ভারত থেকে বিনিয়োগ তুলে নিল ম্যানচেস্টার সিটির মালিকপক্ষ, কারণ কী

মুম্বাই সিটির পুরো মালিকানা আবার ফিরে পেয়েছেন বলিউড অভিনেতা রণবীর কাপুরইনস্টাগ্রাম

গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল কদিন ধরেই। শেষ পর্যন্ত সেই গুঞ্জনই সত্যি হলো। ম্যানচেস্টার সিটির আকাশি-নীল রঙের ছোঁয়া মুছে যাচ্ছে মুম্বাইয়ের সমুদ্রতট থেকে। ভারতের ঘরোয়া ফুটবলে যে বড় স্বপ্ন নিয়ে পা রেখেছিল ‘সিটি ফুটবল গ্রুপ’ (সিএফজি), মাত্র পাঁচ বছরের মাথায় সেই স্বপ্ন জলাঞ্জলি দিতে হয়েছে তাদের।

ইন্ডিয়ান সুপার লিগের (আইএসএল) ভবিষ্যৎ নিয়ে তৈরি হওয়া অনিশ্চয়তার কারণে মুম্বাই সিটি এফসি থেকে নিজেদের সব বিনিয়োগ তুলে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ম্যানচেস্টার সিটির মালিক প্রতিষ্ঠান সিএফজি।

২০১৯ সালের নভেম্বরে বড় স্বপ্ন নিয়েই মুম্বাই সিটির ৬৫ শতাংশ মালিকানা কিনে নিয়েছিল সিএফজি। তখন মনে করা হয়েছিল, বিশ্ব ফুটবলের এই জায়ান্টদের আগমনে ভারতীয় ফুটবলের চেহারাটাই বদলে যাবে। কিন্তু পাঁচ বছর পর এসে দৃশ্যপট পাল্টে গেছে। সিএফজি তাদের পুরো শেয়ার ছেড়ে দিয়েছে ক্লাবের পুরোনো মালিক বলিউড অভিনেতা রণবীর কাপুর এবং বিমল পারেখের কাছে। ফলে মুম্বাই সিটি এখন আবারও পুরোপুরি ভারতীয় মালিকানাধীন ক্লাব।

সিটি গ্রুপের মালিকানায় পাঁচ বছরে মুম্বাই দুবার আইএসএল লিগ শিল্ড জিতেছে, দুবার ঘরে তুলেছে আইএসএল কাপ
সিটি গ্রুপ

সিএফজির ছায়াতলে মুম্বাই সিটির দাপট ছিল, মাঠের লড়াইয়েও ছিল দুর্দান্ত। এই পাঁচ বছরে তারা দুবার আইএসএল লিগ শিল্ড জিতেছে, দুবার ঘরে তুলেছে আইএসএল কাপ। কিন্তু মাঠের সেই সাফল্য চাপা পড়ে গেছে মাঠের বাইরের প্রশাসনিক গ্যাঁড়াকলে।

আরও পড়ুন

কেন এই বিদায়? কারণ হিসেবে সিএফজি সরাসরি আঙুল তুলেছে আইএসএলের অস্থিতিশীলতার দিকে। তাদের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ব্যবসায়িক পর্যালোচনার পর তারা দেখেছে আইএসএলের ভবিষ্যৎ অত্যন্ত ঘোলাটে। পরের মৌসুম কবে শুরু হবে, সেটা কেউ জানে না। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় বিশ্বাসী এই বৈশ্বিক ফুটবল গ্রুপ এমন এক লিগে আর টাকা ঢালতে রাজি নয়।

সিএফজি তাদের পুরো শেয়ার ছেড়ে দিয়েছে ক্লাবের পুরোনো মালিক বলিউড অভিনেতা রণবীর কাপুরের কাছে
মুম্বাই সিটিএফসি

আইএসএল এখন এমন এক গোলকধাঁধায় আটকে আছে, যেখান থেকে বের হওয়ার পথ খুঁজে পাচ্ছে না খোদ সর্ব ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনও (এআইএফএফ)। ২০২৫-২৬ মৌসুম গত সেপ্টেম্বরে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ফেডারেশন ও বাণিজ্যিক অংশীদার এফএসডিএলের দ্বন্দ্বে তা থমকে আছে। সুপ্রিম কোর্টের অনুমতি নিয়ে নতুন টেন্ডার ডাকা হলেও কোনো কোম্পানিই এই লিগ চালানোর আগ্রহ দেখায়নি।

ক্লাবগুলো নিজেরা লিগ চালানোর প্রস্তাব দিয়েছিল, কিন্তু এআইএফএফ সভাপতি কল্যাণ চৌবের কমিটি সেই প্রস্তাবও নাকচ করে দিয়েছে। সব মিলিয়ে আইএসএল এখন ‘অচলাবস্থায়’। ফুটবলার আর বিনিয়োগকারীরা সবাই এখন যেন অন্ধকারের যাত্রী।

আরও পড়ুন