বাবরদের ‘দেখে তো মনে হয়, প্রতিদিন ৮ কেজি খাসির গোশত খায়’

সতীর্থের ফিল্ডিং মিস দেখে মুখ ঢেকে ফেলেন পাকিস্তানের উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ রিজওয়ানছবি: টুইটার

হারের হ্যাটট্রিক! এর মধ্যে গতকালের হার সবচেয়ে বেশি কষ্ট দেবে পাকিস্তান দলকে। চেন্নাইয়ে আফগানিস্তানের কাছে ৮ উইকেটে হেরেছে বাবর আজমের দল। শুধু কী হার, টুর্নামেন্টজুড়ে ভীষণ বাজে ফিল্ডিংয়ে হাসির খোরাকও হয়েছেন পাকিস্তানের খেলোয়াড়েরা।

আফগানিস্তানে ইনিংসেই যেমন ১৬তম ওভারে রহমানাউল্লাহ গুরবাজের ওয়াইড লং অনে তুলে খেলা বল ঠেকাতে পারেননি শাহিন আফ্রিদি। স্কুলপড়ুয়া বাচ্চাদের মতো ভুল করে ছেড়ে দেন! উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ রিজওয়ান তা দেখে বিস্ময়ে মুখ ঢেকে ফেলেন। এমনকি অধিনায়ক বাবর আজমও বাজে ফিল্ডিংয়ে আফগানদের কিছু রান ‘উপহার’ দিয়েছেন।

আরও পড়ুন

ওয়াসিম আকরাম তাই আর মেজাজ ধরে রাখতে পারেননি। বিশ্বকাপে পাকিস্তানের স্পোর্টস চ্যানেল ‘এ স্পোর্টস’-এর অনুষ্ঠান ‘দ্য প্যাভিলিয়ন’-এ বিশেষজ্ঞ মতামত দিচ্ছেন আকরাম। সেখানেই নিজের ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন সর্বকালের অন্যতম সেরা এই পেসার। পাকিস্তান দলের খেলোয়াড়দের ফিটনেস নিয়ে আকরাম বলেছেন, ‘খেলোয়াড়দের ফিল্ডিং ও ফিটনেস দেখুন। আমরা ৩ সপ্তাহ ধরে বলছি, এই খেলোয়াড়েরা গত দুই বছরের মধ্যে কোনো ফিটনেস পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যায়নি। এখন আমি নাম ধরে বললে তারা অখুশি হবে। দেখে তো মনে হয়, তারা প্রতিদিন আট কেজি করে খাসির গোশত খায়। তাহলে কি (ফিটনেস) পরীক্ষাটা হওয়া উচিত না?’

আফগানিস্তানের বিপক্ষে গতকাল খেলোয়াড়দের বাজে ফিল্ডিং দেখে সম্ভবত মেজাজ ধরে রাখতে পারেননি পাকিস্তানের টিম ডিরেক্টর মিকি আর্থার। ড্রেসিংরুমে ঢুকে যান তিনি। ওয়াসিম আকরাম দেশের প্রতি খেলোয়াড়দের দায়বদ্ধতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন, ‘পেশাদার দৃষ্টিকোণ থেকে দেশের হয়ে খেলার জন্য তোমরা অর্থ পাচ্ছ। তাই নির্দিষ্ট কিছু মানদণ্ড থাকতেই হবে। মিসবাহ যখন কোচ ছিল, তখন এটা ছিল। খেলোয়াড়েরা তাকে পছন্দ করত না, কিন্তু কাজটা হয়েছে। ফিল্ডিং তো ফিটনেসের ওপর নির্ভর করে আর আমরা এখানেই পিছিয়ে। এখন আমরা সেই আগের জায়গাতেই ফিরে গেছি, যেখান থেকে যদি ও কিন্তুর প্রার্থনা করতে হবে।’

আরও পড়ুন

৫ ম্যাচে মাত্র ২টিতে জিতে পয়েন্ট টেবিলে পঞ্চম স্থানে রয়েছে পাকিস্তান। হাতে আছে আর ৪ ম্যাচ। এখান থেকে সেমিফাইনালে ওঠা বেশ কঠিনই হবে বাবর আজমদের জন্য। বিশ্বকাপের আগে বাবররা এশিয়া কাপের ফাইনালেও উঠতে পারেননি। দলের এ অবস্থার জন্য পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকেও (পিসিবি) দুষেছেন আকরাম। গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলা পাকিস্তান দলের বোর্ডপ্রধান থেকে রমিজ রাজাকে অপসারণের পর অন্তর্বর্তীকালীন চেয়ারম্যান হয়েছিলেন নাজাম শেঠি। এরপর চার মাসের জন্য জাকা আশরাফকে পিসিবি চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

পিসিবির প্রতি আঙুল তুলে ওয়াসিম আকরাম বলেছেন, ‘গত ৬ থেকে ৮ মাসে আমাদের একজনই চেয়ারম্যান ছিল। তিনি তিন থেকে চার মাসের জন্য বোর্ডে আসার পর কী করলেন, কোচিং স্টাফ পাল্টে ফেললেন! অথচ গত বছর আমরা ফাইনাল খেলেছি। কিন্তু তিনি এসেই একে সরালেন, ওকে বের করলেন এবং নিজের লোক নিয়ে এলেন। দয়া করে এরপর যে-ই চেয়ারম্যান হন, জাতির কথা ভাববেন। ওয়াসিম খান ও এহসান মানি অনেক কষ্ট করে হাই পারফরম্যান্স সেন্টারে একটি প্রক্রিয়া দাঁড় করিয়েছিলেন। তারা সেটাও পাল্টে জাতীয় কোচিং সেন্টার বানিয়েছে। সেখানে ৮ মাস ধরে একটি ক্যাম্পও হয়নি। এই অপ্রয়োজনীয় পরিবর্তনের কী দরকার?’

শুক্রবার চেন্নাইয়ে নিজেদের পরের ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে পাকিস্তান।

আরও পড়ুন