পাকিস্তানের নেতারা এক হবেন, না সংকট বাড়াবেন

পাকিস্তান মুসলিম লীগ–নওয়াজের প্রেসিডেন্ট শাহবাজ শরিফ, পাকিস্তান পিপলস পার্টির কো–চেয়ারম্যান আসিফ আলি জারদারি এবং জামায়াতে উলেমা–ই–ইসলামের (এফ) প্রধান মওলানা ফজলুর রহমান (ডানে)ফাইল ছবি: এএফপি

পাকিস্তানের মানুষ ব্যালটের মাধ্যমে রায় দিয়েছেন। ভোটের হিসাবে দেখা যায়, ২০১৮ সালের নির্বাচনের সময় ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক–ই–ইনসাফের (পিটিআই) যতটা জনপ্রিয়তা ছিল, এবারের ভোটে তার চেয়ে কিছুটা কমে গেছে।

২০১৮ সালের নির্বাচনের সময়কার তুলনায় নওয়াজ শরিফের পাকিস্তান মুসলিম লীগ–নওয়াজ (পিএমএল–এন) এবং বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) জনপ্রিয়তা এবার প্রায় ১০ শতাংশ বেড়েছে।

গত অর্ধশতকে পাকিস্তানে এবার নিয়ে ১২ বার নির্বাচন হলো। এবারের নির্বাচনে কারচুপির গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। যদিও এটা নতুন কিছু নয়। আগের নির্বাচনগুলোতেও একই অভিযোগ উঠেছিল।

আগের নির্বাচনগুলোর পর নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল কারচুপিসহ বিভিন্ন অভিযোগ শুনেছে, সমাধান করেছে। এবারও এর ব্যতিক্রম হচ্ছে না।

সবকিছুই আগের মতো হয়েছে, হচ্ছে। তবে পাকিস্তানে শিগগিরই একটি স্থিতিশীল সরকার প্রয়োজন।

পাকিস্তানের রাজনৈতিক দলগুলো স্থিতিশীল সরকার গড়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। তবে এর মধ্যে অর্থনীতির ক্ষতির মুখে পড়েছে।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন

অর্থনীতিতে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার তাৎক্ষণিক ও সরাসরি তিনটি প্রভাব পড়েছে। এক, পাকিস্তান স্টক একচেঞ্জ (পিএমএক্স) প্রায় ২০০ কোটি ডলার হারিয়েছে। দুই, পাকিস্তানের আন্তর্জাতিক ডলার বন্ডে সাত মাসের মধ্যে সবচেয়ে বড় পতন দেখা গেছে। তিন, এমন অনিশ্চয়তা স্পষ্টত বিদেশি বিনিয়োগকারীদের নিরুৎসাহিত করবে। এসব কারণে পাকিস্তান কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির সুযোগ হারাবে।

এমন তাৎক্ষণিক ও সরাসরি ক্ষতির পাশাপাশি অর্থনীতিতে তিনটি পরোক্ষ প্রভাবও দেখা যেতে পারে। এক, অধিকতর অনিশ্চয়তা ভোক্তাদের আস্থায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এর ফলে ভোক্তার ব্যয় কমবে। এটি খুচরাসহ বিভিন্ন অর্থনৈতিক খাতে প্রভাব ফেলবে।

দুই, ভবিষ্যতে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা কেমন হবে, সেটা বুঝতে না পারায় বিনিয়োগ স্থগিত হতে পারে। এমন পরিস্থিতি দেশের সামগ্রিক সমৃদ্ধির গতি টেনে ধরবে। তিন, কার্যকর সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যাঘাত ঘটানোর প্রচেষ্টা মূল্যস্ফীতির চাপ তৈরি করতে পারে।

আরও পড়ুন

বলা যায় যে, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মূল্য নির্ধারণ করা দুরূহ একটি কাজ। বিভিন্ন অর্থনৈতিক সূচক ও পদ্ধতিগত সরঞ্জাম (মডেলিং টুল) ব্যবহার করে এবং অন্তর্দৃষ্টি কাজে লাগিয়ে শুধু অনুমান করা যেতে পারে। পাকিস্তানে নতুন সরকার গঠন নিয়ে দীর্ঘদিনের বিলম্বের কারণে যে শূন্যতা দেখা দিয়েছে, তাঁর অর্থনৈতিক ক্ষতি দাঁড়াতে পারে দেড় হাজার কোটি থেকে ৩ হাজার কোটি ডলার।

সম্ভাব্য এই ক্ষতি চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় যে পাকিস্তানের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দৃশ্যপট স্থিতিশীল করার জন্য একটি দ্রুত ও শান্তিপূর্ণ সমাধান খোঁজার গুরুত্ব কতটা। আর এ দায়িত্ব তাঁদের ওপরই বর্তায়, যাঁদের ভোটাররা ভোট দিয়ে জাতিকে পরিচালনা ও নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য নির্বাচিত করেছেন।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন