মিয়ানমারে প্রথম ধাপের নির্বাচনে জান্তা–সমর্থিত দল জয়ী হতে যাচ্ছে

মিয়ানমারের নেপিডোতে সাধারণ নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোট গ্রহণ শেষে গতকাল রোববার একটি ভোটকেন্দ্রে ব্যালট পেপার গুনছেন ইউনিয়ন নির্বাচন কমিশনের (ইউইসি) সদস্যরা। ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ছবি: এএফপি

মিয়ানমারে জান্তা সরকারের অধীন আনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে এই ধাপে দেশটির সেনাবাহিনী–সমর্থিত প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি) বড় জয়ের পথে রয়েছে বলে দাবি করেছে সংশ্লিষ্ট দলীয় সূত্র।

২০২১ সালে রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অং সান সু চি সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে ক্ষমতা দখল করে জান্তা সরকার। ক্ষমতা দখলের চার বছর পর পর্যায়ক্রমে মাসব্যাপী ভোট গ্রহণের আয়োজন করেছে জান্তা সরকার।

আরও পড়ুন

তবে এই নির্বাচন নিয়ে শুরু থেকেই আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র বিতর্ক ও সমালোচনা চলছে। গণতন্ত্রকামী পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর মতে, এই ভোট মিয়ানমারে বেসামরিক শাসন ফেরানোর বদলে সামরিক শাসনকে আরও পোক্ত করার একটি অপকৌশল মাত্র।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে নেপিডো থেকে ইউএসডিপির এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘সারা দেশ থেকে পাওয়া বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইউএসডিপি অধিকাংশ আসনে জয়ী হচ্ছে।’

অবশ্য দেশটির ইউনিয়ন নির্বাচন কমিশন এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো ফল প্রকাশ করেনি। নির্বাচনের পরবর্তী দুই ধাপ আগামী ১১ ও ২৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

আরও পড়ুন

২০২০ সালের সর্বশেষ নির্বাচনে অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) বিপুল ব্যবধানে জয়ী হয়েছিল; কিন্তু সেই নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে ফলাফল বাতিল ও ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। বর্তমানে সু চির জনপ্রিয় সেই দলকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অন্যদিকে সু চি এখন কারাগারে সাজা ভোগ করছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধানসহ পশ্চিমা কূটনীতিকেরা এই নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের মতে, বিরোধীদের ওপর দমন-পীড়ন চালিয়ে এবং শুধু সামরিক মিত্রদের প্রার্থী হওয়ার সুযোগ দিয়ে একপক্ষীয় এই ভোটের আয়োজন করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

তবে জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং দাবি করেছেন, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। গতকাল রোববার নেপিডোতে ভোট দেওয়ার পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের নিশ্চয়তা দিচ্ছি। এটি সামরিক বাহিনীর তত্ত্বাবধানে হচ্ছে। তাই আমরা নিজেদের সম্মান ক্ষুণ্ন হতে দেব না।’

গৃহযুদ্ধকবলিত মিয়ানমারের ৩৩০টি টাউনশিপের মধ্যে গতকাল প্রথম দফায় ১০২টিতে ভোট গ্রহণ করা হয়েছে। তবে সংঘাতের কারণে দেশটির নিম্নকক্ষের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ আসনে ভোট গ্রহণ সম্ভব নয় বলে ইতিমধ্যে স্বীকার করেছে জান্তা সরকার।

আরও পড়ুন