বিওএর প্রস্তাব ফিরিয়ে দিলেন দাবাড়ু জিয়ার স্ত্রী
প্রয়াত দাবাড়ু গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমানের স্ত্রী তাসমিন সুলতানার জন্য বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (বিওএ) চাকরির প্রস্তাব দিয়েছিল। তবে তিনি সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেননি।
এ প্রসঙ্গে তাসমিন আজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিওএর কাছে আমি আর্থিক সহায়তার জন্য আবেদন করেছিলাম। তারা আমাকে চাকরির প্রস্তাব দিয়েছে, যার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। কিন্তু আমার ছেলে তাহসিন বাবার পথ ধরে দাবা খেলছে। দেশ-বিদেশে সব সময় তার পাশে থাকতে হয়। চাকরি করলে সেভাবে ছেলের পাশে থাকতে পারব না। তাই এই মুহূর্তে চাকরি করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।’
জিয়া বেঁচে থাকতে সব সময়ই তাঁর সঙ্গে দেশ-বিদেশে সঙ্গী হতেন তাসমিন। ছেলে হওয়ার পর তিনজন একসঙ্গে যেতেন। ছেলে ১৯ বছর হলেও ওর এখনো মায়ের প্রয়োজন। তাসমিন বলেন, ‘বিদেশে গেলে ছেলে খেতে পারে না, আমার রান্না ছাড়া তার চলে না। তাই অনেক সময় প্রেশার কুকারও সঙ্গে নিয়ে যেতে হয়।’
তাসমিন সুলতানা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর। ২০০২ সালে ২২তম বিসিএসে উত্তীর্ণ হলেও স্বামীর দাবাজীবনে সার্বক্ষণিক সঙ্গ দিতে চাকরিতে যোগ দেননি। বর্তমানে বয়স ৪৫, আর চাকরিতে যোগদান না করার আরেকটি কারণও এই বয়স।
বিওএ এরই মধ্যে তাসমিনকে আর্থিক সহায়তা হিসেবে ১০ লাখ টাকা দিয়েছে। তবে চাকরির প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়ার পেছনে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক দায়বদ্ধতার বিষয়টিই প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন তাসমিন। তিনি বলেন, ‘চাকরি করলে সব সময় ছুটি পাব না। সেটা চিন্তা করেই বিওএর প্রস্তাবটা আমি গ্রহণ করিনি। তারা আমাকে একটা ব্যাংকে যোগ দেওয়ার কথা বলেছিল।’
জিয়ার একমাত্র সন্তান তাহসিন তাজওয়ার বাবার স্বপ্নপূরণে দাবার পথেই এগোচ্ছেন। গত এপ্রিলে হাঙ্গেরিতে তাহসিন পূরণ করেন আন্তর্জাতিক নর্মের প্রয়োজনীয় শর্ত। কিন্তু রেটিং ২৪০০ না হওয়ায় আনুষ্ঠানিক আইএম খেতাব পাননি এখনো।
২০২৪ সালের ৫ জুলাই জাতীয় দাবায় খেলতে খেলতে মাত্র ৫০ বছর বয়সে মারা যান জিয়াউর রহমান। ম্যাচ বাকি ছিল মাত্র এক রাউন্ড। বছর পেরিয়ে সেই জাতীয় দাবা আজ আবার শুরু হয়েছে ঢাকায়। তবে ঢাকার পল্টনে দাবা ফেডারেশন ক্রীড়াকক্ষে নয়, এবারের জাতীয় দাবা হচ্ছে শেওড়াপাড়ার ইয়ুথ টাওয়ার অডিটরিয়ামে।