পিছু হটলেন ইমরান খান, সরকার বলছে ‘নাটক’
পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দাবিতে রাজধানী ইসলামাবাদ অভিমুখে লংমার্চ কর্মসূচি থেকে পিছু হটেছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। গতকাল শনিবার রাতে রাওয়ালপিন্ডিতে এ ঘোষণা দেওয়ার পর আজ রোববার তিনি একটি টুইট করেছেন। টুইটে ইমরান লংমার্চে অংশ নেওয়ায় তাঁর দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন। খবর জিও নিউজ ও রয়টার্সের।
টুইটে পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান বলেন, ‘পুরো দেশ থেকে যাঁরা রাওয়ালপিন্ডির কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন, আমি তাঁদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। লংমার্চ বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হলেও পাকিস্তানে প্রকৃত স্বাধীনতা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম চলবে।’
এর আগে গতকাল রাতে লংমার্চ বন্ধের ঘোষণা দিয়ে ইমরান বলেছিলেন, বিশৃঙ্খলার আশঙ্কায় ইসলামাবাদ অভিমুখে লংমার্চ কর্মসূচি বন্ধ করা হচ্ছে। তবে আন্দোলনের অংশ হিসেবে পিটিআই দেশটির সব কটি প্রাদেশিক পরিষদ থেকে পদত্যাগ করবে।
গত এপ্রিলে পার্লামেন্টে এক অনাস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতা হারানোর পর থেকে আগাম নির্বাচনের দাবিতে দেশজুড়ে সভা-সমাবেশ ও লংমার্চ করছেন ইমরান। গত ২৮ অক্টোবর রাজধানী ইসলামাবাদ অভিমুখে লংমার্চ শুরু করেন তিনি। তবে ৩ নভেম্বর পাঞ্জাবের ওয়াজিরাবাদ শহরে লংমার্চে হামলায় ইমরান পায়ে গুলিবিদ্ধ হলে লংমার্চ সাময়িক বন্ধ করা হয়। ১০ নভেম্বর আবার লংমার্চ শুরু হয়।
এর মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ রাজপথের আন্দোলন ছেড়ে ইমরানকে দ্রুত পার্লামেন্টে ফেরা ও আলোচনায় বসার আহ্বান জানান। হামলার পর বিশ্রাম শেষে গতকাল রাওয়ালপিন্ডিতে লংমার্চে যোগ দেন ইমরান। এরপরই তিনি লংমার্চ বন্ধ ও প্রাদেশিক পরিষদ ছাড়ার ঘোষণা দেন।
এর প্রতিক্রিয়ায় রানা সানাউল্লাহ আজ বলেছেন, ‘তিনি (ইমরান) পাঞ্জাব ও খাইবার পাখতুনখাওয়ার প্রাদেশিক পরিষদ ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। এমনকি অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন করা হলেও।’
অন্যদিকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) চেয়ারম্যান বিলওয়াল ভুট্টো জারদারি আজ বলেছেন, ‘ইমরান খানের লংমার্চ ব্যর্থ হয়েছে। প্রাদেশিক পরিষদ থেকে পদত্যাগ করে তিনি নাটক করছেন। পাঞ্জাব ও খাইবার পাখতুনখাওয়াকে আর কত দিন তিনি রাজনৈতিক ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহার করবেন?’
পিটিআই ইতিমধ্যে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় পার্লামেন্ট থেকে পদত্যাগ করেছে। বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, লংমার্চ বন্ধ করলেও দুটি প্রাদেশিক পরিষদ ও দুটি প্রশাসনিক ইউনিট থেকে বেরিয়ে আসার মধ্য দিয়ে ইমরান দেশটির সরকারকে আগাম নির্বাচনের জন্য চাপ দেওয়ার চেষ্টা করছেন। ইমরানের এমন সিদ্ধান্তের ফলে বল এখন সরকারের কোর্টে থাকবে।