যুক্তরাষ্ট্রে যেভাবে দিন কাটাচ্ছেন বলসোনারো

যুক্তরাষ্ট্রে একজন সাধারণ মানুষের মতই দিন কাটাচ্ছেন বলসোনারো

জইর বলসোনারো
ফাইল ছবি: এএফপি

এক সময় লাতিন আমেরিকার সবচেয়ে বড় দেশ ব্রাজিলের শাসনক্ষমতায় ছিলেন জইর বলসোনারো। প্রেসিডেন্ট হিসেবে ২১ কোটি ৪০ লাখ মানুষকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে থাকা সাবেক এ কট্টর ডানপন্থী নেতা এখন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের ছোট একটি শহরে নিভৃতে বসবাস করছেন। খাওয়াদাওয়া করেন ফাস্ট ফুড রেস্তোরাঁয়।

গত বছর ব্রাজিলে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়। নির্বাচনে বামপন্থী প্রার্থী লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভার কাছে ৬৭ বছর বয়সী বলসোনারো পরাজিত হন। লুলার শপথ গ্রহণের আগেই গত ৩০ ডিসেম্বর দেশ ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান বলসোনারো। এর কয়েক দিন পর তাঁর শত শত সমর্থক ব্রাজিলের কংগ্রেস ভবন, প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ ও সুপ্রিম কোর্ট ভবনে হামলা চালান। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ব্রাজিলে বলসোনারোর বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। তবে তিনি সে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রে ছয় সপ্তাহ ধরে বলসোনারো সাধারণ মানুষের মতো জীবন যাপন করছেন। অরল্যান্ডোতে সাবেক ব্রাজিলিয়ান মার্শাল আর্ট চ্যাম্পিয়ন হোসে আলদোর বাড়িতে থাকছেন। স্থানীয় একটি সুপারমার্কেটে যাওয়া–আসা করেন। সম্প্রতি এক ছবিতে কেএফসির একটি ফাস্ট ফুড রেস্তোরাঁয় একা একা বসে ফ্রায়েড চিকেন খেতে দেখা গেছে তাঁকে।

বলসোনারো সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাজনৈতিক বন্ধু। গত শুক্রবার মিয়ামির কাছে ডোরাল শহরে ট্রাম্প ন্যাশনাল হোটেলে মার্কিন কট্টরপন্থী সংস্থা টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে অংশ নেন তিনি। এক সময় বিপুলসংখ্যক মানুষের ভিড়ের উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে বেড়ানো এ নেতা শুক্রবার প্রায় ৪০০ সমর্থকের সঙ্গে কথা বলেন। রাজনীতি চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেন তিনি। এ অনুষ্ঠানটি আয়োজনের ক্ষেত্রে ট্রাম্প নিজে কোনো ভূমিকা পালন করেছেন কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন

এর তিন দিন আগে গত মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) বলসোনারো অরল্যান্ডোর একটি শপিং মলের রেস্তোরাঁয় ব্রাজিলীয় প্রবাসীদের সঙ্গেও কথা বলেন বলসোনারো। এ সময় নির্বাচনে নিজের পরাজয় নিয়ে আবারও প্রশ্ন তোলেন বলসোনারো। নিজেকে যে কারও চেয়ে বেশি জনপ্রিয় বলে উল্লেখ করেন।

বলসোনারোর ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মধ্যে আছে। তিনি ঘোষণা করেছিলেন, জানুয়ারির শেষের দিকে দেশে ফিরবেন। কিন্তু সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে আরও ছয় মাস থাকার জন্য ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করেছেন। তাঁর ছেলে সিনেটর ফ্লাভিও বলসোনারো গত সপ্তাহে বলেছিলেন, সাবেক এ প্রেসিডেন্ট ঠিক কবে দেশে ফিরবেন, তা নিশ্চিত নয়।

সাংবাদিকদের ফ্লাভিও বলেন, ‘এটা আগামীকালও হতে পারে, এখন থেকে ছয় মাস পরও হতে পারে, আবার এমনও হতে পারে, তিনি কখনোই দেশে ফিরবেন না।’
বলসোনারো এখন যুক্তরাষ্ট্রে কী করবেন? তিনি কী এভাবেই সাধারণের মতো জীবন যাপন করবেন, নাকি যুক্তরাষ্ট্রে নিজের অবস্থান জোরালো করার চেষ্টা চালাবেন, তা এখন দেখার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আরও পড়ুন