ঝড়ে আটকা পড়েছে জাহাজ, সুয়েজ খালে চলাচল বন্ধ

প্রবল বাতাস আর ধূলিঝড়ের কবলে সুয়েজ খালে আটকে পড়া কনটেইনার জাহাজ। ২৪ মার্চ, মিসরে
ছবি: রয়টার্স

প্রবল বাতাস আর ধূলিঝড়ের কবলে মিসরের সুয়েজ খালে ৪০০ মিটার দীর্ঘ কনটেইনারবাহী জাহাজ আটকা পড়েছে। এতে বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ত এই নৌপথে জাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। আজ বুধবার কনটেইনার জাহাজটি উদ্ধারে কাজ শুরু হয়েছে। তবে কবে নাগাদ উদ্ধারকাজ শেষ হবে এবং সুয়েজ খাল দিয়ে আবারও জাহাজ চলাচল শুরু হবে, সে বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু জানাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।

এক বিবৃতিতে সুয়েজ খাল কর্তৃপক্ষ (এসসিএ) জানিয়েছে, গতকাল মঙ্গলবার সকালে প্রবল বাতাস আর ধূলিঝড়ের কবলে নিয়ন্ত্রণ হারায় জাহাজটি। এই সময় ২ লাখ ২৪ হাজার টন ওজনের কনটেইনারবোঝাই জাহাজটি অনেকটা আড়াআড়ি হয়ে তীরের মাটিতে আটকে যায়। এটি এমনভাবে আটকে রয়েছে যে পাশ কাটিয়ে সুয়েজ খাল দিয়ে অন্য জাহাজ চলাচল করতে পারছে না। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

আজ কনটেইনার জাহাজটি উদ্ধারে কাজ শুরু হয়। আটটি টাগবোট উদ্ধারকাজে অংশ নিয়েছে। কনটেইনার জাহাজ আটকে যাওয়ার এ ঘটনার পর থেকে সুয়েজ খালের দুই পাশে অসংখ্য পণ্যবাহী জাহাজ পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে। দেখা দিয়েছে জাহাজজট। তবে কবে নাগাদ উদ্ধারকাজ শেষ হয়ে খালে জাহাজ চলাচল স্বাভাবিক হবে, সে বিষয়ে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না।

তাইওয়ানের এভারগ্রিন মেরিন করপোরেশন কনটেইনার জাহাজটি পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, হঠাৎ প্রবল বাতাস আর ধূলিঝড়ে জাহাজটির গতিপথ বদলে যায়। এটির নিচের অংশ আড়াআড়িভাবে তীরের মাটিতে আটকে যায়।

হাজটি দৈর্ঘ্যে ৪০০ মিটার, প্রস্থে ৫৯ মিটার। এটি ২০ ফুটের ২০ হাজার কনটেইনার পরিবহনে সক্ষম। ঘটনার সময় এটি পণ্যবাহী কনটেইনারে পূর্ণ ছিল।

বিশ্ববাণিজ্যে সুয়েজ খালের গুরুত্ব অনেক। এটি নৌপথে এশিয়া ও ইউরোপের দূরত্ব অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছে। ফলে সুয়েজ খাল ব্যবহার করে এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে তুলনামূলক কম খরচে পণ্য পরিবহন করা যায়। বৈশ্বিক পণ্য বাণিজ্যের ১২ শতাংশ সুয়েজ খাল হয়ে পরিবহন করা হয়।

মিসরের জাতীয় আয়ের বড় একটি উৎস সুয়েজ খাল। এসসিএ বলছে, গত বছর সুয়েজ খাল দিয়ে প্রায় ১৯ হাজার পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল করেছে। প্রতিদিন গড়ে ৫১টির বেশি জাহাজ এ জলপথ পাড়ি দিয়েছে। গত বছর ১১৭ কোটি টন পণ্য সুয়েজ খাল দিয়ে গন্তব্যে গেছে।

এর আগে ২০১৮ সালে ইঞ্জিন বিকল হওয়ায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গ্রিসের কনটেইনারবাহী একটি অন্য পাঁচটি জাহাজকে ধাক্কা দেয়। তখন সুয়েজ খাল দিয়ে জাহাজ চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়।

এ ছাড়া ২০১৪ সালে ৩২৪ মিটার দৈর্ঘ্য কনটেইনারবাহী জাহাজ কলম্বো এক্সপ্রেস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আরেকটি প্রায় একই আকারের জাহাজের সঙ্গে ধাক্কা খায়। ওই সময়ও সাময়িকভাবে ওই নৌপথ বন্ধ ছিল।