নেপাল ম্যাচে খেলবেন হামজা, কিছু সময় খেলতে পারেন শমিতও

ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়ামে আগামী ১৩ নভেম্বর নেপালের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। হামজা আসবেন ১০ নভেম্বর, এরপর আসবেন শমিত।

হামজা চৌধরী ও শমিত সোমছবি: বাফুফে

১৫ খেলোয়াড় নিয়ে ৩১ অক্টোবর জাতীয় স্টেডিয়ামে শুরু হয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল দলের ভারত ম্যাচের প্রস্তুতি। এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের এই ম্যাচ সামনে রেখে কোচ হাভিয়ের কাবরেরা ধীরে ধীরে সাজাচ্ছেন পরিকল্পনা।

১০ নভেম্বরের মধ্যে ঢাকায় এসে অনুশীলনে যোগ দেবেন ইংল্যান্ডের লেস্টার সিটির ফুটবলার হামজা চৌধুরী। নেপালের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে তাঁকে পুরো সময় মাঠে দেখা যাবে—এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন কোচ। হামজার পর আসবেন কানাডাপ্রবাসী শমিত সোম। তাঁকে নেপাল ম্যাচে কিছু সময়ের জন্য মাঠে নামানোর পরিকল্পনা আছে কাবরেরার।

পিতৃত্বকালীন ছুটি কাটিয়ে ক্যাম্পে ফিরেছেন কোচ কাবরেরা। যমজ সন্তানের বাবা হওয়ার আনন্দে ফুরফুরে মেজাজেই যোগ দেন অনুশীলনে।

নেপালের বিপক্ষে ম্যাচ সামনে রেখে অনুশীলনে বাংলাদেশ দল
ছবি: শামসুল হক

জাতীয় স্টেডিয়ামে দলের সঙ্গে প্রথম সেশনে যোগ দিয়েই তিনি স্পষ্ট করে দেন হামজা–শমিতকে নিয়ে ভাবনা, ‘হামজা আশা করি ১০ তারিখের মধ্যে আসবে। সব ঠিকঠাক থাকলে এবং সে ভালো অনুভব করলে, কেন নয়? সে খেলবে। শমিত হয়তো একটু পরে আসবে, তবে আমরা চেষ্টা করব নেপাল ম্যাচে অন্তত কিছু মিনিট যেন খেলতে পারে।’

১৮ নভেম্বর ভারতের বিপক্ষে মর্যাদার ম্যাচ বাংলাদেশের সামনে। এরপর গ্রুপের শেষ ম্যাচ সিঙ্গাপুরের বিপক্ষেও জয়ের পরিকল্পনা কোচের। যদিও চার ম্যাচে মাত্র এক পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশ আগেই বিদায় নিয়েছে এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে ওঠার লড়াই থেকে।

বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের প্রধান কোচ হাভিয়ের কাবরেরা
ছবি: শামসুল হক

তবু লক্ষ্য এখন ১৩ নভেম্বর নেপালের বিপক্ষে ম্যাচ সামনে রেখে ভালো প্রস্তুতি নেওয়া। প্রতিপক্ষ হিসেবে নেপাল কতটা কাজে আসবে ভারত ম্যাচের আগে? কাবরেরা বলেন, ‘নেপাল ভালো করছে। তারা শক্তিশালী দলের বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। আমরা সেপ্টেম্বরে নেপালে তাদের বিপক্ষে খেলেছি। মূলত আফগানিস্তানের সঙ্গে খেলতে চেয়েছিলাম, তবে নেপালও আমাদের জন্য ভালো চ্যালেঞ্জ হবে।’

ক্যাম্প শুরু হওয়ার পর থেকেই খেলোয়াড় তালিকা নিয়ে হয়েছে নাটক। অনুশীলন শুরুর পরও বাফুফে আনুষ্ঠানিকভাবে কারা ডাক পেয়েছে, কারা বাদ পড়েছে, তা জানায়নি। এমন ঘটনা নজিরবিহীন। বাফুফের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, তালিকা প্রকাশ না করার নির্দেশনা এসেছে কোচের কাছ থেকে।

কিন্তু আজ সেই গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়েছেন কাবরেরা। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় এর সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। আমি সব সময় ক্যাম্পের আগে তালিকা পাঠাই। তাই জানি না কেন প্রকাশ করা হয়নি। হয়তো এ বিষয়ে আপনাকে মিডিয়া ম্যানেজার মি. সাদমানের সঙ্গে কথা বলতে হবে। না, এটা কোচের নির্দেশনা নয়।’

হামজা ও শমিতকে আগামী সপ্তাহে আবার বাংলাদেশ দলের অনুশীলনে দেখা যাবে
ছবি: বাফুফে

এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগ খেলে ১ নভেম্বর কুয়েত থেকে ফিরেছে বসুন্ধরা কিংস। তাদের ১০ খেলোয়াড়ের জাতীয় দলের ক্যাম্পে যোগ দেওয়ার কথা ছিল আজ। কিন্তু তারা যোগ দেবে ৭ নভেম্বর। ফলে কোচকে আপাতত ১৫ জন খেলোয়াড় নিয়েই অনুশীলন চালাতে হচ্ছে, যা তাঁর জন্য মোটেও সুখকর নয়। ক্যাম্প আয়োজন ও ব্যবস্থাপনায় বাফুফের বিশৃঙ্খলাও চোখে পড়ছে।

কাবরেরা গৎবাঁধা দল নিয়েই এগোচ্ছেন। নতুন মুখ ডাকছেন না। এ নিয়ে প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘শেষ তিনটি ক্যাম্পের সময় খুব কাছাকাছি ছিল। আমরা সব সময় একইভাবে কাজ করি, একই ধারণা নিয়ে প্রস্তুতি নিই। তাই স্বাভাবিকভাবেই একই দলকে ধারাবাহিকতা দিচ্ছি। দেশে নিয়মিত ঘরোয়া লিগ বা প্রতিযোগিতা নেই, যেখানে নতুনদের পারফরম্যান্স দেখে ডাকা যায়। তাই গত তিন মাসে ৯০–৯৫ শতাংশ খেলোয়াড় একই ছিল। এটা ভালো দিকও বটে। দল ভালো খেলছে, যদিও প্রত্যাশিত ফল পাইনি। তবে ভারতের বিপক্ষে জয়ের জন্য এই দলই সঠিক।’

আরও পড়ুন

খেলোয়াড়ের সংখ্যা নিয়েও ব্যাখ্যা দিয়েছেন কোচ, ‘যদি শুরুতে ২২ জন ডাকি, পরে আরও ১২ জন যোগ হয়, তাহলে গ্রুপ হয়ে যাবে ৩০–৩৫ জনের। এতে অনুশীলনের মান কমে যাবে। তাই সর্বাধিক ২৫–২৭ জনের বেশি রাখা উচিত নয়।’

প্রথমে ১৪ জন খেলোয়াড় ডাকা হয়েছিল ক্যাম্পে। পরে যোগ হয়েছেন গোলকিপার পাপ্পু হোসেন। কিংসের খেলোয়াড়েরা ৭ নভেম্বর যোগ দিলে সংখ্যা দাঁড়াবে ২৪–২৫ (হামজা ও শমিত ছাড়া)।

কিউবা মিচেলকে ভবিষ্যতে বাংলাদেশ দলে ডাকবেন কাবরেরা
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

বসুন্ধরা কিংসের কিউবা মিচেল নিয়েও কথা বলেছেন কাবরেরা। তাঁর ভাষায়, ‘সে প্রতিভাবান, সুযোগ পাবে। তবে এখন কিছু খেলোয়াড় তার চেয়ে বেশি দিচ্ছে। কিউবার সুযোগ আসবেই, সময়ের অপেক্ষা।’