সেনা সমাবেশ নিয়ে ভুল করার কথা স্বীকার ক্রেমলিনের

তিন লাখ সেনা সমাবেশের কথা বলা হলেও সংখ্যা বাড়তে পারে
ছবি : রয়টার্স

রাশিয়ার কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা তিন লাখ সেনা সমাবেশ করবে। গণমাধ্যমের তথ্য হচ্ছে, এ সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। তবে ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে এই সেনা সমাবেশ নিয়ে ইতিমধ্যে বিপাকে পড়েছে ক্রেমলিন। দেশটিতে সেনা সমাবেশ ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে বিক্ষোভ। কিন্তু মানুষের ক্ষোভের মুখেও সেনা সমাবেশের কাজ থেমে নেই। তবে রিজার্ভ সেনা ডাকার ক্ষেত্রে কিছু ভুল করেছে ক্রেমলিন। সেসব ভুলের বিষয়টি ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে স্বীকার করেও নেওয়া হয়েছে।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্টের জারি করা ডিক্রি লঙ্ঘন করার কিছু ঘটনা রয়েছে। তবে সব ভুল সংশোধন করা হবে।’

নতুন সেনা সমাবেশের ঘোষণার পরপরই তা বাস্তবায়ন শুরু করে দিয়েছে রাশিয়া। এ লক্ষ্য খসড়া তৈরির কাজ চলছে। এ খসড়া নিয়ে চলছে সমালোচনা। গণমাধ্যমের একাধিক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, সামরিক অভিজ্ঞতাহীন অনেক ব্যক্তি যাঁদের মধ্যে বয়স্ক ও শারিরীকভাবে অক্ষম এমন লোকজনকেও তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।

এদিকে গত সপ্তাহে পুতিনের জারি করা ডিগ্রি ঘিরে দেশটিতে ব্যাপক বিক্ষোভ চলছে। গত ২১ সেপ্টেম্বর পুতিন আংশিক সেনা সমাবেশেন ঘোষণা দেন। এরপর প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সের্গেই শোইগু বলেন, ৩ লাখ রিজার্ভ সৈন্যকে ডাকা হবে। তবে রুশ বিরোধী গণমাধ্যমগুলোতে বলা হচ্ছে, ১০ লাখের বেশি সেনা সমাবেশ ঘটাতে পারে রাশিয়া। পুতিনের ডিক্রিতে যে সেনাসংখ্যার কথা বলা হয়েছে তার চেয়ে অনেক বেশি সেনা ডাকা হবে। কিন্তু তা গোপন করে রাখা হয়েছে।

পশ্চিমা সামরিক বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, রাশিয়ার রিজার্ভ সৈন্য ডাকার অর্থ হচ্ছে ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে রুশ সেনারা ব্যাপক বাজে পরিস্থিতিতে পড়েছে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের ঘোষণা দেন পুতিন।

আরও পড়ুন

এদিকে, পুতিনের সেনা সমাবেশের ঘোষণার পর থেকে রাশিয়ায় যে বিক্ষোভ হচ্ছে সেখান থেকে ২ হাজার জনকে আটক করা হয়েছে। বিক্ষোভের সময় সবচেয়ে বেশি গ্রেপ্তার করা হয় মস্কো এবং সেন্ট পিটার্সবার্গ শহর থেকে।

গত বুধবার পুতিন জাতির উদ্দেশে টেলিভিশনে ভাষণ দেন পুতিন। এ সময় আংশিক সেনা সমাবেশে তিন লাখ রিজার্ভ সৈন্যকে ডাকা হবে বলে তিনি জানান। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় রাশিয়ার এ সেনা সমাবেশকে বড় ধরনের উত্তেজনা বৃদ্ধি হিসেবে দেখা হচ্ছে।

আরও পড়ুন

পুতিন তাঁর ভাষণে ইউক্রেন ও এর পশ্চিমা মিত্রদের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘রাশিয়ার ভূখণ্ড রক্ষায় সামর্থ্যে থাকা সব উপায় প্রয়োগ করব। প্রয়োজনে পারমাণবিক অস্ত্রও ব্যবহার করা হবে। পশ্চিমারা যদি “পারমাণবিক ব্ল্যাকমেল” অব্যাহত রাখে, তাহলে মস্কো তার হাতে থাকা অস্ত্রের বিশাল মজুতের শক্তি দিয়েই জবাব দেবে।’

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের যে হুমকি দিয়েছেন, তা মোটেও ‘ধাপ্পাবাজি’ বলে মনে করছেন না ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। রোববার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।

এর আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেলও বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, পুতিনের হুমকিকে ইইউর গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া উচিত।

আরও পড়ুন