মায়ের পেটের বাইরে দুই সপ্তাহ
প্রথমবারের মতো মায়ের গর্ভের বাইরে মানব ভ্রূণের বিকাশ প্রায় দুই সপ্তাহ পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম হয়েছেন গবেষকেরা। মানুষের জীবনের সবচেয়ে রহস্যময় এই অধ্যায়টি সম্পর্কে অনেক অজানা প্রশ্নের জবাব মিলবে এতে।
এই গবেষণা-বিষয়ক নিবন্ধ গতকাল বুধবার ‘নেচার’ ও ‘নেচার সেল বায়োলজি’ সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়।
এর আগে গবেষকেরা গবেষণাগারের বিশেষ পাত্রে ভ্রূণের বিকাশের বিষয়টি সর্বোচ্চ এক সপ্তাহ পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করতে পেরেছেন। পরে তা টিকিয়ে রাখতে মায়ের গর্ভে প্রতিস্থাপন করে বড় হওয়ার সুযোগ করে দিতে হতো। তবে এবারে ‘কালচার’ করে ১৩ দিন পর্যন্ত ভ্রূণের বেড়ে ওঠা ও সংগঠিত হওয়ার প্রক্রিয়াটি পর্যবেক্ষণ করার সুযোগ পেয়েছেন গবেষকেরা। এর আগে এ পদ্ধতিতে ইঁদুর নিয়ে গবেষণা চালানো হয়েছিল।
ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ম্যাগডালেনা জারনিকা-গাৎজ বলেন, ‘এটি মানব শরীর বিকাশের হেঁয়ালিপূর্ণও রহস্যময় ধাপ। এই সময়েই মানুষের শরীরের মূল কাঠামো নির্ধারিত হয়।’
গবেষক মার্শা শাহবাজি বলেন, ‘ভ্রূণের বিকাশ অত্যন্ত জটিল একটি প্রক্রিয়া। আমাদের গৃহীত পদ্ধতিতে ভ্রূণের সম্পূর্ণ কার্যপদ্ধতি তৈরি করা সম্ভব হয়নি। ভ্রূণের নিজে থেকেই সংগঠিত হওয়ার সক্ষমতার বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি। এটি অজানা ছিল।
গবেষকেরা বলছেন, এ গবেষণার ফলে ইন-ভিট্রো ফার্টিলাইজেশনের (আইভিএফ) চিকিৎসার ক্ষেত্রে উন্নতি হবে।
গবেষকেদের এ গবেষণা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। আন্তর্জাতিক একটি আইন আছে, যাতে বিজ্ঞানীরা ১৪ দিনের বেশি বয়সী ভ্রূণ উন্নয়ন করতে পারবেন না। মাতৃগর্ভের বাইরে ১৪ দিনের বেশি বয়সী ভ্রূণ বিকাশ করা যাবে কি না, এ বিষয়টি বিবেচনা করারও দাবি তুলছেন বিশেষজ্ঞরা।