গণমাধ্যমে নারীবিষয়ক সংবাদ কম, যেটুকু তাও নেতিবাচক

সংবাদপত্রে প্রতিদিন যেসব সংবাদ প্রকাশিত হয়, তার মধ্যে নারীবিষয়ক সংবাদ মাত্র ৭ থেকে ৯ শতাংশ। ছবি ছাপানোর হার অবশ্য বেশি, দ্বিগুণ। নারীবিষয়ক সংবাদ সাধারণত অপরাধ, নির্যাতন, মামলা-মোকদ্দমা ও সিনেমাজগৎবিষয়ক।

‘বাংলাদেশের গণমাধ্যমে লৈঙ্গিক (নারী) প্রতিনিধিত্ব ও তারুণ্যে এর প্রভাব’ শীর্ষক এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। জরিপটি ২০১৮ সালে যৌথভাবে করেছে বেসরকারি সংস্থা প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ (ইউল্যাব)। 

রাজধানীর ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সের ৮০৪ জন ছেলেমেয়ের মধ্যে জরিপটি চালানো হয়। এই জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৫৫ শতাংশ তথ্যের জন্য পত্রিকার খবরের ওপর বিশ্বাস রাখে। ৪৪ শতাংশ ইন্টারনেট ও মুঠোফোন এবং বাকিরা টেলিভিশনের ওপর।

জরিপটি আরও বলছে, দিনভেদে নারীবিষয়ক ছবি ছাপা হয় মোট ছবির ১৪-১৮ শতাংশ। ম্যাগাজিনে আর্টস, সিনেমা, লাইফস্টাইল ও অপরাধবিষয়ক সংবাদ তৈরি হয়। তবে সংবাদ কিংবা ছবিতে নারীর নেতৃত্ব, সফলতা, প্রজননস্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ প্রয়োজনীয় বিষয়ে তেমন উঠে আসে না।

বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আরা হক প্রথম আলোকে বলেন, গণমাধ্যমে নারীবিষয়ক ইতিবাচক সংবাদ কম আসে, এই মানসিকতার পরিবর্তন দরকার। নারীদের সাফল্য তুলে ধরতে হবে, তেমনি চ্যালেঞ্জও,       যাতে সমাধান আসে। বিষয়টি গণমাধ্যমের নীতিনির্ধারকদের গুরুত্বসহকারে ভাবা দরকার।

এই জরিপের তিন-চতুর্থাংশ মনে করে, মিডিয়ায় নারীদের কেবল মা এবং স্ত্রীর প্রতিনিধি হিসেবে দেখানো হয়। এমনকি কর্মজীবী নারীর চরিত্রায়ণেও তাঁকে বেশির ভাগ সময় ঘরের কাজকর্ম করতে দেখা যায়। অপরদিকে পুরুষদের গণমাধ্যমে বাবা, স্বামী ও সন্তান হিসেবে দেখা যায়। যাঁরা বেশির ভাগ সময় শীর্ষ বা মধ্যম মানের ব্যবস্থাপক। কমিউনিটি পর্যায়ে পুরুষদের জাতীয় পর্যায়ের রাজনীতিবিদ ও উন্নয়নকর্মী হিসেবে দেখানো হয়। অর্থাৎ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভূমিকায় মূলত পুরুষকেই দেখানো হয়।

প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের হেড অব ইনফ্লুয়েন্সিং কাশফিয়া ফিরোজ বলেন, নারীরা ঘরে থেকে বাইরে বের হয়ে নানান কাজে যুক্ত হচ্ছেন, কিন্তু বাইরের পৃথিবী তাঁদের জন্য প্রস্তুত হয়নি। এ ক্ষেত্রে গণমাধ্যম একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। কারণ গণমাধ্যম যেকোনো বিষয়ে ধারণা তৈরি করতে সরাসরি প্রভাব বিস্তার করে।