সামুদ্রিক প্রাণীদের অদ্ভুত আচরণ কি কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের আগাম সতর্কতা
সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বের নানা প্রান্তে থাকা বেশ কিছু সামুদ্রিক প্রাণীর অদ্ভুত আচরণ শনাক্ত করা হয়েছে। জাপানে ওরফিশের ভেসে আসা, বিভিন্ন এলাকায় তিমির আটকে পড়া, সমুদ্রতীরের কাছে অ্যাংলারফিশের উপস্থিতির মতো অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা গেছে। আর তাই এসব ঘটনা সম্ভাব্য কোনো পরিবেশগত পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে কি না, তা নিয়ে গবেষণা শুরু করেছেন বিজ্ঞানীরা। সামুদ্রিক প্রাণীদের এসব আচরণের সঙ্গে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাব রয়েছে বলে ধারণা করা হলেও সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্র ও সম্ভাব্য দুর্যোগের সঙ্গে এসব প্রাকৃতিক ঘটনার সংযোগ আছে কি না, তা নিয়ে গবেষণা করছেন বিজ্ঞানীরা।
ওরফিশ, তিমি ও অ্যাংলারফিশের মতো প্রাণীরা গভীর সমুদ্রের বাস করে। এসব প্রাণী যখন তীরের কাছে চলে আসছে তখন জলবায়ু পরিবর্তন ও উষ্ণায়নের প্রভাব পড়ছে বলে মনে করা হচ্ছে। এসব প্রাণীর আবাসে ব্যাপক পরিবেশগত পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। রহস্যময় ওরফিশের হঠাৎ তীরের কাছে আসার ঘটনা সবচেয়ে বেশি চমক তৈরি করেছে। এই মাছকে পৌরাণিক কাহিনিতে কেয়ামতে মাছ বা ডুমসডে ফিশ নাম দেওয়া হয়েছে। গভীর সমুদ্রের এই মাছ খুব কমই সৈকতের কাছাকাছি দেখা যায়। এসব মাছের সৈকতের কাছে আসাকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের পূর্বাভাস হিসেবে মনে করেন অনেকেই। যদিও এমন আচরণের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যার অভাব রয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকায় তিমির উপস্থিতি ও অগভীর জলে অ্যাংলারফিশের উপস্থিতি অনেক প্রশ্ন তুলছে। এসব আচরণ কি কাকতালীয় নাকি কোনো পরিবেশগত পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
বিভিন্ন এলাকায় তিমি আটকা পড়ার ঘটনা যদিও অনেক পুরোনো বিষয় তারপরও সাম্প্রতিক সময়ে এ ধরনের একাধিক ঘটনা ঘটেছে। সম্প্রতি তাসমানিয়ান সমুদ্রসৈকতে ১৫০টিরও বেশি ফলস কিলার তিমি আটকা পড়েছিল, পরে বেশির ভাগই তিমিই মারা যায়। গভীর সমুদ্রে বড় বড় বাণিজ্যিক জাহাজের উপস্থিতি তিমির আবাস ও চলার পথে বাধা তৈরি করছে বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন তীরবর্তী এলাকায় অ্যাংলারফিশের হঠাৎ উপস্থিতি বেড়ে গেছে। আলো উৎপন্নকারী গভীর সমুদ্রের এই প্রাণীটিকে সম্প্রতি সমুদ্রতটের দিকে বেশি করে আসতে দেখা গেছে। গভীর সমুদ্রের পরিবেশ ও তাপমাত্রা পরিবর্তনের কারণে এসব মাছ তটের দিকে চলে আসছে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া