপ ফিল্ডিংয়ের কথা আলাদা করে বললেন হেম্প, ‘স্লিপ ফিল্ডারের কাজটা সহজ নয়। আপনাকে বল আসার আগেই অনুমান করতে হবে, কী হতে পারে। প্রত্যেকটা বলই আপনার কাছে আসবে, এমন একটা চাওয়া নিজের মধ্যে থাকতে হবে। সে জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। এই মানসিকতা না থাকলে ক্যাচিং কঠিন মনে হবে।’

আরও পড়ুন