প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসসহ ফিলিস্তিনের ৮০ কর্মকর্তাকে ভিসা দেবে না যুক্তরাষ্ট্র

ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসফাইল ছবি: রয়টার্স

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের আগে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসসহ প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও) ও ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের (পিএ) সদস্যদের ভিসা প্রত্যাখ্যান ও বাতিল করছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর গতকাল শুক্রবার এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছে।

বিবিসির প্রতিবেদনের তথ্য, ট্রাম্প প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তের ফলে আসছে সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ও ৮০ জন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা যোগ দিতে পারবেন না। তাঁদের ভিসা প্রত্যাখ্যান ও বাতিলের বিষয়টি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর নিশ্চিত করেছে বলেও জানায় সংবাদমাধ্যমটি।

বিবিসি বলছে, এই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ‘শান্তি প্রচেষ্টা ব্যাহত করা’ ও ‘একটি অনুমাননির্ভর ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের একতরফা স্বীকৃতি চাওয়ার’ অভিযোগ তুলেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।

পররাষ্ট্র দপ্তরের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ট্রাম্প প্রশাসন স্পষ্ট করছে যে পিএলও এবং পিএর দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের প্রতিশ্রুতি পালন না করা এবং শান্তির সম্ভাবনা ক্ষুণ্ন করায় জবাবদিহি করানোর অংশ হিসেবে এটা করা হয়েছে।’ এ পদক্ষেপের কারণ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তাজনিত স্বার্থের কথাও বলা হয় বিবৃতিতে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের হামলার কথা উল্লেখ করে বিবৃতিতে পিএলও এবং পিএর প্রতিনিধিদের প্রসঙ্গে বলা হয়, ‘সন্ত্রাসবাদকে ধারাবাহিকভাবে প্রত্যাখ্যান করতে হবে’।

পিএ ‘আলোচনা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে’ বলেও বিবৃতিতে অভিযোগ তোলা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, অধিকৃত পশ্চিম তীর ও গাজায় সংঘাতের সময় ইসরায়েলি বাহিনী নির্যাতন করেছে জানিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত এবং আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে আবেদন করার মধ্য দিয়ে পিএ আলোচনার পথ এড়িয়ে গেছে। ফিলিস্তিনিদের ওপর চলা এসব ঘটনাকে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা ‘গণহত্যা’ বলছেন।

পিএ হলো ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিম তীরে সীমিত স্বায়ত্তশাসন থাকা একটি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। আর পিএলও হলো ফিলিস্তিনিদের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি সংগঠন। উভয়ই ফিলিস্তিনিদের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করে। সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক মঞ্চে তারা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির জন্য চাপ প্রয়োগের কাজে যুক্ত।

ট্রাম্প প্রশাসন এর আগে ‘সহিংসতাকে গৌরবান্বিত করা’ ও ‘শান্তি নষ্ট করার’ অভিযোগে পিএ এবং পিএলওর সদস্যদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। ফিলিস্তিনের মতো ‘পর্যবেক্ষক ভূখণ্ড’ সাধারণত প্রতিবছর সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বড় প্রতিনিধিদল পাঠায়।

আরও পড়ুন

গতকালের বিবৃতিতে পররাষ্ট্র দপ্তর জানায়, জাতিসংঘে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের মিশন ছাড় পাবে। ওই মিশনে বর্তমানে রিয়াদ মনসুর রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করছেন।

ট্রাম্প প্রশাসনের ঘোষণার আগে রিয়াদ মনসুর বলেছিলেন, আগামী মাসে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। ২২ সেপ্টেম্বর ফিলিস্তিনিদের অধিকার নিয়ে একটি আয়োজনেও অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে তাঁর।

ফিলিস্তিনি ওয়াফা সংবাদ সংস্থার প্রকাশ করা এক বিবৃতিতে ট্রাম্প প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তকে ‘গভীর দুঃখজনক ও বিস্ময়ের’ বলে উল্লেখ করেছে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্টের দপ্তর। অন্যদিকে ট্রাম্প প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিয়ন সার।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন