ফিফা: ২০২৩ সালে খেলোয়াড় কেনাবেচায় ৯৬৩ কোটি ডলার খরচের রেকর্ড

সুইজারল্যান্ডের জুরিখে ফিফার সদরদপ্তররয়টার্স

‘খরচে শীর্ষে থাকা পাঁচ লিগের মধ্যে এই প্রথমবারের মতো জায়গা করে নিয়েছে সৌদি আরবের ক্লাবগুলো। ২০২৩ সালে তাদের মোট খরচ ৯৭ কোটি ডলার, যেটা ২০২২ সালে ছিল ৫ কোটি ৪ লাখ ডলার’—ফিফার বিবৃতিতে এমনটাই বলা হয়েছে।

গতকাল গ্লোবাল ট্রান্সফার রিপোর্ট প্রকাশ করেছে ফিফা। সেখানে ২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী ক্লাবগুলো দলবদলে খরচের রেকর্ড গড়েছে—৯৬৩ কোটি ডলার। ২০২২ সালের তুলনায় গত বছর ক্লাবগুলোর খরচ বেড়েছে ৪৮ দশমিক ১ শতাংশ। এর মধ্য দিয়ে ২০১৯ সালে ক্লাবগুলোর মোট ৭৩৫ কোটি ডলারের কিছু বেশি খরচের রেকর্ড ২০২৩ সালে এসে ভেঙে গেল। আর রেকর্ড ভেঙে দেওয়ার ব্যবধানও বেশ বড়—২০০ কোটি ডলারের কিছু বেশি!

আরও পড়ুন

গত বছর খরচে সৌদি ক্লাবগুলোর উঠে আসা প্রত্যাশিতই ছিল। গত বছর জানুয়ারিতে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো সৌদি আরবের ক্লাব আল হিলালে যোগ দেওয়ার পর ইউরোপ থেকে বেশ কয়েক তারকা ফুটবলার তাঁকে অনুসরণ করেন। নেইমার, সাদিও মানে, রিয়াদ মাহরেজ, রবার্তো ফিরমিনোরা যোগ দিয়েছেন সৌদির ক্লাব ফুটবলে। তবে রোনালদো ও করিম বেনজেমা ফ্রি এজেন্ট হিসেবে যোগ দেন সৌদির ক্লাব ফুটবলে।

গত বছর সবচেয়ে বেশি খরচ করেছে ইংল্যান্ডের ক্লাবগুলো—২৯৬ কোটি ডলার। চেলসি এই খরচের নেতৃত্বে। চারটি অ্যাসোসিয়েশন দেশ দলবদলে ১০০ কোটি ডলারের বেশি ফি পেয়েছে।

করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দুই বছর (২০২০ ও ২০২১) দলবদলে খরচের তেমন জোয়ার ছিল না। ২০২২ সালে এসে দলবদলের বাজার কিছুটা চাঙা হয় (৬৫০ কোটি ডলার)। আর গত বছর তা ফুলেফেঁপে ওঠে। শীর্ষ ১০ দলবদলের খরচই ২০২৩ সালে ক্লাবগুলোর মোট খরচের ১০ শতাংশ। জুড বেলিংহামের রিয়াল মাদ্রিদে যোগদান, এনজো ফার্নান্দেজের চেলসিতে যোগদান ও হ্যারি কেইনের বায়ার্ন মিউনিখে যোগ দেওয়ার মতো শীর্ষ দলবদলগুলো এতে ভূমিকা রেখেছে।

শীর্ষ ১০টি দলবদলে মধ্যে জুড বেলিংহামের রিয়ালে যোগ দেওয়াও ঠাঁই পেয়েছে
ইনস্টাগ্রাম

গত বছর সবচেয়ে বেশি খরচ করেছে ইংল্যান্ডের ক্লাবগুলো—২৯৬ কোটি ডলার। চেলসি এই খরচের নেতৃত্বে। চারটি অ্যাসোসিয়েশন দেশ দলবদলে ১০০ কোটি ডলারের বেশি ফি পেয়েছে। ফিফার বিবৃতিতে বলা হয়, ‘মোট ১২১ কোটি ডলার নিয়ে দলবদল ফি পাওয়ার তালিকায় শীর্ষে জার্মানির ক্লাবগুলো। এই প্রথমবারের মতো কোনো একটি অ্যাসোসিয়েশন থেকে ক্লাবগুলো দলবদল ফি হিসেবে একটি পঞ্জিকাবর্ষে ১০০ কোটির বেশি আয় করল। আরও তিনটি অ্যাসোসিয়েশনের ক্লাবগুলোও এই বিশেষ তালিকায় যোগ দিয়েছে—ফ্রান্স (১১৯ কোটি ডলার), ইংল্যান্ড (১০৪ কোটি ডলার) ও ইতালি (১০২ কোটি ডলার)।’

আরও পড়ুন
২০২৩ সালে দেশের বাইরে থেকে সবচেয়ে বেশি খেলোয়াড় কিনেছে পর্তুগাল (১০১৭)। খেলোয়াড় রপ্তানিতে সবচেয়ে এগিয়ে ব্রাজিল (১২১৭)।

২০২৩ সালে দলবদলে সবচেয়ে বেশি খরচে চেলসির পর ফ্রান্সের ক্লাব পিএসজি। শীর্ষ পাঁচে থাকা বাকি তিন ক্লাব যথাক্রমে লিভারপুল, রিয়াল মাদ্রিদ ও বায়ার্ন মিউনিখ। ছয়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও সাতে ম্যানচেস্টার সিটি। লাতিন আমেরিকান ক্লাবগুলোর মধ্যে খরচে শীর্ষে ফ্লামেঙ্গো। কনকাক্যাফ অঞ্চল থেকে খরচের শীর্ষস্থানটি লিওনেল মেসির ক্লাব ইন্টার মায়ামির। এএফসি থেকে নেইমারের ক্লাব আল হিলাল খরচে শীর্ষে এবং আফ্রিকা থেকে শীর্ষস্থানটি মিসরের ক্লাব আল আহলির।

২০২৩ সালে দেশের বাইরে থেকে সবচেয়ে বেশি খেলোয়াড় কিনেছে পর্তুগাল (১০১৭)। খেলোয়াড় রপ্তানিতে সবচেয়ে এগিয়ে ব্রাজিল (১২১৭)। ২০২৩ সালে মোট ২১৮০১টি আন্তর্জাতিক দলবদল হয়েছে। এর মধ্যে ৩২৭৯টি দলবদলে ফি দিতে হয়েছে। ফিফার ২১১টি সদস্যদেশের মধ্যে ১৮০টি দেশের মোট ৪৯৭১টি ক্লাব এই দলবদলে অংশ নিয়েছে।

ফিফার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, নারী ফুটবলের দলবদলেও বাজার বেশ চাঙা হয়েছে। সংস্থাটির বিবৃতি অনুযায়ী ‘লক্ষণীয় উন্নতি’। গত বছর নারীদের ৬২৩টি ক্লাব আন্তর্জাতিক দলবদলের সঙ্গে যুক্ত ছিল, ২০২২ সালে যেটা ছিল ৫০৭টি ক্লাব। মোট ১৮৮৮ নারী ফুটবল এক দেশ থেকে অন্য দেশের ক্লাবে দলবদল করেছেন। ২০২২ সালের (১৫৭১) তুলনায় সংখ্যাটা বেড়েছে। খরচের পরিমাণে রেকর্ড গড়েছে নারী ফুটবলও—৬১ কোটি ডলার। ২০২২ সালের তুলনায় গত বছর খরচ বেড়েছে ৮৪.২ শতাংশ।

আরও পড়ুন