৭ গোলের ম্যাচে ওনানার ‘ভুলে’ ইউনাইটেডের হার

আন্দ্রে ওনানার শিশুতোষ ‍ভুলেই কি হারল ইউনাইটেডছবি: টুইটার থেকে

বায়ার্ন মিউনিখ ৪:৩ ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড

শেষ পর্যন্ত আন্দ্রে ওনানার শিশুতোষ ভুলটাই তাহলে ম্যাচের ফল ঠিক করে দিল!

প্রথম আধা ঘণ্টায় হ্যারি কেইন, লেরয় সানে আর সার্জ জিনাব্রিদের মতো বারবার আক্রমণে উঠতে পারছিলেন না মার্কাস রাশফোর্ড-রাসমুস হয়লুন্দ-ব্রুনো ফার্নান্দেজরা। তবে নিজেদের রক্ষণের দৃঢ়তা আর বায়ার্নের ফিনিশিংয়ের দুর্বলতা মিলিয়ে ঠিকই গোল পোস্ট অক্ষত ছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের।

কিন্তু আন্দ্রে ওনানার গ্লাভস জোড়া একবার ‘ফুটো জাল’ হয়ে উঠতেই হুড়মুড় করে ভেঙে পড়তে শুরু করল পুরো বাঁধ। প্রথম ২৭ মিনিটে গোল হজম না করা ইউনাইটেড পরের ২৭ মিনিটেই হজম করে তিন গোল। পরে আরও একটি। এর আগে-পরে মিলিয়ে তিন গোল করলেও শেষ পর্যন্ত ৪-৩ ব্যবধানের হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে ইউনাইটেডকে। ১ গোল ব্যবধানের যে হারে ওনানার শিশুতোষ ভুলে হজম করা প্রথম গোলটিই হতে পারে টেন হাগের দলের আক্ষেপের কারণ।

এটি সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ইউনাইটেডের টানা তৃতীয় হার। ইংলিশ ক্লাবটি ম্যাচে তিন বা তার বেশি গোলও হজম করল টানা তিন ম্যাচে, যা ইউনাইটেড ইতিহাসে ১৯৭৮ সালের পর এই প্রথম।

আরও পড়ুন

অথচ ম্যাচের চতুর্থ মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারত ইউনাইটেড। ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেনের কাছ থেকে নেওয়া শট দারুণ তৎপরতায় রুখে দেন বায়ার্ন গোলরক্ষক সেন উলরিয়েখ। ম্যাচের প্রথম আধা ঘণ্টায় ইউনাইটেডের গোলের ভালো সম্ভাবনা তৈরি করা আক্রমণ ছিল এই একটিই। বায়ার্নই বারবার হানা দিয়ে ইউনাইটেড রক্ষণে। তবে ওনানা ভুল না করলে স্বাগতিকদের প্রথম গোল পেতে হয়তো বেশ খানিকটা সময়ই অপেক্ষা করতে হতো।

২৮ মিনিটে বায়ার্ন এগিয়ে যায় ইউনাইটেড গোলরক্ষক ওনানার দুর্বলতায়। কেইনের সঙ্গে বল দেওয়া-নেওয়া করে বক্সের বাইরে থেকে জোরালো শট নিয়েছিলেন সানে। বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে ওনানা বলের নাগালও পান, কিন্তু ক্যামেরুনিয়ান গোলরক্ষক তা নিয়ন্ত্রণে নিতে তো পারেনইনি, হাত ফসকে বল জালেই পাঠিয়ে দেন।

আরও পড়ুন

ইউনাইটেডের গোলমুখ খোলার পর উজ্জীবিত বায়ার্ন চার মিনিট বাদে দ্বিতীয় গোলও পেয়ে যায়। বল নিয়ে বক্সে ঢোকা জামাল মুসিয়ালা ডিফেন্ডারদের ঘেরাওয়ে পড়লে বাড়ান জিনাব্রির দিকে। অরক্ষিত জার্মান ফরোয়ার্ড বল জালে পাঠাতে ভুল করেননি। এটি ছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যোগ দেওয়ার পর ওনানার ৬ ম্যাচে ১২তম গোল হজম; যা গত মৌসুমে ইন্টার মিলানের হয়ে লিগে ২৪ ম্যাচে হজম করা গোলের অর্ধেক।

তবে এখানেই ওনানার দুর্গতি শেষ হয়নি।

এর মধ্যে ৫৩ মিনিটে কেইন আর ৯২ মিনিটে ম্যাথিস তেল বায়ার্নের পক্ষে আরও দুইবার বল জালে পাঠান। এরিকসেনের হ্যান্ডবলের সূত্রে পাওয়া পেনাল্টিতে বায়ার্নের হয়ে নিজের পঞ্চম গোলটি করেন কেইন।

গোলের পর হ্যারি কেইনের উল্লাস
ছবি: টুইটার থেকে

ইউনাইটেডের তিনটি গোলই এসেছে পিছিয়ে থাকাবস্থায়। প্রথমটি ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে থাকা ৪৯ মিনিটে হয়লুন্দের কাছ থেকে। ২০ বছর ডেনিশ ফরোয়ার্ড রাশফোর্ডের কাছ থেকে পাওয়া বলে বাঁ পায়ে শট নিলে কিম মিন-জায়ের পায়ে লেগে গতিপথ বদলে জালে জড়ায়। অন্য দুটি গোল কাসেমিরোর, একটি ৮৮ মিনিটে, আরেকটি যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটে।

সব কটি গোলই মূলত শোধের হওয়ায় ম্যাচে জয়ের সম্ভাবনা একবারও তৈরি করতে পারেনি ইউনাইটেড। তবে ওনানার ভুলে প্রথম গোলটি না হলে অন্তত একটি পয়েন্ট নিয়ে মিউনিখ থেকে ফেরা হয়তো ঠিকই যেত।