রাজ্যপালকে নিয়ে মানহানিকর মন্তব্য নয়, মমতাকে কলকাতা হাইকোর্ট
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসকে নিয়ে মানহানিকর মন্তব্য করা থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়সহ চারজনকে বিরত থাকতে বলেছেন কলকাতা হাইকোর্ট।
মমতা ছাড়া বাকিরা হলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ, বিধানসভার উপনির্বাচনে জয়ী তৃণমূলের দুই বিধায়ক অভিনেত্রী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রেয়াত হোসেন সরকার।
রাজ্যপালের করা মানহানির মামলায় শুনানি শেষে গতকাল মঙ্গলবার এক অন্তর্বর্তীকালীন আদেশে বিচারপতি কৃষ্ণা রাও এই আদেশ দেন। আগামী ১৪ আগস্ট মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
২ জুলাই কলকাতা হাইকোর্টে মানহানির মামলা করেন রাজ্যপাল। মামলায় মমতা, কুণাল, সায়ন্তিকা ও রেয়াতকে যুক্ত করেন রাজ্যপাল।
মামলা দায়েরের পর রাজ্যপাল বলেছিলেন, ‘কেউ যদি আমার সম্মান নষ্ট করার চেষ্টা করেন, তবে তিনি যিনিই হোন, তাঁকে ভুগতে হবে।’
রাজ্যপাল এ কথাও বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী আমার সাংবিধানিক সঙ্গী। আমি সেই হিসেবেই তাঁকে মর্যাদা দিই। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা নিয়ে মানহানির মামলা করা হয়েছে। এবার বিচার করবেন আদালত।’
মামলার সূত্রপাত রাজ্যের উপনির্বাচনে বিজয়ী দুই তৃণমূল বিধায়কের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান নিয়ে। রাজ্যপাল চাইছেন, রাজভবনে এসে শপথ নেওয়া হোক। আর মুখ্যমন্ত্রী চাইছেন, শপথ হোক বিধানসভা ভবনে। আর এটাই মেনে নিতে পারছিল না তৃণমূল।
এবারের লোকসভা নির্বাচনের মধ্যেই গত ১ জুন নির্বাচনের শেষ দিনে লোকসভার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের দুটি বিধানসভা আসনের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। আসন দুটি হলো উত্তর চব্বিশ পরগনার বরাহনগর ও মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলা আসন। দুই আসনে জয়ী হন তৃণমূল প্রার্থী যথাক্রমে সায়ন্তিকা ও রেয়াত হোসেন।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা রাজভবনে শপথ গ্রহণ না করার পরিপ্রেক্ষিতে বলেছিলেন, ‘কেন রাজভবনে যেতে হবে, কেন উনি বিধানসভা ভবনে আসবেন না? রাজভবনে যা কীর্তিকলাপ চলছে, সেখানে যেতে মেয়েরা ভয় পাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে তারা।’
দীর্ঘদিন ধরেই পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের সঙ্গে বনিবনা হচ্ছিল না মুখ্যমন্ত্রী মমতার। এরই মধ্যে রাজ্যপালের দপ্তর ও বাসভবন রাজভবনের এক নারী কর্মীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে। এ ঘটনা নিয়ে রাজ্য রাজনীতি তোলপাড় হয়। যদিও এ ঘটনার কথা অস্বীকার করা হয়েছে রাজভবনের তরফ থেকে।
গত ২৬ জুন কলকাতার কেন্দ্রস্থল ধর্মতলার স্বাধীনতাসংগ্রামী, রাজনীতিবিদ, পণ্ডিত বি আর আম্বেদকরের ভাস্কর্যের পাদদেশে শপথ গ্রহণের দাবি জানিয়ে হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে অবস্থান ধর্মঘটে বসেন জয়ী দুই প্রার্থী। তাতে লেখা, ‘শপথ গ্রহণের জন্য আমরা আপনার অপেক্ষায় আছি’।