আলফাজ কীভাবে বদলে দিলেন মোহামেডানকে

মোহামেডান কোচ আলফাজ আহমেদছবি: শামসুল হক

আলফাজ কীভাবে বদলে দিলেন মোহামেডানকে?

শ্বাসরুদ্ধকর এক লড়াইয়ে আবাহনীকে হারিয়ে ১৪ বছর পর ফেডারেশন কাপ জেতায় এ প্রশ্নটাই বেশি শোনা যাচ্ছে। কোচ হয়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে মোহামেডানকে আসলেই বদলে দিয়েছেন সাবেক এই তারকা ফুটবলার। মোহামেডান শুধু আবাহনীর বিপক্ষে ফাইনালটা জেতেইনি, দুর্দান্ত ফুটবল উপহার দিয়েছে।

অথচ গত মার্চে আলফাজ যখন মোহামেডানের প্রধান কোচের দায়িত্ব নেন, তখন দলটা ধুঁকছিল। প্রিমিয়ার লিগে ১০ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট তালিকায় মোহামেডানের অবস্থান ছিল ছয়-এ। জয় ছিল মাত্র তিনটি। সেই মোহামেডানই বসুন্ধরা কিংস ও আবাহনীকে হারিয়ে ফেডারেশন কাপ জিতল। তিন ম্যাচ হাতে রেখে লিগের পয়েন্ট তালিকায় তিন-এ উঠে এসেছে।

কোন কৌশলে মাঠের লড়াইয়ে ম্রিয়মাণ এক দলকে চ্যাম্পিয়ন বানালেন আলফাজ। মোহামেডানের কোচ নিজে অবশ্য মনে করেন, খুব বেশি কিছু নয়, আক্রমণাত্মক ফুটবল আর খেলোয়াড়দের পরিশ্রমই দলটাকে বদলে দিয়েছে। নিজে আক্রমণাত্মক ফুটবলার ছিলেন বলে কোচ হিসেবে দলকে আক্রমণাত্মক খেলাতে পছন্দ করেন। আর তাঁর এই কৌশলই শেষ পর্যন্ত মোহামেডানকে এনে দিয়েছে অনেক দিনের আরাধ্য এক সাফল্য।

খেলোয়াড় হিসেবে ফেডারেশন কাপ জেতা আলফাজ এবার কোচ হিসেবেও জিতলেন
ছবি: প্রথম আলো

প্রথম আলোকে আজ মুঠোফোনে আলফাজ বলেন, ‘আমি অনেক দিন ধরেই দলের সঙ্গে কাজ করছি। প্রধান কোচ হওয়ার আগে ছিলাম সহকারী কোচ। প্রতিটি খেলোয়াড়কে খুব করেই চিনি, জানি। আমি কোচ হয়ে শুধু কৌশলে কিছু অদলবদল এনেছি। খেলোয়াড়দের ফিটনেসে জোর দিয়েছি। তারা পরিশ্রম করে এই জায়গায় উন্নতি করেছে। আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলিয়েছি। এই তো!’

শুধু ফিটনেসের ওপর জোর আর আক্রমণাত্মক ফুটবল কৌশলই কি সব বদলে দিতে পারে?

আলফাজ আহমেদ
ছবি: প্রথম আলো

আলফাজ পুরো বিষয়টির ব্যাখ্যা দিয়েছেন, ‘আমাদের দলে সুলেমান দিয়াবাতের মতো একজন খেলোয়াড় আছে। সে গোটা দলকে একাই খেলাতে পারে। খুব ভালো প্লেমেকার, একই সঙ্গে গোলস্কোরার। ফিটনেস অসাধারণ। দিয়াবাতের সঙ্গে অন্যরা যেন তাল মিলিয়ে খেলতে পারে, সেটিই নিশ্চিত করেছিলাম আমি। সে জন্য প্রয়োজন ছিল খেলোয়াড়দের ফিটনেস আর স্ট্যামিনায় উন্নতি করা। আমি তাদের পরিশ্রম করিয়েছি। খেলোয়াড়েরা কষ্টটা মেনে নিয়েছে। তারা হাতেনাতে সেই পরিশ্রমের ফল পেয়েছে। কিছু দিন আগেও দলে আক্রমণাত্মক মনোভাবের ঘাটতি ছিল। সে জন্য আমরা দিয়াবাতেকে সেভাবে ব্যবহার করতে পারতাম না। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর আক্রমণাত্মক ফুটবলের ওপর জোর দিয়েছি।’

আরও পড়ুন

ফেডারেশন কাপ জিতেছেন। প্রিমিয়ার লিগে প্রথম দুই স্থানে থাকার আর কোনো সম্ভাবনা নেই। আলফাজের লক্ষ্য এখন ৩ নম্বর স্থানটি, ‘আমরা পরে অনেক এগিয়েছি। কিন্তু এখন তিন-এ আছি। কিন্তু ৩ নম্বর জায়গাটা এখনো নিশ্চিত নয়। হাতে তিনটি ম্যাচ আছে, এই তিন ম্যাচ জিততেই হবে। দেখা যাক কি হয়!’

খেলোয়াড় হিসেবে সাদাকালো জার্সিতে সাফল্য কম নেই আলফাজের। ১৯৯৫ সালে প্রথমবার মোহামেডানে এসেই জিতেছিলেন ডামফা কাপ ও ফেডারেশন কাপ। একাধিকবার জিতেছেন ঢাকা লিগ; জাতীয় লিগের শিরোপাও জিতেছেন। কোচ হিসেবে এবার পেলেন সাফল্য।

ফেডারেশন কাপ জয়ের কৃতিত্ব খেলোয়াড়দের দিয়েছেন কোচ আলফ
ছবি: প্রথম আলো

গতকালকের ফাইনালে দুর্দান্ত এই জয়ে সব কৃতিত্ব তিনি খেলোয়াড়দেরই দিতে চান, ‘আমার নির্দেশনা ওরা অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছে। অসাধারণ খেলেছে সবাই। খেলাটাও হয়েছে অসাধারণ। এমন ম্যাচে স্নায়ু ধরে রাখাটাই চ্যালেঞ্জের। খেলোয়াড়েরা নিজেদের কাজটা করেছে। সব কৃতিত্ব ওদের প্রাপ্য। দিয়াবাতে অসাধারণ। সে প্রমাণ করেছে, কত ভালো খেলোয়াড় সে।’

আরও পড়ুন