মাত্র কটা দিনের অপেক্ষা! এরপরই কাতারে শুরু হবে ফুটবল উৎসব। বিশ্বকাপ শিরোপার লড়াইয়ে ২০ নভেম্বর থেকে মাঠে নামবে ৩২টি দল। তবে বিশ্বকাপ আয়োজন নিয়ে উৎসবের অপেক্ষা যেমন আছে, তেমনি আছে অস্বস্তিও। এলজিবিটি–বিরোধিতা, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং অভিবাসী শ্রমিকদের সঙ্গে করা নিপীড়নমূলক আচরণসহ নানা বিষয় নিয়ে এখনো সমালোচনার মুখে আছে আয়োজক দেশ কাতার।
বিশ্বকাপের মাঠেও প্রতিবাদের প্রস্তুতি নিচ্ছে দলগুলো। তবে সম্প্রতি একটি লিখিত বিবৃতিতে ফিফার পক্ষ থেকে বিশ্বকাপে অংশ নিতে যাওয়া দেশগুলোকে বিতর্ক ভুলে ফুটবলে মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
কাতারে বিশ্বকাপ আয়োজনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর থেকেই মূলত শুরু হয় সমালোচনা। মানবাধিকার সংগঠনগুলো তো বটেই, খেলার মাঠেও হয়েছে নানা ধরনের প্রতিবাদ। বিশ্বকাপে অংশ নিতে যাওয়া দলগুলো আয়োজনকে সামনে রেখে বিভিন্ন ধরনের প্রতিবাদের পরিকল্পনা করছে।
ইউরোপের ১০টি দেশের অধিনায়কেরা ‘ওয়ান লাভ’ আর্মব্যান্ড পরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কাতারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে ডেনমার্ক দল পরবে ‘টোনড–ডাওন’ (লোগো, আইকন ঝাপসা করে দেওয়া) টি–শার্ট। অস্ট্রেলিয়ার স্কোয়াড একটি গান প্রকাশ করেছে, যেখানে কাতারকে এলজিবিটি–বিরোধী আইন বাতিলের আহ্বান জানানো হয়েছে।
প্যারিসসহ ফ্রান্সের অন্যান্য শহরে জনসমক্ষে ম্যাচ প্রদর্শন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এসব ঘটনা নিয়ে এখন কাতার তো বটেই অস্বস্তিতে আছে ফিফাও। তাই চিঠি দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেছে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর সই করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা জানি ফুটবল শূন্যে বাস করে না। পাশাপাশি আমরা এ নিয়েও সচেতন, সারা বিশ্বের রাজনৈতিক প্রকৃতির নানা ধরনের চ্যালেঞ্জ ও জটিলতা আছে। তবে দয়া করে বিদ্যমান আদর্শিক ও রাজনৈতিক যুদ্ধে ফুটবলকে টেনে আনবেন না।’
ফিফার অবস্থান পরিষ্কার করে বিবৃতিতে আরও যোগ করে বলা হয়, ‘দুনিয়াকে নৈতিক শিক্ষা দেওয়ার বদলে ফিফাতে আমরা সব মতামত ও বিশ্বাসকে শ্রদ্ধা করার চেষ্টা করি। কোনো নির্দিষ্ট একজন ব্যক্তি বা সংস্কৃতি অন্য আরেকজনের চেয়ে সেরা নয়—এই নীতি পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও বৈষম্যহীনতার ভিত্তি। আর এটি ফুটবলের প্রধান মূল্যবোধগুলোরও একটি। তাই দয়া করে সবাই এটা মনে রাখুন এবং ফুটবলকে সবকিছুর কেন্দ্রে থাকতে দিন।’
বিশ্বকাপে কাউকে বিশেষ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে না উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এখন আমাদের সামনে এমন অনন্য উপলক্ষ ও সুযোগ রয়েছে, যেখানে আমরা উৎস, ঐতিহ্য, ধর্ম, লিঙ্গ, পছন্দ কিংবা জাতীয়তা–নির্বিশেষে সবাইকে স্বাগত জানাতে পারব।’