অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ—মুখোমুখি ভারতের রাজ্য দল ও টেস্ট ক্রিকেটার

আবাহনীর হয়ে প্রিমিয়ার লিগে খেলে গিয়েছিলেন ভারতীয় ব্যাটসম্যান হনুমা বিহারিছবি: প্রথম আলো

ভারতের রাজ্য দল অন্ধ্র প্রদেশের সঙ্গে মুখোমুখি দাঁড়িয়ে গেছেন টেস্ট ক্রিকেটার ও দলটির সাবেক অধিনায়ক হনুমা বিহারি। দুই পক্ষ থেকেই একের পর এক পাল্টা অভিযোগ তোলা হচ্ছে। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ, দলাদলির মতো অভিযোগ আসছে সেখানে।

রঞ্জি ট্রফির কোয়ার্টার ফাইনালে মধ্য প্রদেশের কাছে ৪ রানে হারার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অন্ধ্র প্রদেশের দলটির হয়ে আর না খেলার ঘোষণা দেন বিহারি। সেখানে তাঁর আত্মসম্মান খোয়া গেছে, এমন দাবি তোলেন ভারতের হয়ে ১৬টি টেস্ট খেলা এ অলরাউন্ডার।

কী কারণে এমন বলছেন, সেটিও লেখেন তিনি। তাঁর মতে, ঘটনার শুরু জানুয়ারিতে। রঞ্জি ট্রফির প্রথম রাউন্ডের ম্যাচে বাংলার বিপক্ষে অন্ধ্রকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বিহারি। তবে এরপরই দায়িত্ব ছেড়ে দেন তিনি। যদিও দলটির একাদশে নিয়মিত খেলে গেছেন।

সে ম্যাচে দলের ‘১৭তম একজন খেলোয়াড়ের’ দিকে তিনি ‘চিৎকার’ করেছিলেন। বিহারির দাবি, সেই খেলোয়াড়ের বাবা একজন রাজনীতিবিদ। সেই খেলোয়াড় তাঁর বাবার কাছে অভিযোগ করার পর রাজ্য সংস্থাকে বিহারির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়। এরপরই তাঁকে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় বলে দাবি করেন বিহারি।

আরও পড়ুন

তাঁর মতে, ‘লজ্জিত বোধ করলেও আমি এ মৌসুমে খেলা চালিয়ে গেছি, কারণ আমি ক্রিকেট এবং আমার দলকে সম্মান করি। দুঃখের ব্যাপার হচ্ছে, রাজ্য সংস্থা মনে করছে তারা যেটিই বলবে খেলোয়াড়দের তা শুনতে হবে এবং খেলোয়াড়েরা তাদের জন্যই খেলছে। আমি অপমানিত এবং লজ্জিত বোধ করছি, আজকের আগে এটি বলিনি। যেখানে আত্মসম্মান হারিয়েছি, সেই অন্ধ্রর হয়ে আমি খেলব না আর।’

অস্ট্রলিয়া সফরে ঋষভ পন্তের সঙ্গে হনুমা বিহারি (বাঁয়ে)। ভারতের হয়ে এখন পর্যন্ত ১৬টি টেস্ট খেলেছেন বিহারি।
ছবি: এএফপি

তবে ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলো বলেছে, বিহারির এমন দাবি অস্বীকার করেছে অন্ধ্রর রাজ্য ক্রিকেট সংস্থা। এক বিবৃতিতে তারা দাবি করেছে, বিহারিকে অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তটি স্বতন্ত্র নির্বাচক কমিটির নেওয়া। অবশ্য ওই বিবৃতিতে বিহারির বিরুদ্ধে অসদাচরণের পালটা অভিযোগও তোলে অন্ধ্র।

আরও পড়ুন

এমনকি বিহারির বিরুদ্ধে দলাদলির অভিযোগও আনা হয়। এ ব্যাপারে একজন খেলোয়াড় তাদের কাছে অভিযোগ করেছেন, এমন জানায় অন্ধ্র ক্রিকেট। রঞ্জি ট্রফির আগেও বিহারির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ওঠার কথা জানায় তারা। এ ব্যাপারে একটি তদন্ত করা হচ্ছে বলেও জানানো হয়।

২৬ ফেব্রুয়ারিই ইনস্টাগ্রামে আরেকটি পোস্ট করেন বিহারি। সেখানে অন্ধ্র ক্রিকেটকে দেওয়া এক চিঠিতে দলের খেলোয়াড়রা তাঁর অধিনায়কত্বের পক্ষে কথা বলেছেন, এমন দেখা যায়। সে চিঠির ছবি পোস্ট করে বিহারি ক্যাপশনে লেখেন, ‘পুরো দলই জানে।’

তবে আজ ইন্ডিয়া টুডে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বিহারির ওই চিঠির বিষয়বস্তুর ব্যাপারেও ভিন্ন কথা বলছে অন্ধ্র ক্রিকেট। বিহারি তাঁর সতীর্থদের ‘হুমকি’ দিয়ে ওই চিঠিতে সই নিয়েছেন, এমন দাবিও করেছে রাজ্য সংস্থাটি।

হায়দরাবাদে ক্যারিয়ার শুরু করলেও ২০১৫-১৬ মৌসুমে অন্ধ্রের হয়ে খেলা শুরু করেন বিহারি। ২০২১-২২ মৌসুমে অল্প সময়ের জন্য হায়দরাবাদে ফিরলেও আবার অন্ধ্রে ফিরে যান। ২০২২ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের পর থেকে টেস্ট খেলেননি তিনি। ভারতের হয়ে শুধু দীর্ঘ সংস্করণেই খেলেছেন। মাঝে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে আবাহনীর হয়ে খেলে গেছেন বিহারি।