চায়ের দোকান দেবেন বলে ছাড়লেন ব্রিটিশ কাউন্সিলের চাকরি
চার চাকার ভ্যানে ছোট্ট চায়ের দোকানটি চালাচ্ছেন শর্মিষ্ঠা ঘোষ। দিল্লি ক্যান্টের গোপীনাথ বাজারের ভ্রাম্যমাণ এই চায়ের দোকানের মালিক অন্য দু-চারজনের মতো নন। ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর করা শর্মিষ্ঠা চায়ের দোকান দেবেন বলে ছেড়েছেন ব্রিটিশ কাউন্সিলের চাকরি।
নিজস্ব কিছু করবেন বলে ব্রিটিশ কাউন্সিলের লোভনীয় চাকরিটা ছেড়েছেন শর্মিষ্ঠা। চায়ের বিখ্যাত চেইন শপ ‘চায়স’-এর মতো কিছু করার স্বপ্ন তাঁর। ভারতজুড়ে রয়েছে এই চেইন শপের শাখা।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার সঞ্জয় খান্না লিংকডিনে শর্মিষ্ঠার চায়ের দোকানের গল্পটি পোস্ট করেন। এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে দেশটির প্রভাবশালী গণমাধ্যম এনডিটিভি।
শর্মিষ্ঠার বান্ধবী ভাবনা রাও লুফথানসায় চাকরি করেন। তিনিও চায়ের দোকান পরিচালনায় যুক্ত। শর্মিষ্ঠার পরিবারও সন্ধ্যায় তাঁকে সহযোগিতা করে।
শর্মিষ্ঠার সঙ্গে তোলা একটি ছবি দিয়ে সঞ্জয় লিখেন, ‘আমি কৌতূহলী হয়ে তাঁর কাছে এটা করার কারণ জানতে চাইলাম। তিনি জানালেন, ‘চায়স’–এর মতো বড় প্রতিষ্ঠান গড়তে চান। চেইন শপটির সারা দেশে শাখা আছে।’
শর্মিষ্ঠার বান্ধবী ভাবনা রাও জার্মান বিমান সংস্থা লুফথানসায় চাকরি করেন। তিনিও এই চায়ের দোকান পরিচালনায় যুক্ত হয়েছেন। শর্মিষ্ঠার পরিবারও সন্ধ্যায় এ কাজে তাঁকে সহযোগিতা করে। কিছু সময় কাজ করার পর ফিরে যান।
পোস্টে সঞ্জয় লেখেন, ‘আমি অনুমতি নিয়েই এই পোস্ট লিখছি এবং তাঁর সঙ্গে তোলা ছবিটি পোস্ট করছি। আমি মনে করি, নিচু ও ছোট কাজ বলে কিছু নেই। অন্যদের উৎসাহ দিতে এ ধরনের মানুষকে সামনে আনা উচিত।’
তিনি আরও লেখেন, ‘নিজের স্বপ্নের পথে এগিয়ে যেতে এবং সেটা বাস্তবায়ন করতে যেকোনো ব্যক্তির অবশ্যই প্রবল আগ্রহ ও নিষ্ঠা থাকতে হবে।’
অনেক উচ্চ যোগ্যতাসম্পন্ন তরুণকে দেখেছি, যাঁরা হতাশাগ্রস্ত। পেশাদার মর্যাদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি উপযুক্ত চাকরির সন্ধানে রয়েছেন তাঁরা। তাঁদের জন্য এই বার্তা।লিংকডিনে শর্মিষ্ঠার গল্প শেয়ার করা ভারতীয় সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার সঞ্জয় খান্না
সঞ্জয় বলেন, ‘অনেক উচ্চ যোগ্যতাসম্পন্ন তরুণকে আমি দেখেছি, যাঁরা হতাশাগ্রস্ত। পেশাদার মর্যাদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি উপযুক্ত চাকরির সন্ধানে রয়েছেন তাঁরা। তাঁদের জন্য এই বার্তা। আমি দৃঢ়ভাবে মনে করি, কেউ যেন উচ্চ যোগ্যতাসম্পন্ন হওয়ার ও বড় চাকরির ভাবনায় পড়ে না থাকে। বরং দীর্ঘমেয়াদি অর্জন ও উন্নতির জন্য ছোট উদ্যোগ ও উপায়গুলো নিয়ে ভাবে।’
শেয়ার হওয়ার পর তিন দিনে এই পোস্টে ৩০ হাজার লাইক পড়ে। আর ৯১৮টি মন্তব্য করা হয়। এসব মন্তব্যে শর্মিষ্ঠা ও তাঁর বান্ধবী ভাবনার এমন উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে।