অবশেষে জানা গেল শনির দিন কত বড়

শনি গ্রহে দিনের প্রকৃত দৈর্ঘ্য বের করা কঠিন ছিল।
শনি গ্রহে দিনের প্রকৃত দৈর্ঘ্য বের করা কঠিন ছিল।

শনিতে দিনের দৈর্ঘ্য কত? আমাদের সৌরজগতের এ গ্রহটির দিনের দৈর্ঘ্য নিয়ে এত দিন ধন্দ ছিলেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। অবশেষে এ রহস্যের সমাধান হয়েছে। তথ্য বিশ্লেষক করে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসার গবেষকেরা জানতে পেরেছেন, গ্রহটিতে ১০ ঘণ্টা ৩৩ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডে এক দিন হয়। চূড়ান্ত সময় নির্ধারণের জন্য নাসার ক্যাসিনি মহাকাশযানের পাঠানো তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন গবেষকেরা।

গবেষকেরা বলেন, শনি গ্রহে দিনের প্রকৃত দৈর্ঘ্য বের করা কঠিন ছিল কারণ গ্যাসীয় গ্রহটিতে কোনো কঠিন পৃষ্ঠ নেই। এ ছাড়া এমন কোনো চিহ্ন নেই যা দেখে গ্রহটির প্রদক্ষিণ হওয়ার বিষয়টি বোঝা যাবে। এর বাইরে গ্রহটির বিশাল চৌম্বক ক্ষেত্র এর ঘূর্ণনের হার দেখার ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করে রেখেছিল।

নাসার ক্যাসিনি নভোযানের তথ্য বিশ্লেষণ করে গবেষকেরা দেখেছেন গ্রহটির দিনের প্রকৃত দৈর্ঘ্য আগে হিসাব করা দিনের দৈর্ঘ্যের চেয়ে কম। এর আগে ১৯৮১ সালে ভয়েজারের পাঠানো চৌম্বক ক্ষেত্রের তথ্য বিশ্লেষণ করে গ্রহটির দিনের দৈর্ঘ্যে নির্ধারণ করা হয়েছিল ১০ ঘণ্টা ৩৯ মিনিট ২২ সেকেন্ড।

নাসার পক্ষ থেকে ১৯৯৭ সালে ক্যাসিনি নভোযানটি পাঠানো হয়। ২০১৭ সালে ওই গ্রহের আবহাওয়ামন্ডলে ধ্বংস হয় এটি। তবে ধ্বংস হওয়ার আগে শনির বলয় সংক্রান্ত ব্যাপক তথ্য সংগ্রহ করে ওই নভোযানটি। এ ছাড়া ২০০৪ সাল থেকে শনিকে পরিভ্রমণের সময় ওই নভোযানটি এর বরফাচ্ছন্ন ও পাথুরে বলয়ের উচ্চ রেজুলেশনের ছবি তুলে পৃথিবীতে পাঠায়। ওই তথ্য বিশ্লেষণ করে গবেষক ক্রিস্টোফার মানকোভিচ। তিনি ওই বলয়ের তরঙ্গের ধরন নিয়ে গবেষণা করেন।

মানকোভিচ দেখেন, শনির বলয় অনেকটাই সিসমোমিটারের মতো কাজ করে। গ্রহে যে কম্পন সৃষ্টি হয় তাতে বলয়ে সাড়া জাগায়। এ প্রক্রিয়ায় সৃষ্ট তরঙ্গ ওই বলয়ে পর্যবেক্ষণ করা যায়। এর অর্থ, গবেষকেরা ওই গ্রহের পৃষ্ঠকে পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম। এর মাধ্যমে ওই গ্রহের ঘূর্ণনের বিষয়টি বোঝা সম্ভব। এর মাধ্যমে শনির দিনের প্রকৃত তথ্য হিসাব করা সম্ভব হয়েছে।

ক্যাসিনি প্রকল্পের বিজ্ঞানী লিন্ডা স্পাইলকার বলেন, গবেষকেরা বলয়ের তরঙ্গ বিশ্লেষণ করে শনির দিনের দৈর্ঘ্য বের করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে এ ধাঁধার উত্তর খোঁজা হচ্ছিল। এটা নিখুঁত ফল। শনির বলয়ে এর উত্তর প্রশ্নের জবাব লুকানো ছিল। তথ্যসূত্র: ডিজিটাল ট্রেন্ডস।