নেপাল যাননি, বিমানবন্দরেও যাবেন না সালাউদ্দিন

বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনফাইল ছবি

বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন আগামীকাল হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরে যাবেন না। সাফের সভাপতি হিসেবেও তিনি ট্রফি দিতে যাননি নেপালে।

অথচ সালাউদ্দিন অনেক দিন থেকেই বলে আসছিলেন, সাফ সভাপতি হিসেবে তিনি বাংলাদেশের অধিনায়কের হাতে সাফ–শ্রেষ্ঠত্বের ট্রফি তুলে দিতে চান। ছেলেরা সেই সুযোগ তৈরি করতে পারেননি। তবে এবার মেয়েরা পেরেছেন। কিন্তু বাফুফে সভাপতি সেই সুযোগ নেননি।

কেন তিনি নেপাল যাননি বা আগামীকাল বিমানবন্দরেও যাবেন না? কারণটা আজ তিনি নিজেই জানিয়েছেন বাফুফে ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে। বলেছেন, ‘আমি বিমানবন্দরে গেলে মেয়েদের ওপর থেকে ফোকাসটা ভাগ হয়ে যেতে পারে। আমি চাই, মেয়েরাই পুরোপুরি ফোকাসে থাকুক। মেয়েরা কাপ নিয়ে আসছে। আমি গেলে আপনারা (সাংবাদিকেরা) আমাকে প্রশ্ন করবেন। তাতে আলোটা ভাগ হয়ে যাবে। আমি চাই, পাদপ্রদীপের আলো যেন ওদের ওপর থাকে। আপনারা ফোকাস করুন ওদের। যাতে দু-চার বছরে আরও বড় কিছু জিততে পারি। আমি বাফুফে ভবনে ওদের বরণ করব।’

আরও পড়ুন
প্রথমবারের মতো সাফ জয়ের আনন্দ মেয়েদের। হিরণ্ময় স্মৃতি হয়ে থাকবে এই সাফল্য
ছবি: বাফুফে

সাবিনারা চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় তাঁর নিজের কাছে কেমন লেগেছে, সেটাও জানিয়েছেন বাফুফে সভাপতি, ‘আমার মনে হয়েছিল, আমি যদি বড়লোক হতাম, তাহলে নিজে প্লেন চালিয়ে ওখানে (কাঠমান্ডু) নেমে যেতাম। কাল আমার অনুভূতি এ রকম ছিল।’
উৎফুল্ল কাজী সালাউদ্দিন বলেন, ‌‘আমি নেপাল যাওয়ার জন্য তিনবার টিকিট করে তিনবার বাতিল করেছি। সাফের সভাপতি হিসেবে কাপ দিতে পারতাম আমি। তবে সাফ সভাপতি হিসেবে কাপ দেওয়ার চেয়ে আমি ভেবেছি, মেয়েরা জিতে আসুক। ভাবলাম, আমি গেলে মেয়েরা চাপে পড়বে। আমি গেলে ভালো হতে পারে আবার খারাপও হতে পারে। সে জন্য আমি বাফুফেতে বসে খেলা দেখেছি।’

মেয়েদের ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানিয়ে সালাউদ্দিন ছিলেন উচ্ছ্বসিত। বাফুফে সভাপতি হিসেবে তাঁর ১৪ বছরের দীর্ঘ সময়ে ছেলেদের জাতীয় দল কোনো ট্রফি জিততে পারেনি। ট্রফি জেতা দূরে থাক, ছেলেরা সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালেই খেলতে পারছেন না ২০০৬ সালের পর থেকে।

আরও পড়ুন
দীর্ঘদিনের সাধনার পর ধরা দেওয়া সাফল্য। উচ্ছ্বাসটা বাঁধভাঙা হওয়াই স্বাভাবিক
ছবি: বাফুফে

২০১০ সালে অনূর্ধ্ব-২৩ দল জিতেছে দক্ষিণ এশীয় গেমসের সোনা। এবার সাফের শিরোপা আনলেন মেয়েরা। সেই প্রসঙ্গ টেনে সালাউদ্দিনের কথা, ‘মেয়েরা সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। সবার সমর্থনেই এটা সম্ভব হয়েছে। ওরা দাপটের সঙ্গে খেলেই চ্যাম্পিয়ন, কোনো ফাঁকতালে পাওয়া নয়। ভালোভাবে জিতেই চ্যাম্পিয়ন। ফাইনালে মাঠ ভালো হলে আরও ভালো খেলত।’

তবে এত দ্রুত মেয়েরা দক্ষিণ এশিয়ার সেরা হবে, এতটা ভাবতে পারেননি কাজী সালাউদ্দিন, ‘আমার ধারণা ছিল, এই দলটা চ্যাম্পিয়ন হবে ২০২৪ সালে। তখন এই খেলোয়াড়দের বয়স ২২-২৪ হবে। কিন্তু তারা দুই বছর আগেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এটা দারুণ ব্যাপার।’

আরও পড়ুন
মেয়েদের উল্লাসের এই ছবি অনেকদিন গাঁথা থাকবে ফুটবলপ্রেমীদের মনে
ছবি: বাফুফে

মেয়েরা সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় বাফুফে কী ধরনের সুযোগ–সুবিধা দেবে? এমন প্রশ্নে সরাসরি কোনো উত্তর দেননি বাফুফে সভাপতি, ‘আমরা এখন ওদের থাকা-খাওয়া, বেতন, চিকিৎসা–সুবিধা দিই। ওরা ক্লাব থেকে টাকা পায়। এই মেয়েরা আমাদের খেলোয়াড়, ক্লাব ওদের নিলে আমরা কোনো টাকা নিই না। ওরা প্রথম যখন আসে, তখন ওদের পরিবারকে আমরা একটি হোটেলে ডাকি। তাদের পরিববারের তখন আয় ছিল মাসে ছয়-সাত হাজার হাজার। এখন ওদের বাসায় দু-তিনটা টিভি আছে। কালকে যে সাফল্য ওরা পেয়েছে, তাতে তো আমি পারলে একেকজনকে দুই কোটি টাকা দিতাম।’

আরও পড়ুন