প্রিমিয়ার লিগের দুই ‘বাজে’ দল ইউনাইটেড-টটেনহাম ইউরোপার ফাইনালে
ভুলে যাওয়ার মতো একটি মৌসুম পার করছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও টটেনহাম হটস্পার। প্রিমিয়ার লিগে দুই দলেরই অবস্থা যাচ্ছেতাই। পরিস্থিতি এমন যে দুই দলই প্রিমিয়ার লিগ ইতিহাসে নিজেদের সবচেয়ে বাজে মৌসুম শেষের অপেক্ষায়। বর্তমানে ইউনাইটেড আছে পয়েন্ট তালিকায় ১৫তম ও টটেনহাম ১৬তম অবস্থানে। আরেকটু এদিক–সেদিক হলে অবনমন অঞ্চলে নেমে যাওয়ার আশঙ্কাও ছিল।
এমন হতশ্রী মৌসুম কত দ্রুত শেষ হয়, সেদিকেই চোখ ছিল দুই দলের সমর্থকদের। কিন্তু ভুলে যাওয়ার মতো এই মৌসুমটাই শেষ দিকে এসে দুই দলের জন্য অন্য রকম মোড় নিয়েছে। ইউনাইটেড ও টটেনহাম যে এখন ইউরোপা লিগের ফাইনালে।
২১ মে রাতে বিলবাওয়ের মাঠ সান মামেসে ইউরোপের দ্বিতীয় সেরা ক্লাব প্রতিযোগিতা ইউরোপা লিগের ফাইনালে দেখা যাবে ‘ইংলিশ ডার্বি’। অর্থাৎ প্রিমিয়ার লিগে নিচের দিকে থাকা এই দুই দলের যেকোনো একটি ইউরোপা লিগের বিজয়ী দল হিসেবে আগামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগ খেলতে যাচ্ছে।
অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের বিপক্ষে সেমিফাইনাল প্রথম লেগ ৩–০ গোলে জিতে ইউরোপা লিগের ফাইনালে এক পা আগেই দিয়ে রেখেছিল ইউনাইটেড। গতকাল রাতে ফিরতি লেগে অবশ্য ইউনাইটেড আগে গোল হজম করে কিছুটা আতঙ্কেই ফেলেছিল ভক্ত–সমর্থকদের। যদিও শেষ পর্যন্ত তেমন কিছু হয়নি।
দ্বিতীয়ার্ধে দারুণভাবে লড়াইয়ে ফিরে আসে ওল্ড ট্রাফোর্ডের ক্লাবটি। প্রতিপক্ষকে কোনো সুযোগ না দিয়ে ৪–১ গোলে জিতে (দুই লেগ মিলিয়ে ৭–১ গোলের অগ্রগামিতা) নিশ্চিত করেছে ইউরোপার ফাইনাল। ইউনাইটেডের হয়ে জোড়া গোল করেন ম্যাসন মাউন্ট। একটি করে গোল করেন কাসেমিরো ও রাসমুস হয়লুন্দ।
ম্যাচটা কত কঠিন ছিল, সেটা জানিয়ে ইউনাইটেড কোচ রুবেন আমোরিম বলেছেন, ‘যদি আপনারা দুটি ম্যাচ দেখেন, বুঝবেন যে ফল যেমন দেখাচ্ছে ম্যাচ দুটি তার চেয়ে অনেক কঠিন ছিল। আমাদের অনেক দুর্বলতা ছিল। কিন্তু আমরা লড়াই করেছি এবং শেষ পর্যন্ত জিতেছি। আমার মনে হয় ফাইনালে যাওয়া আমাদের প্রাপ্য।’
ইউনাইটেডের মতো টটেনহামও সেমিফাইনালে প্রথম লেগে ৩–১ গোলের বড় জয়ে ফাইনালের পথে ছিল। গতকাল রাতে ফিরতি লেগে প্রতিপক্ষ বোডো/গ্লিমটকে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ দেয়নি তারা। নরওয়েজিয়ান ক্লাবটির বিপক্ষে তাদের মাঠে টটেনহাম জিতেছে ২–০ গোলে (দুই লেগ মিলিয়ে ৫–১ অগ্রগামিতা)। ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে টটেনহামের হয়ে গোল দুটি করেন দমিনিক সোলাঙ্কে ও পেদ্রো পোরো।
টটেনহাম সর্বশেষ ইউরোপা লিগ জিতেছে ১৯৮৩–৮৪ মৌসুমে, টুর্নামেন্টটি তখন উয়েফা কাপ নামে পরিচিত ছিল। এরপর আর কোনো ইউরোপিয়ান ট্রফি জেতা হয়নি দলটির। এমনকি দলটির সব মিলিয়ে সর্বশেষ ট্রফি জেতারও পর ১৭ বছর পেরিয়ে যাচ্ছে। সর্বশেষ ২০০৭–০৮ মৌসুমে লিগ কাপের শিরোপা জিতেছিল তারা। এখন ইউনাইটেডকে হারিয়ে অ্যাঞ্জ পোস্তেকোগলুর দল নতুন ইতিহাস লিখতে পারে কি না, সেটাই দেখার অপেক্ষা।