ফিরে দেখা
৭৭ বছর আগে ফিলিস্তিনিদের ওপর যেভাবে নেমে এসেছিল মহাবিপর্যয়
ফিলিস্তিনিদের হত্যা, নির্যাতন, নিপীড়ন চালিয়ে ১৯৪৮ সালের ১৪ মে স্বাধীন ইসরায়েল রাষ্ট্রের ঘোষণা দেন জায়নবাদী নেতা ডেভিড বেন গুরিয়ন। জায়নবাদীদের কল্পকাহিনির ওপর ভর করে কীভাবে অন্যায়ভাবে ফিলিস্তিনিদের উৎখাত করে ১৯৪৮ সালের এই দিনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েল, তা নিয়ে আজকের আয়োজন।
কোনো রাখঢাক না করেই ঘোষণাটা দিয়েছেন ইসরায়েলের উগ্র ডানপন্থী অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ।
গত মাসের শেষ দিকে অধিকৃত পশ্চিম তীরে গিয়েছিলেন রিলিজিয়াস জায়নিজম পার্টির এই নেতা। সেখানে দেওয়া এক ভাষণে তিনি খোলাখুলিভাবে বলেন, ইসরায়েল যুদ্ধ বন্ধ করবে শুধু তখনই, যখন ফিলিস্তিনিরা গাজা ছেড়ে চলে যাবেন।
ফিলিস্তিনিদের নিজ ভূমি থেকে পুরোপুরি উৎখাত করে এই ভূখণ্ডের পুরোটা দখল করার জায়নবাদী প্রকল্প নতুন কিছু নয়। এই দখলদারি, অন্যায়, অপরাধ, জুলুমের প্রকল্পের ইতিবৃত্ত জানতে আমাদের ফিরে তাকাতে হবে দূর অতীতে-শত বছরের বেশি সময় আগে।
কল্পকাহিনি
‘জায়নিজম’ বা জায়নবাদ শব্দটি প্রথম প্রবর্তন করেন অস্ট্রীয় লেখক নাথান বারনবুম। সে ১৮৯০ সালের কথা।
সাত বছর পর ১৮৯৭ সালের আগস্টে সুইজারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হয় প্রথম জায়নবাদী সম্মেলন।
অস্ট্রিয়ার ইহুদি সাংবাদিক, নাট্যকার ও রাজনীতিক থিওডর হারজেলের উদ্যোগে এই সম্মেলনে প্রতিষ্ঠিত হয় জায়নবাদী সংস্থা। একই সম্মেলনে ইহুদিদের জন্য একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের রূপরেখা গ্রহণ করা হয়।
এই লক্ষ্যে জায়নবাদীরা এক কল্পকাহিনি ফাঁদেন। এ জন্য তাঁরা ইহুদি ধর্মগ্রন্থ হিব্রু বাইবেলের আশ্রয় নেন।
সুনিপুণ এই কল্পকাহিনিকে প্রতিষ্ঠিত, বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে জায়নবাদীরা একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প নেন। প্রকল্প বাস্তবায়নে তাঁরা নানামুখী পদক্ষেপ-তৎপরতা নিয়ে এগোতে থাকেন।
কী সেই কল্পকাহিনি
এই কল্পকাহিনির মূলে রয়েছে মূলত তিনটি বয়ান। আর তা হলো—‘প্রতিশ্রুত ভূমি’, ‘মনোনীত সম্প্রদায়’ ও ‘মনুষ্যহীন ভূমি’।
হিব্রু বাইবেল (তানাখ) অনুসারে, নবী আব্রাহামকে (আ.) তাঁর বংশধরদের জন্য একটি নির্দিষ্ট ভূখণ্ডের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ঈশ্বর, যা পুণ্যভূমি হিসেবে বংশপরম্পরায় সংরক্ষিত থাকবে। এই ভূমি সেখানে, যেখানে আজকের ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের অবস্থান। তবে এই বাইবেলের অন্য বিবরণে মিসর থেকে ইউফ্রেতিস নদীর তীর পর্যন্ত এই ভূমির সীমা টানা হয়েছে।
ইহুদিদের বিশ্বাস, তাঁরা ঈশ্বরের মনোনীত জাতি। সে হিসেবে তাঁরা ঈশ্বরের প্রতিশ্রুত ভূমিতেই বসবাস করে আসছিলেন। কিন্তু তাঁরা এই ভূমি থেকে বিতাড়িত হন। দুই হাজার বছরের বেশি সময় আগে ৭০ খ্রিষ্টাব্দে তাঁদের উৎখাত করেন রোমানরা। তাঁরা উৎখাত হওয়ার পর যাঁরা (ফিলিস্তিনিরা) সেখানে থেকেছেন, তাঁরা এই ভূমির মানুষ নন। তাঁরা কোনো মানব সম্প্রদায়ও নন। ফলে এই ভূমি ‘মনুষ্যহীন ভূমি’।
ইহুদি সম্প্রদায়ের মানুষদের ‘নিজ ভূমিতে’ ফেরার, ‘নিজ ভূমির’ ওপর সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জাতীয় আন্দোলন শুরু করেন জায়নবাদীরা। তাঁরা দাবি তোলেন, ঐতিহাসিক ফিলিস্তিনের ভূমিতেই গড়তে হবে ইহুদিদের নিজস্ব রাষ্ট্র।
বেলফোর ঘোষণা
১৫১৬ থেকে ১৯১৭ সাল পর্যন্ত অটোমান সাম্রাজ্যের অধীন ছিল ফিলিস্তিন (প্যালেস্টাইন)। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অটোমান সাম্রাজ্যের পতন হয়। ফিলিস্তিনের নিয়ন্ত্রণ নেয় ব্রিটেন।
তখনকার ফিলিস্তিনে ৯০ শতাংশ বা তার বেশি ছিল আরব অধিবাসী। আর ছিল কিছু ইহুদি ও খ্রিষ্টান অধিবাসী। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও ব্রিটিশ শাসকের বৈষম্যমূলক আচরণের শিকার হতে থাকেন আরবরা।
ব্রিটেনের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আর্থার জেমস বেলফোর ১৯১৭ সালের ২ নভেম্বর জায়নবাদী নেতা ব্যারন রথচাইল্ডকে একটি চিঠি দেন। চিঠিতে তিনি জানান, ফিলিস্তিনে ইহুদিদের জন্য জাতীয় আবাসভূমি গড়ে তোলার বিষয়ে ব্রিটিশ সরকার ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে। এই লক্ষ্য অর্জনে প্রয়োজনীয় সবকিছু করবে তারা।
ঘোষণাটি ইতিহাসে ‘বেলফোর ঘোষণা’ নামে পরিচিতি পায়। এই ঘোষণা ফিলিস্তিনে ইসরায়েল রাষ্ট্র গঠনের অন্যতম ভিত্তি হয়ে ওঠে। ১৯২২ সালে লিগ অব নেশনসের কাছ থেকে অখণ্ড ফিলিস্তিনের ওপর ‘ম্যান্ডেট’ লাভ করে ব্রিটিশরাজ।
পিল কমিশন
ব্রিটিশ শাসকের সমর্থনের ধারাবাহিকতায় ইউরোপসহ অন্যান্য অঞ্চল থেকে ইহুদিরা দলে দলে ফিলিস্তিনে আসতে থাকে। ইহুদিদের আগমনে স্থানীয় ফিলিস্তিনি-আরবদের মধ্যে অসন্তোষ দানা বাঁধে। দেখা দেয় সংঘাত।
১৯৩৩ সালে বড় ধরনের প্রতিবাদ-বিক্ষোভে ফেটে পড়েন ফিলিস্তিনিরা। ব্রিটিশ সরকার তা কঠোরহস্তে দমন করে।
ফিলিস্তিনি আরব ও ইহুদিদের মধ্যকার সংঘাতের কারণ অনুসন্ধানে লর্ড রবার্ট পিলের নেতৃত্বে একটি কমিশন গঠন করে ব্রিটিশ সরকার। ১৯৩৭ সালে পিল কমিশনের প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
পিল কমিশন ফিলিস্তিনকে দুই ভাগে বিভক্ত করার সুপারিশ করে। ৭৫ শতাংশ আরবদের জন্য, বাকিটা ইহুদিদের জন্য। ফিলিস্তিনি আরবরা এই সুপারিশ প্রত্যাখ্যান করেন। কিন্তু ইহুদিরা এই ভূমি বিভাজনের নীতিকে সমর্থন করেন।
১৯৩৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়। যুদ্ধে জার্মান নাৎসি নেতা হিটলারের নেতৃত্বে ইউরোপে ইহুদি নিধনযজ্ঞ চলে, যা ইতিহাসে ‘হলোকাস্ট’ নামে পরিচিত। নাৎসি বাহিনীর হাতে প্রায় ৬০ লাখ ইহুদি নিহত হন। এই ইহুদি নিধনযজ্ঞ পরিস্থিতিকে জটিল করে তোলে। সে সময় অনেক ইহুদি পালিয়ে ফিলিস্তিনে যান।
যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোরে ১৯৪২ সালে অনুষ্ঠিত হয় জায়নবাদী সম্মেলন। এই সম্মেলনে ফিলিস্তিনে ইহুদি রাষ্ট্র গঠনের ঘোষণা গৃহীত হয়।
১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়। যুদ্ধে পরাজিত হয় জার্মানি-জাপান-ইতালি অক্ষশক্তি। যুদ্ধ শেষে বিশ্বজুড়ে ইহুদিদের প্রতি সহানুভূতি তুঙ্গে ওঠে। এই প্রেক্ষাপটে হলোকাস্টকে সামনে এনে ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে ইহুদিদের নিজস্ব আবাসভূমি প্রতিষ্ঠার যুক্তি জোরালোভাবে তুলে ধরা হয়।
তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হ্যারি ট্রুম্যান ইসরায়েল রাষ্ট্রের পক্ষে জোরালো অবস্থান তুলে ধরেন। তিনি তখনই চেয়েছিলেন, হিটলারের হাত থেকে বেঁচে যাওয়া এক লাখ ইহুদিকে অতি দ্রুত ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে স্থান দেওয়া হোক।
মহাবিপর্যয়
ব্রিটিশ সরকার একপর্যায়ে সিদ্ধান্ত নেয়, তারা আর ফিলিস্তিন শাসন করবে না। তারা বিষয়টি জাতিসংঘের হাতে তুলে দেয়।
১৯৪৭ সালের ২৯ নভেম্বর ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে দুটি রাষ্ট্র গঠনের সিদ্ধান্ত নেয় জাতিসংঘ। একটি ইহুদিদের (৫৫ শতাংশ), অপরটি ফিলিস্তিনি আরবদের (৪৫ শতাংশ)। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গৃহীত এই পরিকল্পনায় জেরুজালেমকে আন্তর্জাতিক নগরের মর্যাদা দেওয়া হয়। পরিকল্পনাটি মেনে নেন ইহুদিরা, কিন্তু আরবরা তা প্রত্যাখ্যান করেন।
নিজ ভূমি থেকে ফিলিস্তিনিদের তাড়ানোর ছক তৈরি করেন জায়নবাদীরা। নেওয়া হয় ‘প্ল্যান ডি’ নামের পরিকল্পনা। এই পরিকল্পনার নেতৃত্বে ছিলেন জায়নবাদী নেতা ডেভিড বেন গুরিয়ন। পরে তিনি ইসরায়েলের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হন।
পরিকল্পনাটির লক্ষ্য ছিল—হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট ও সন্ত্রাসের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি আরবদের নিজ ভূমি থেকে বিতাড়িত করা। ১৯৪৮ সালের ১০ মার্চ পরিকল্পনাটি চূড়ান্ত হয়। তখন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ঝাঁপিয়ে পড়ে হাগানাহ, স্টার্ন গ্যাংসহ ইসরায়েলি সশস্ত্র সংগঠনগুলো।
ইহুদিদের হামলা, নির্যাতন, নিপীড়ন ও হত্যার শিকার হতে থাকেন স্থানীয় ফিলিস্তিনিরা। তাঁরা প্রাণ বাঁচাতে নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন।
১৯৪৮ সালের ১৪ মে ফিলিস্তিনে ব্রিটিশ ম্যান্ডেট (শাসন) শেষ হয়। ঠিক সেদিনই বেন গুরিয়ন আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন ইসরায়েল রাষ্ট্রের ঘোষণা দেন। তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রুম্যান সঙ্গে সঙ্গে ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেন। ফিলিস্তিনিদের ওপর আনুষ্ঠানিকভাবে নেমে আসে মহাবিপর্যয়। এ কারণে ফিলিস্তিনিরা প্রতি বছর ১৫ মে পালন করে ‘আল-নাকবা’ (মহাবিপর্যয়) দিবস।
১৯৪৮ সালের মার্চ থেকে অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে অন্তত সাত লাখ ফিলিস্তিনি শরণার্থী হন। তাঁরা আশপাশের আরব দেশে আশ্রয় নেন।
জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত অনুসারে, এই ফিলিস্তিনিদের নিজ ভূমিতে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু তাঁরা কখনোই আর ফিরতে পারেননি। অন্যদিকে যাঁরা ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে রয়ে যান, তাঁদের প্রজন্মের পর প্রজন্ম ইসরায়েলি দখলদারি, জুলুম, সন্ত্রাস, হত্যাযজ্ঞের মধ্যে জীবন পার করতে হচ্ছে।
বিগত ৭৭ বছরে ৪টি আরব-ইসরায়েল যুদ্ধ হয়। প্রতিটি যুদ্ধে আরবরা পরাজিত হন। ফিলিস্তিনিরা ক্রমেই নিজ ভূমিতে কোণঠাসা হয়ে পড়েন। অন্যদিকে এই সময়কালে ইসরায়েলের দখলদারি আরও সম্প্রসারিত হয়েছে।
‘মর্ত্যের নরক’
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় নির্বিচার নৃশংস হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। গাজায় চলমান হামলায় ৫২ হাজার ৮০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত লাখো ফিলিস্তিনি। গাজা পরিণত হয়েছে এক ধ্বংসস্তূপে। পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে এখন গাজাকে বলা হচ্ছে ‘মর্ত্যের নরক’।
ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া গাজা নিয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে এক বিস্ময়কর পরিকল্পনার কথা জানান ইসরায়েলের একনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, ফিলিস্তিনিদের অন্য কোনো দেশে পুনর্বাসিত করে গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ নিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। গাজার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তারা উপত্যকাটির উন্নয়ন করবে। তারা উপত্যকাটির মালিক হবে। গাজা হবে সারা বিশ্বের মানুষের বাড়ি।
ট্রাম্পের পরিকল্পনাটিকে ‘খুবই ভালো’ বলে অভিহিত করেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তবে ফিলিস্তিনিরা, আরবরা এই পরিকল্পনার তীব্র নিন্দা জানান। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র অনেক পশ্চিমা দেশও এই পরিকল্পনার তীব্র সমালোচনা করে। কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন ট্রাম্পের পরিকল্পনাটিকে জাতিগত নিধনের সঙ্গে তুলনা করে।
এখন ইসরায়েল স্থায়ীভাবে গাজা দখলের পাঁয়তারা করছে। এই লক্ষ্যে চলতি মাসের শুরুর দিকে ফিলিস্তিনের গাজায় সামরিক অভিযানের পরিসর বাড়ানোর পরিকল্পনার অনুমোদন দেয় ইসরায়েলের নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রিসভা। অনুমোদন পাওয়া পরিকল্পনার মধ্যে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড (গাজা উপত্যকা) দখলের বিষয়টি রয়েছে।
ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে সেই কবে, বহু বছর আগে শুরু হয়েছিল ইসরায়েলি জুলুম-বর্বরতা-দখলদারি। আজও তা চলছে। ঝরছে রক্ত। নিজভূমে পরবাসী ফিলিস্তিনিরা। তাঁদের নাকবা শেষ হয়নি।
তথ্যসূত্র:
আল-জাজিরা, বিবিসি, এএফপি, রয়টার্স।
ইয়ান ক্যারল, ইসরায়েল অ্যান্ড প্যালেস্টাইন: দ্য কমপ্লিট স্টোরি (২০১৮ কিন্ডল ই-বুক সংস্করণ)