বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে কোহলি-স্মিথদের ‘মানকাড’ করলে কী হবে, প্রশ্ন অশ্বিনের

২০১৯ আইপিএলের জস বাটলারকে নন-স্ট্রাইক প্রান্তে রানআউট করেছিলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিনবিসিসিআই

পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের ওয়ানডেতে নন-স্ট্রাইক প্রান্তে পাকিস্তান ব্যাটসম্যান শাদাব খানকে রানআউট করে আরেকবার আলোচনাটা উসকে দিয়েছেন আফগানিস্তান পেসার ফজলহক ফারুকি। এমন রানআউটের পক্ষে বরাবরই উচ্চস্বর ভারত অলরাউন্ডার রবিচন্দ্রন অশ্বিন এবার একটি প্রশ্নও তুলেছেন—বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল বা এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা, স্টিভেন স্মিথ ও জো রুটদের মতো ব্যাটসম্যানদের এর শিকার হতে হলে তখন কী ঘটবে?

আগে ‘মানকাডিং’ বলে পরিচিত এ আউট এখন পরিষ্কার রানআউট বলে ক্রিকেটের আইনেই বিবেচিত। আইসিসি এটি নিয়ে বিতর্ক বন্ধ করতে নিয়মও পরিবর্তন করেছে। তবে এমন রানআউট ক্রিকেটের চেতনার পরিপন্থী, কোনো ঘটনার পর এ আলোচনা ঘুরেফিরেই আসে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নন-স্ট্রাইক প্রান্তের রানআউটের ঘটনা যে একেবারে নিয়মিত, তা অবশ্য নয়। এখনো পর্যন্ত টেস্ট ক্রিকেটে এটি ঘটেছে মাত্র চারবার, আর শাদাব ওয়ানডেতে এমন আউটের শিকার হওয়া মাত্র পঞ্চম ব্যাটসম্যান। ছেলেদের টি-টোয়েন্টি ও মেয়েদের ওয়ানডেতে একবার করে এমন আউটের ঘটনা আছে। অবশ্য মেয়েদের টি-টোয়েন্টিতে এক ম্যাচেই চারটি এমন রানআউট হয়েছিল। ২০২১ সালে উগান্ডার চার ব্যাটারকে একই ম্যাচে নন-স্ট্রাইক প্রান্তে রানআউট করেছিলেন ক্যামেরুনের মায়েভা দুমা

টুইটারে সম্প্রতি মানকাডিং নিয়ে নিজের মত জানান ভারতীয় এক সাংবাদিক। হিমানশু পারিক নামের ওই সাংবাদিক বলেন, এখনো পর্যন্ত যাঁরা এ আউটের শিকার হননি বা এ আউট করার চেষ্টা করেন না, তাঁরাই এর পক্ষে কথা বলেন। এরপর তিনি যোগ করে বলেন, ‘ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও পাকিস্তানের খেলোয়াড়েরা প্রকাশ্যেই এর বিপক্ষে। এমনকি (মহেন্দ্র সিং) ধোনি, রোহিত বা কোহলির অধীনে ভারতের ছেলেদের দলের কেউ এটি চেষ্টা করেনি। তবে মেয়েদের ক্রিকেট এবং আইপিএলের সাম্প্রতিক কিছু ঘটনার কারণে অনেক ভারতীয় সমর্থক এর পক্ষে কথা বলেন। তবে ঈশ্বর না করুন, বিশ্বকাপের মতো গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে বা কোহলির মতো ব্যাটার সেঞ্চুরির কাছে দাঁড়িয়ে যদি এটির শিকার হন, তাহলে সবকিছু কীভাবে বদলে যায় বিশ্ব তা দেখবে।’

শাদাব খানকে নন-স্ট্রাইকে রানআউট করেন ফজলহক ফারুকি
টুইটার

এমন পর্যালোচনাকে সাধুবাদ জানিয়ে টুইটারের নিজের মতটা আরেকবার জানিয়েছেন অশ্বিন। রোহিত-কোহলি এর শিকার হলে কী হবে, সে শঙ্কাও জানিয়েছেন তিনি, ‘ধরুন, বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল বা গুরুত্বপূর্ণ কোনো ম্যাচে কেউ কোহলি, রোহিত, স্মিথ, রুট বা এমন গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটসম্যানকে নন-স্ট্রাইক প্রান্তে রানআউট করল। আমি নিশ্চিত পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠবে। চরিত্র হননের প্রচারণা শুরু করবেন কিছু বিশেষজ্ঞরা, যাঁরা এখনো এর সঙ্গে একমত নন এবং এর শিকার দলের সমর্থকেরাও সামিল হবেন তাতে।’

আরও পড়ুন

সব মিলিয়ে এ পরিস্থিতির একটিই সমাধান দেখেন অশ্বিন, ‘যেই ব্যাটার হোক না কেন, পরিস্থিতির ভার যেমনই হোক, ব্যাটারদের দেখতে হবে বোলার বল ছুড়ছে কি না। সেটি না করে যদি আউট হয়, তাহলে আমাদের বোলারদের বাহবা দেওয়া উচিত, ব্যাটসম্যানকে বলা উচিত তার এমন করা ঠিক হয়নি।’

বিশ্বকাপে সব দলই এমন আউটের জন্য প্রস্তুত থাকুক, অশ্বিনের আশা এমন, ‘এ মুহূর্তে সব দল এটি করছে না। তবে বিশ্বকাপ এলে আমি সত্যিই আশা করব সবাই প্রস্তুত থাকবে। কারণ “আমরা এটি করব না”, এমন বলে নৈতিক দিক দিয়ে এগিয়ে থাকতে গেলে অন্য দলগুলোর জন্য কৌশলগত দুয়ার খুলে দেওয়া হয়। বিশ্বকাপ জয় আজীবনের এক অর্জন বলে দলগুলোর সত্যিই প্রতিটি সুযোগই নেওয়া উচিত।’

তবে মানসিকতা যে একেকজনের ক্ষেত্রে একেক রকম, অশ্বিন জানেন সেটি, ‘দিনশেষে জয়ই কি সব কিছু? কারও জন্য এটিই সব, কারও জন্য নয়। আমাদের দুটিই মেনে নিতে হবে। কারণ, আমরা সবাই ভিন্ন। ক্রিজের ভেতরে থাকুন, শান্তিতে থাকুন।’