‘লড়াইটা ভারত-পাকিস্তানের নয়, আবাহনী-মোহামেডানের’

আবাহনীর ভারতীয় ব্যাটসম্যান হনুমা বিহারিছবি: প্রথম আলো

আবাহনী-মোহামেডান নিয়ে সেই উত্তাপ এখন আর নেই, এটা বেশ পুরোনো কথা। ঢাকার এ দুই ক্লাবের লড়াই যেন এখন হয়ে পড়েছে ‘নস্টালজিয়া’। সর্বশেষ ম্যাচটিও শেষ পর্যন্ত হলো একপেশেই। অবশ্য চাইলে কেউ এর মধ্যে খুঁজে নিতে পারতেন ‘ভারত-পাকিস্তান’ লড়াইয়ের ঝাঁজ। ভারতের হনুমা বিহারি খেলেছেন আবাহনীতে, মোহামেডানে পাকিস্তানের মোহাম্মদ হাফিজ। মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামের ম্যাচটিতে তাই এক টুকরা ভারত–পাকিস্তান দ্বৈরথও ছিল।

হাফিজের অলরাউন্ড পারফরম্যান্স ম্লান করে ৫৯ রানের ইনিংসে আবাহনীর জয়ে অবদান রেখেছেন বিহারি। অবশ্য ম্যাচ শেষে বিহারি মনে করিয়ে দিলেন, লড়াইটা তাঁর সঙ্গে হাফিজের বা ভারত-পাকিস্তানের নয়। লড়াইটা আবাহনী-মোহামেডানেরই।

আরও পড়ুন
মেহামেডানের বিপক্ষে আবাহনীর জয়ে অবদান রেখেছেন বিহারি।
ছবি: প্রথম আলো

ভারতের হয়ে ১৫টি টেস্ট খেলা বিহারিকে প্রশ্নটা করা হয়েছিল ভারত–পাকিস্তান দৃষ্টিকোণ থেকেই। যেটির উত্তরে তিনি বললেন, ‘এটা একজন খেলোয়াড়ের সঙ্গে আরেকজনের লড়াইয়ের ব্যাপার নয়। খেলোয়াড় বনাম খেলোয়াড় হিসেবে এটিকে দেখি না আমি। মোহাম্মদ হাফিজ ভালো ব্যাটিং করেছে। শুধু তার ক্লাব নয়, পাকিস্তানের হয়েও দীর্ঘদিন দারুণ পেশাদার ছিল সে। আজ ভালো একটা ম্যাচ হলো। আমরা ভালো বোলিং করেছি, তাদের অল্প রানের মধ্যে আটকাতে পেরেছি।’

দলের জয়ই তাঁর ধ্যানজ্ঞান—এ কথা জানিয়ে বিহারি বলেন, ‘আমার মনোযোগ আবাহনীর হয়ে ম্যাচ জেতার দিকেই। এটা প্রতিপক্ষ বা একজন খেলোয়াড়কে ঘিরে নয়। যখনই মাঠে নামবেন, আপনি দলের জন্য অবদান রাখার চেষ্টা করবেন, সেটা ফিল্ডিংয়ে হোক বা ব্যাটিংয়ে। আমি প্রতিদিনই শতভাগ দেওয়ার চেষ্টা করি, দলের সাফল্যে অবদান রাখার চেষ্টা করি।’

আরও পড়ুন
মোহামেডানের পাকিস্তানি অলরাউন্ডার মোহাম্মদ হাফিজ
ছবি: প্রথম আলো

ঢাকায় আসার পর থেকেই প্রিমিয়ার লিগের ‘প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঐতিহ্যে’র কথা বলে এসেছেন হাফিজ। ইতিহাসের কথা জানেন বিহারিও, ‘আমার মনে হয় ঘরোয়া ক্রিকেটেও লড়াইয়ের তীব্রতা থাকে, সুপার লিগে যাওয়ার একটা ব্যাপার আছে। এ ম্যাচেরও লম্বা ইতিহাস আছে, আমার মনে হয় প্রত্যাশা পূরণও করেছে। ভালো একটা ম্যাচ হয়েছে। আশা করি এ মৌসুমে আবারও দেখা হবে তাদের সঙ্গে, ভালো একটা লড়াই হবে।’

হাফিজ এবারই প্রিমিয়ার লিগে প্রথমবার খেলতে এলেও বিহারির কাছে এ অভিজ্ঞতা অবশ্য নতুন নয়। ২০১৭-১৮ মৌসুমে আবাহনীর হয়েই খেলে গিয়েছিলেন, সেবার অবশ্য এসেছিলেন শুধু সুপার লিগে খেলতেই। তবে এবার খেলছেন মৌসুমের শুরু থেকেই, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ভারতের টেস্ট সিরিজের পরই এসেছেন ঢাকায়।

আবাহনীর হয়ে খেলাটা উপভোগ করছেন হনুমা বিহারি
Shamsul Haque Tanku

আবাহনীর হয়ে খেলাটা উপভোগ করছেন এবারও, ‘চার বছর পর ফিরে এসে একই দলের হয়ে খেলাটা দারুণ। ভালো একটা দল, আমার খেয়াল রাখে বেশ। ক্রিকেটীয় দিক দিয়েও তারা ভালো ক্রিকেট খেলে, আবাহনীর হয়ে খেলাটা সব সময়ই উপভোগ করি। এ মৌসুমে জিতেছি, সেটিও ভালো ব্যাপার। মোমেন্টাম সঙ্গে আছে আমাদের।’

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের মানের দিক দিয়েও খুব একটা পার্থক্য দেখেন না এক শর বেশি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলা বিহারি, ‘আমার মনে হয় না পার্থক্য আছে। এর আগে যখন এসেছিলাম, ভারতের চেয়ে মান একটু কম ছিল বলে মনে হয়েছিল। তবে এখন সে পার্থক্যটা কমে আসছে, যেকোনো সময় ভারতের মানে পৌঁছে যাবে। বাংলাদেশ ক্রিকেট ঠিক পথেই এগোচ্ছে।’