ইংল্যান্ড-ইরান এই প্রথম
কাতারে এবার ফুটবলে মনোযোগ দেওয়ার সময় হয়েছে ইংলিশদের। হ্যারি কেইনদের বিশ্বকাপ যে শুরু হচ্ছে আজই। বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাতটায় আল রাইয়ানের খলিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে ইরানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করবে গ্যারেথ সাউথগেটের ইংল্যান্ড।
প্রতিপক্ষ ইরান বিশ্বকাপে নিয়মিত হলেও ইংল্যান্ডের জন্য অচেনা প্রতিপক্ষই। বিশ্বকাপ তো দূরের কথা, কখনো প্রীতি ম্যাচেও দেখা হয়নি দুই দলের। আর সেটি না হওয়ার পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে দুই দেশের অপ্রীতিকর রাজনৈতিক সম্পর্ক। চার দশকের বেশি সময় চলা সেই বৈরিতা ইরানের সাম্প্রতিক ঘটনার পর বেড়েছে আরও।
১৯৬৬ সালে ইংল্যান্ডের প্রথম ও সর্বশেষ বিশ্বকাপ জয়ের পর কেটে গেছে ৫৬ বছর। লম্বা সেই অপেক্ষার প্রহর ফুরাতে কাতারের যাওয়ার আগে তো বটেই, কাতারে পৌঁছেও আয়োজকদের সমালোচনা করতে ছাড়েনি ইংল্যান্ড। সর্বশেষ তো ফিফার নির্দিষ্ট করে দেওয়া অধিনায়কের বাহুবন্ধনী পরে খেলতেও অস্বীকৃতি জানিয়েছে তারা। সমকামী-বিদ্বেষ ও বিদেশি শ্রমিকদের দুর্দশা নিয়ে কাতারের সমালোচনায় মুখর দলটির অধিনায়কের ‘ওয়ান লাভ’ আর্মব্যান্ড পরে মাঠে নামার কথা আজ।
মাঠের বাইরের সব ঝামেলা চুকিয়ে ইংল্যান্ডের এবার মাঠে ভালো করার পালা। বি গ্রুপের তিন প্রতিপক্ষ ইরান, যুক্তরাষ্ট্র এবং ওয়েলস হলেও ফুরফুরে থাকার মতো অবস্থায় নেই ইংল্যান্ড। পা হড়কালেই যে বিপদ হতে পারে। আর সে রকম কিছু হয়ে গেলে কোচ সাউথগেটের চাকরি নিয়েই টানাটানি পড়ে যাবে। ছয় বছর আগে দায়িত্ব নেওয়ার পর ২০১৮ বিশ্বকাপে দলকে সেমিফাইনালে ও ২০২০ ইউরোতে ফাইনালে ওঠার কথা কেউই মনে রাখবে না।
সাউথগেটের শিষ্যদেরও জানা সেটি। তাঁদের একজন ডিফেন্ডার এরিক ডায়ার ইরান ম্যাচের আগে সেসব শঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে কোচের পাশেই রইলেন, ‘এগুলো ফালতু কথা, মানুষের মনোভাব খুব দ্রুত পাল্টায়। আমাদের মনে রাখা উচিত ইংল্যান্ড সাম্প্রতিক সময় কী করেছে, আমরা বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলেছি, ইউরোর ফাইনালে উঠেছি।’
খুব একটা স্বস্তিতে নেই প্রতিপক্ষ ইরানও। নারী অধিকার নিয়ে বিক্ষোভ-সহিংসতায় উত্তাল দেশের কথা মাথায় রেখেই মাঠে নামতে হচ্ছে দলটিকে। অধিনায়ক আলীরেজা জাহানবখস অবশ্য সবকিছু ভুলে খেলাতেই মনোযোগ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
তবে তাঁরা সেটি কতটা ভুলতে পারবেন কে জানে, দলটির সবচেয়ে বড় তারকা সরদার আজমুন তো কয়েক দিন আগেই ইনস্টাগ্রামে ইরানি সরকারের সমালোচনা করেছেন।
সব ভুলে পর্তুগিজ কোচ কার্লোস কুইরোজের দল ইংল্যান্ডকে চমকে দিতে পারলে সেটি এশীয় ফুটবলের জন্যই বড় ঘটনা হবে। দলে প্রতিভারও কমতি নেই। সরদার আজমুনের মতো আরও কয়েকজন খেলেন ইউরোপের বিভিন্ন লিগে।