রাজধানীর মালিবাগে অবৈধভাবে পরিচালিত পানির কারখানায় অভিযান চালাতে গিয়ে আজ রোববার হামলার শিকার হয়েছেন ওয়াসার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও কর্মকর্তারা।
হামলায় বেসরকারি টিভি চ্যানেল মাইটিভির ভিডিওচিত্র গ্রাহক হাসান বিশ্বাস গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ওয়াসার কর্মকর্তাদের দাবি, মালিবাগে ঢাকা বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ এস এ মালেক কলেজের ভেতরে আলাদা একটি জায়গায় অবৈধভাবে পানির ব্যবসা করে আসছিলেন। সেখানে অভিযান চালাতে গেলে তিনি কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের তাদের ওপর লেলিয়ে দেন।
পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় এস এ মালেক ও জসিমউদ্দিন নামের আরেক যুবককে আটক করা হয়েছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, আজ বেলা ১১টার দিকে ঢাকা বিজ্ঞান কলেজের ভেতরে অবস্থিত ওই পানির কারখানায় অভিযান চালান ওয়াসার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খলিল আহমেদসহ ওয়াসার কর্মকর্তারা। সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও ছিলেন। ওই কারখানায় পানির লাইন কেটে দেওয়া হয় ও পানির জারগুলো ভেঙে দেওয়া হয়। এ সময় কলেজের অধ্যক্ষ এস এ মালেক তাঁদের কাজে বাধা দেন। এক পর্যায়ে তিনি উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তাঁর নির্দেশে কলেজের শিক্ষার্থীরা অভিযানকারী দলকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়ে। এতে মাই টিভির ওই সাংবাদিকসহ কয়েকজন আহত হন। পরে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের পর ওই দুজনকে আটক করা হয়।
ওয়াসার ম্যাজিস্ট্রেট খলিল আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, বেশ কিছুদিন আগে ভ্রাম্যমাণ আদালত ওই কারখানাটি সিলগালা করে দিয়েছিলেন। এর পরও অবৈধভাবে পানির ব্যবসা করে আসছিলেন এস এ মালেকসহ আরও কয়েকজন। এমন সংবাদের ভিত্তিতে আজ সেখানে অভিযান চালাতে গিয়ে তাঁরা হামলার শিকার হন। তিনি বলেন, এস এ মালেক যদি দোষ স্বীকার করেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাত্ক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেবেন। এ হামলার ঘটনায় ওয়াসা কর্তৃপক্ষ একটি মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ঘটনাস্থলে গিয়ে সরেজমিনে দেখা যায়, কলেজের শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে হইচই করছেন। তাঁরা অধ্যক্ষ এস এ মালেককে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানান।
কলেজের শিক্ষক তরিকুর রহমান বলেন, আগে থেকে লিখিতভাবে অভিহিত না করে এ অভিযান চালানো হয়েছে। এ কারখানার পানি আশেপাশের এলাকায় সরবরাহ করা হয় এবং কলেজের শিক্ষার্থীরা এখান থেকে পানি পান করেন। হামলার ব্যাপারে তিনি বলেন, এ অভিযানের কারণ জানতে আসলে শিক্ষার্থীদের ধাক্কা দেওয়া হয়। এজন্য শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে পড়ে। তবে গণমাধ্যম কর্মীদের শিক্ষার্থীরা খেয়াল করেননি বলে তিনি দাবি করেন।
এদিকে, থানায় আটক জসিমউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, অধ্যক্ষ আর তিনি এ ব্যবসা পরিচালনা করেন।
এ সময় তাঁর পাশে থাকা এস এ মালেক নিজেকে হাজতের ভেতরের একটি স্থানে নিজেকে আড়াল করার চেষ্টা করছিলেন। তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
শাহজাহানপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. দাউদ সাংবাদিকদের জানান, এ ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।