চেলসিকে হারিয়ে ‘লাইফ লাইন’ পেলেন আমোরিম
ইউনাইটেড ২: ১ চেলসি
রুবেন আমোরিমের চাকরি থাকবে কি না, এ নিয়ে আলোচনা চলছিল গত কিছুদিন ধরে। সেই আলোচনা একেবারে থেমে যাবে, এটা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে আজকের পর আমোরিম অন্তত একটা লাইফ লাইন পেলেন। প্রিমিয়ার লিগে যে আজ চেলসিকে ২-১ গোলে হারিয়ে দিয়েছে আমোরিমের ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।
ম্যাচের পাঁচ মিনিটের মাথায় লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন চেলসির গোলরক্ষক রবার্ট সানচেজ। এর একটু পরেই ইউনাইটেডের হয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে নিজের শততম গোলটা করেন ব্রুনো ফার্নান্দেজ। এটি আবার তাঁর ২০০তম প্রিমিয়ার লিগ ম্যাচও। কাসেমিরো ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ৩৭ মিনিটে। তবে প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে তিনিও ছিটকে যান মাঠ থেকে। শেষ দিকে ট্রেভো চালোবাহর গোল চেলসিকে কিছুটা আশা দেখায়। তবে আর কোনো বিপদ হতে দেয়নি ইউনাইটেড। এবারের লিগে পঞ্চম ম্যাচে এটা ইউনাইটেডের মাত্র দ্বিতীয় জয়।
আমোরিমের ওপর দিয়ে ইদানীং ঝড় বইছিল। কিন্তু তিনি তাঁর বিতর্কিত ৩-৪-৩ ফরমেশন থেকে সরে আসেননি। মজা করে বলেছিলেন, পোপ এসে বললেও তিনি তার কৌশল পরিবর্তন করবেন না।
তবে শনিবার রাতে তাঁর এই কৌশল কাজে লেগেছে। ইউনাইটেডের শুরুটা হয় দারুণ। বাঁ উইংব্যাক প্যাট্রিক ডরগু ক্রস করেন, ব্রায়ান এমবেউমোর হেড ঠেকান সানচেজ। কিন্তু পরের মুহূর্তেই গোলবার ছেড়ে বেরিয়ে এসে বেনজামিন সেসকোর ফ্লিক ক্লিয়ার করতে গিয়ে এমবেউমোকে ফাউল করেন সানচেজ। রেফারি সরাসরি লাল কার্ড দেখান চেলসি গোলরক্ষককে।
সানচেজের জায়গায় গোলবারে আসেন ফিলিপ ইয়রগেনসেন। কোচ এনজো মারেসকা রক্ষণ শক্ত করতে উইঙ্গার এস্তেভাও উইলিয়ান ও পেদ্রো নেতোকে তুলে নেন। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত উল্টো ফল দেয়। ইউনাইটেড যেন শিকারির মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে। ফার্নান্দেজের ফ্রি-কিক চেলসির দেয়ালে লেগে ফিরলে এমবেউমো ভলি মারেন, কিন্তু বল যায় ওপর দিয়ে। ১৪ মিনিটে গোলের দেখা পায় ইউনাইটেড, ডরগুর হেডে দারুণ ফিনিশিং করেন ফার্নান্দেজ।
এরপর চেলসির দুর্দশা যেন আরও বাড়ে। গ্রোইনের চোটের কারণে মাঠ ছাড়েন ইংলিশ ফরোয়ার্ড কোল পালমার। তাতে মাত্র ২১ মিনিটে ৩টি বদল করতে বাধ্য হয় মারেসকার দল।
৩৭ মিনিটে চেলসির ভুলে ইউনাইটেড দ্বিতীয় গোলটি পায়। রিস জেমসের ভুল ক্লিয়ারেন্স থেকে উড়ে আসা বল হ্যারি ম্যাগুয়ার হেড দিয়ে কাসেমিরোর কাছে পাঠান। ১১ মাস পর লিগে নিজের প্রথম গোলটি করতে কাসেমিরোকে শুধু কাছ থেকে বলটি জালে জড়াতে হয়। এনজো ফার্নান্দেজকে ফাউল করার জন্য আগেই হলুদ কার্ড দেখেছিলেন কাসেমিরো। এরপর প্রথমার্ধের শেষ মুহূর্তে আন্দ্রে সান্তোসকে অপ্রয়োজনীয়ভাবে টেনে ধরার জন্য দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন এই ব্রাজিল তারকা।
দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য ইউনাইটেড ছন্দ খুঁজে পেতে ব্যর্থ হয়। ৮০ মিনিটে চালোবাহ জেমসের ক্রস থেকে আসা বল ১২ গজ দূর থেকে বাইয়িন্দিরের পাশ দিয়ে জালে জড়িয়ে ব্যবধান কমান। তবে ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে।
শেষ বাঁশি বাজতেই স্বস্তির হাসি ঝরে পড়ে আমোরিমের মুখে। অন্তত কিছুদিনের জন্য হলেও চাকরি হারানোর আতঙ্কটা দূর হলো তাঁর।