ইউরোপের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা জোরদারে ঐকমত্য

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ
ফাইল ছবি: রয়টার্স

ইউরোপের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা জোরদার করার বিষয়ে আলোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ। শুক্রবার এক ফোনালাপে দুই নেতা এই বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছান। ফোনালাপের বিষয়ে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, সাবমেরিন চুক্তি ঘিরে সাম্প্রতিক সময়ে ওয়াশিংটন ও প্যারিসের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক শীতল হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দুই দেশের মিত্রতার সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র।

চলতি মাসের শেষে ইতালির রাজধানী রোমে বাইডেন ও মাখোঁর মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের কথা রয়েছে। এই বৈঠক সামনে রেখে ফোনে কথা বলেছেন দুই নেতা। এই বিষয়ে হোয়াইট হাউসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার ও অভিন্ন স্বার্থ রক্ষার অনেকগুলো জায়গা রয়েছে।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের দপ্তর থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে একই কথা বলা হয়েছে। সবশেষ ২২ সেপ্টেম্বর ফোনে কথা বলেছিলেন বাইডেন ও মাখোঁ। যুক্তরাষ্ট্রের কারণে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে করা ফ্রান্সের সাবমেরিন কেনা-বেচার চুক্তি বাতিল হওয়ার পর এটাই ছিল দুই নেতার প্রথম ফোনালাপ।

সম্প্রতি চীনকে মোকাবিলা করতে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে অকাস নিরাপত্তা চুক্তির কথা প্রকাশ করা হয়। এই চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন পারমাণবিক শক্তিসমৃদ্ধ সাবমেরিন তৈরিতে প্রযুক্তি সহায়তা দেওয়ার কথা অস্ট্রেলিয়াকে। এ চুক্তি নিয়ে অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুরু হয় ফ্রান্সের টানাপোড়েন।

আরও পড়ুন

অস্ট্রেলিয়া ২০১৬ সালেই ১২টি সাবমেরিন পেতে ফ্রান্সের সঙ্গে চুক্তি করেছিল। ফ্রান্সের নৌযান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান নেভাল গ্রুপের কাছ থেকে এসব সাবমেরিন কেনার কথা ছিল। অকাসের কারণে সেই চুক্তি বাতিল করেছে অস্ট্রেলিয়া। এতে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফ্রান্স।

সম্পর্কের টানাপোড়েনে ওয়াশিংটন থেকে রাষ্ট্রদূতকে দেশে ফিরিয়ে আনেন মাখোঁ। ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ-ইভেস লে ড্রিয়ান অভিযোগ করেন, ‘বাইডেন প্রশাসন পূর্বসূরি ডোনাল্ড ট্রাম্পের পথেই হাঁটছে। ট্রাম্পের মতো আচরণ করছেন জো বাইডেন।’ এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের সম্পর্কের ইতিহাসে এই প্রথম রাষ্ট্রদূতদের ডেকে আনা হয়েছে। এটি একটি গুরুতর রাজনৈতিক পদক্ষেপ। দুই দেশের সম্পর্কে সংকট কতটা, তা এ থেকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে।’

আরও পড়ুন

ট্রাম্পের চার বছরের টালমাটাল সম্পর্কের পর বাইডেনের আগমনে যুক্তরাষ্ট্রের ইউরোপীয় মিত্ররা আশার আলো দেখেছিলেন। তবে বাইডেন প্রশাসনের প্রথম বছরের ফ্রান্সের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে নজিরবিহীন সংকট তৈরি হয়েছে। এই সংকটের আশু সমাধানে চলতি মাসের শুরুতে ফ্রান্স সফরে যান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। সফরকালে তিনি মাখোঁর সঙ্গেও বৈঠক করেন।

সম্পর্ক উন্নয়নে এবার প্যারিস সফরে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। আগামী মাসে এই সফর হতে পারে বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, প্যারিস সফরে কমলা হ্যারিস মাখোঁর সঙ্গে বৈঠক করবেন। এ সময় করোনা মহামারি, জলবায়ু পরিবর্তন, বৈশ্বিক শান্তি ও নিরাপত্তার পাশাপাশি ট্রান্স-আটলান্টিক সম্পর্কের গুরুত্ব নিয়েও কথা বলবেন দুই নেতা।

আরও পড়ুন