মেসির রেকর্ড, ছয় গোলে পুয়ের্তো রিকোকে নিয়ে ‘ছেলেখেলা’ আর্জেন্টিনার
আর্জেন্টিনা ৬-০ পুয়ের্তো রিকো
ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে একটি দল তৃতীয়, আরেকটি ১৫৫তম। প্রীতি ম্যাচে এ দুটি দল মুখোমুখি হলেও স্কোরলাইন প্রীতিময় না থাকার সম্ভাবনাই বেশি। যেমন ধরুন মায়ামির চেজ স্টেডিয়ামে আজ পুয়ের্তো রিকোর বিপক্ষে আর্জেন্টিনার প্রীতি ম্যাচটি। নামে প্রীতি ম্যাচ হলেও স্কোরলাইনে তার লেশমাত্র নেই। ৬-০!
পুয়ের্তো রিকোকে আর্জেন্টিনা গোল করতে দেয়নি। অথচ নিজেরা পাঁচ গোল করেছে, অন্যটি আত্মঘাতী। দলে ফিরে দুই গোলে লিওনেল মেসির অবদান। দুটি করে গোল করেন লাওতারো মার্তিনেজ ও অ্যালেক্সিস ম্যাক-অ্যালিস্টার। একটি করে গোল গঞ্জালো মন্তিয়েল ও পুয়ের্তো রিকোর। মানে ৬৪ মিনিটে পুয়ের্তো রিকোর স্টিভেন এচেভেরিয়া আত্মঘাতী গোল করেন।
ফলটা এমন হতে পারে ভেবে যাঁরা বাংলাদেশ সময় ভোরে ম্যাচটি দেখতে টিভি সেটের সামনে বসেননি, তাঁরা অবশ্য একটি রেকর্ডের সাক্ষী হতে পারলেন না। ২২ মিনিটে বাতাসে ভাসানো নিখুঁত পাসে গঞ্জালো মন্তিয়েলকে দিয়ে গোল করান মেসি। এর মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলে সর্বোচ্চ গোল বানানোয় শীর্ষে থাকা নেইমারকে ধরে ফেলেন (৫৯)। ব্রাজিলিয়ানকে মেসি টপকে যান নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার ৬ মিনিট আগে। লাওতারোকে ব্যাক পাস দিয়ে গোল করান। আন্তর্জাতিক ফুটবলে সর্বোচ্চ গোল বানানোর রেকর্ড (৬০) এখন মেসির। ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে সর্বশেষ প্রীতি ম্যাচে বিশ্রাম থেকে ফিরেই রেকর্ড গড়লেন কিংবদন্তি।
একপেশে এই ম্যাচে আর্জেন্টিনার গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্তিনেজকে অবশ্য মাঝেমধ্যে গা গরম করতে হয়েছে। তিনটি সেভ করেন। প্রথমার্ধে পুয়ের্তো রিকো উইফ্রেদো রিভোর দূরপাল্লার একটি শট ঠেকান দারুণভাবে। এর বাইরে প্রায় পুরো সময়ই নিজেদের অর্ধের ওপাশে বল নিয়ে খেলেছে আর্জেন্টিনা। ১৩ মিনিটে মেসির শট ক্রসবারে লাগলে ফিরতি বলে নিকো গঞ্জালেসের শট ম্যাক-অ্যালিস্টারের পায়ে লেগে গোল হয়। তখন কে জানত, পুয়ের্তো রিকোর জন্য গোলের মালা গাঁথছে আর্জেন্টিনা!
পুয়ের্তো রিকোর গোলকিপার সেবাস্তিয়ান কাটলের ছয়টি সেভ না করলে সেই মালা আরও বড় হতো। ২৫টি শট নিয়েছে আর্জেন্টিনা। পোস্টে রাখতে পেরেছে ১১টি শট। এসবের পাশাপাশি স্কালোনির দলের ৬৮.৬ শতাংশ সময় বল দখলে রাখা বলে দেয় প্রীতি ম্যাচের নামে পুয়ের্তো রিকোকে নিয়ে আসলে ‘ছেলেখেলা’ করেছে আর্জেন্টিনা। বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস জানিয়েছে, কয়েকজন কলেজ ফুটবলারও আছেন পুয়ের্তো রিকোর দলে।
কিন্তু আর্জেন্টিনার জন্য ম্যাচটি ২০২৬ বিশ্বকাপের প্রস্তুতির। খেলোয়াড়েরা তাই খুঁত রাখতে চাননি। গোলের সুযোগ পেলে গোল করেছেন। অভিষিক্ত ফ্লাকো লোপেজের পাস থেকে ৩৬ মিনিটে তাই নিজের দ্বিতীয় গোলটি তুলে নেন ম্যাক অ্যালিস্টার। বিরতির পর দুই গোল করেছে আর্জেন্টিনা। অন্যটি আত্মঘাতী।
৭৯ ও ৮৪ মিনিটে গোল দুটি লাওতারোর। শেষ গোলটি মেসি ও লাওতারোর মধ্যে দারুণ বোঝাপড়ার ফসল। বক্সে দৌড়ের ওপর লাওতারোকে ব্যাক পাস দেন মেসি।
আর্জেন্টিনার জার্সিতে মোট চার খেলোয়াড়ের অভিষেক হয় এই ম্যাচে। ফ্লাকো লোপেজ, অ্যানেবাল মোরেনো ও লাওতারো রিভেরোর পাশাপাশি গোলকিপার ফাকুন্দো ক্যাম্বেসেসকেও মাঠে নামান স্কালোনি। ৭৬ মিনিটে মার্তিনেজকে তুলে ফাকুন্দোকে নামান আর্জেন্টিনা কোচ। বিরতির পর বদলি হিসেবে নামেন মোরেনো ও রিভেরো।