রুশ নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে ইউক্রেনের বিমান হামলা, বন্দর সচলে ফ্রান্সের প্রস্তাব

ইউক্রেনের বিমান বাহিনীর বহরে রয়েছে সু-২৫ যুদ্ধবিমান
প্রতীকী ছবি: রয়টার্স

দেশের পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলে রুশ বাহিনীকে পিছু হটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে ইউক্রেন। রুশ নিয়ন্ত্রিত খেরসন অঞ্চলে বিমান হামলা চালিয়েছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। এদিকে ওডেসা সমুদ্রবন্দরে প্রবেশ নিশ্চিত করা ও বৈশ্বিক খাদ্যসংকট কমানোর প্রস্তাব দিয়েছে ফ্রান্স। খবর এএফপির।

গতকাল শুক্রবার কিয়েভ জানিয়েছে, দখলকৃত দক্ষিণাঞ্চলীয় খেরসন অঞ্চলে রুশ বাহিনীর অবস্থান লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি হামলা শুরুর পর প্রথম দিকেই রাশিয়ার দখল করে নেওয়া এলাকাগুলোর একটি খেরসন।

দনবাসে ভয়াবহ লড়াই অব্যাহত

পূর্বাঞ্চলীয় দনবাস অঞ্চলে ভয়াবহ লড়াই অব্যাহত রয়েছে। ওই অঞ্চলে, বিশেষ করে শিল্পনগরী সেভেরোদোনেৎস্কের আশপাশে মস্কো তার সমরাস্ত্রের শক্তি জড়ো করেছে। স্থানীয় গভর্নর সেরগি গাইদাই বলেছেন, গতকাল একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্রীড়া সেন্টার ধ্বংস করে দিয়েছে রুশ বাহিনী। তিনি বলেন, সেভেরোদোনেৎস্কের প্রতীকগুলোর একটি ধ্বংস হয়ে গেছে। আইস প্যালেস পুড়ে গেল।

সেভেরোদোনেৎস্কের কাছে নদীর অপর পাড়েই লিসিচানস্ক শহর। সেখানকার বাসিন্দারা জানান, তাঁদের সামনে কঠিন বিকল্প—সেখানে অবস্থান করে সাহসের সঙ্গে গোলাবর্ষণ মোকাবিলা করা অথবা নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া।

ইয়েভেন ঝিরিয়াদা (৩৯) বলেন, ‘শহরের একমাত্র পানি বিতরণ কেন্দ্রে যাওয়া ছাড়া পানি পাওয়ার আর কোনো উপায় নেই। গোলা ও গুলিবর্ষণের মধ্যেই আমাদের সেখানে যেতে হয়। এভাবেই আমরা বেঁচে আছি।’

সব মিলিয়ে শুক্রবার ‘শত্রুদের (রুশ বাহিনী) ১৪টি হামলা ঠেকিয়ে দেওয়ার’ কথা জানিয়েছে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী।

ফ্রান্সের প্রস্তাব

বিশ্ব এখনো ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কা সামলাচ্ছে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর একজন উপদেষ্টা বলেছেন, ইউক্রেনের কৃষ্ণসাগরীয় বন্দর ওডেসায় নিরাপদে প্রবেশের কাজে সহায়তা করতে প্রস্তুত আছে ফ্রান্স।

বন্দরে রুশ নৌবাহিনীর প্রবেশ ঠেকাতে সমুদ্রে মাইন পেতে রেখেছে ইউক্রেন। জবাবে বন্দরটি কার্যত অবরুদ্ধ করে রেখেছে রাশিয়া। বিশ্বে, বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে খাদ্যসংকটের আশঙ্কার মধ্যেই রপ্তানির অপেক্ষায় এই বন্দরে খাদ্যশস্য পড়ে আছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই উপদেষ্টা বলেন, ‘একটি পদক্ষেপ গ্রহণে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে রাজি করাতে আমরা প্রস্তাব দিতে যাচ্ছি যাতে সম্পূর্ণ নিরাপদে ওডেসা বন্দরে প্রবেশ করা যায়। অন্যভাবে বলতে গেলে, সমুদ্রে মাইন পেতে রাখা সত্ত্বেও জাহাজগুলো যাতে বন্দরে যাতায়াত করতে পারে।

আরও পড়ুন

রাশিয়ার হুমকি

এদিকে পোল্যান্ডে ন্যাটো বাহিনী গঠনের প্রচেষ্টার একই ধরনের জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে রাশিয়া। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আজ শনিবার এই হুঁশিয়ারি দিয়েছে বলে ইন্টারফ্যাক্সের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে।

ইউরোপের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক দেখভালের দায়িত্বে থাকা রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি বিভাগের প্রধান ওলেগ তিয়াপকিন বলেন, ‘রুশ ফেডারেশনের প্রতি সম্ভাব্য হুমকি দূর করতে সব সময় যথোপযুক্ত ও সমুচিত জবাব দেওয়া হবে।’

কিয়েভের ন্যাটো জোটে যোগ দেওয়ার পদক্ষেপে ক্ষুব্ধ রাশিয়া গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা শুরু করে। এই যুদ্ধে রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে ইউক্রেনকে অর্থ ও অস্ত্রসহায়তা দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার পাশাপাশি ইউরোপের দেশগুলো।

আরও পড়ুন