আইপিএলে যেদিন ‘মৃত্যুর স্পর্শ’ পেয়েছিলেন হেইডেন
ভারত–পাকিস্তানের মধ্যে সীমান্তে সংঘাতের কারণে গত মে মাসে আইপিএল সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছিল। ৮ মে ধর্মশালায় দিল্লি ক্যাপিটালস ও পাঞ্জাব কিংসের মধ্যকার ম্যাচটি মাত্র ১০.১ ওভার গড়ানোর পর এয়ার রেইড সতর্কতার অংশ হিসেবে স্টেডিয়ামের আলো নিভিয়ে দেওয়া হয়েছিল এবং ম্যাচটি আর পুনরায় শুরু করা হয়নি। বন্ধ হওয়া এই ম্যাচটি দিয়ে সাময়িক স্থগিত হয়েছিল আইপিএল।
আইপিএলে ধারাভাষ্য দেওয়া অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি ম্যাথু হেইডেন তখন ভয়ংকর অভিজ্ঞতার সন্মুখীন হয়েছিলেন। ‘অল ওভার দ্য ক্রিকেট’ পডকাস্টে সে ঘটনা বলেছেন, টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলা সাবেক এ ব্যাটসম্যান।
হেইডেন বলেছেন, ‘এ বছরের আইপিএল আলাদা ছিল। বিপজ্জনক ও ভয়ংকরও। আমি যেন মৃত্যুর স্পর্শও পেয়েছিলাম!’ হেইডেন এরপর ধর্মশালার ম্যাচটি নিয়ে বলেন, ‘রাতে মুম্বাই থেকে উড়াল দিয়ে দিল্লিতে যাই; কারণ, পাঞ্জাবের ঘরের মাঠ (ওই ম্যাচের জন্য) ধর্মশালার সঙ্গে কোনো কানেক্টিং ফ্লাইট ছিল না। মাঠটা দারুণ। কিন্তু দিল্লিতে নামার পর দেখি বিমানবন্দর বন্ধ। তখন ভারতের ওপর হামলা করেছে পাকিস্তান এবং আমরা আকাশে ড্রোনের ওড়া নিয়ে কথা বলছিলাম। ক্ষেপনাস্ত্রগুলোও আকাশে উড়ছিল এবং সবকিছু ভুতুড়ে মনে হচ্ছিল। একটি গাড়িতে করে আমাদের চন্ডিগড় থেকে ধর্মশালায় যেতে হয়। সেটা ছিল সাড়ে ১১ থেকে ১২ ঘণ্টার রাস্তা। মাঠে পৌঁছানোর পর জানলাম খেলা শুরু হবে।’
ভারতের সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’ জানিয়েছে, স্টেডিয়ামের আলো নিভে যাওয়া ছিল অস্বাভাবিক কোনোকিছু ঘটার প্রথম ইঙ্গিত। কারিগরি ত্রুটি মনে হয়েছিল প্রথমে, স্টেডিয়াম পুরোটা অন্ধকার হয়ে যায় এবং খবর ছড়িয়ে পড়ল ড্রোন হামলার আশঙ্কায় স্টেডিয়াম খালি করা হচ্ছে। ভারতের কিছু বড় শহরেও ‘ব্ল্যাক আউট’ (বিদ্যুৎ বন্ধ) এর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল।
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে দুবার বিশ্বকাপজয়ী ৫৩ বছর বয়সী হেইডেন জানান, ম্যাচ শুরুর আগে ধারাভাষ্যকারদের বলা হয়েছিল কারিগরি সমস্যার কারণে স্টেডিয়ামের আলো নিভবে না, ‘(ম্যাচ শুরুর) আধঘণ্টা আগে আমরা ধারাভাষ্য শুরু করি। সে সময় নিরাপত্তামূলক একটি বার্তা দেওয়া হয় আমাদের—ফ্লাডলাইটের আলো নিভলে সেটা কারিগরি সমস্যার জন্য হবে না। এটার অর্থ হলো, স্টেডিয়ামেও (হামলার) শঙ্কা আছে এবং জরুরি পরিস্থিতির জন্য (স্টেডিয়াম) খালি করতে হবে এবং আমাদেরও বের হতে হবে।’
হেইডেন বলে যান, ‘আমার (ধারাভাষ্য) কথা বলার মাঝে প্রথম টাওয়ারের আলো নিভে যায়। এটা দর্শকদের জানাই। এরপর দ্বিতীয়টির আলোও তাৎক্ষণিকভাবে নিভে যায়। পরবর্তী মুহূর্তেই নিরাপত্তা দল চলে এলো। কথা বলার মধ্যেই মাইকটি ফেলে তাদের সঙ্গে যেতে হয়।’
ধর্মশালায় সেদিন ম্যাচটি বন্ধ হওয়ার পরের দিন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) এক সপ্তাহের জন্য আইপিএল স্থগিত করে। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষ বন্ধ হওয়ার পর সংশোধিত সূচিতে আবারও শুরু হয় আইপিএল। ৩ জুন অনুষ্ঠিত ফাইনালে পাঞ্জাব কিংসকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু।