Thank you for trying Sticky AMP!!

উন্নয়ন কেন্দ্র থেকে কিশোরেরা পালায় কেন

অভিযুক্ত কিশোরদের সংশোধনের জন্য ব্রিটিশরা গড়ে তুলেছিল বোরস্টাল স্কুল। তারই ধারাবাহিকতা আজকের শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র, যেগুলো অব্যবস্থাপনার নজির গড়েছে।

যশোর সদর উপজেলার পুলেরহাটে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের প্রধান ফটক।

যশোর সদর উপজেলার পুলেরহাটে শিশু (কিশোর-কিশোরী) উন্নয়ন কেন্দ্র থেকে ৬ ডিসেম্বর যে আট কিশোর পালিয়েছিল, কর্তৃপক্ষ তাদের মধ্যে সাতজনকে উদ্ধার করে ফিরিয়ে আনতে পেরেছে। বাকি একজন গতকাল শনিবার পর্যন্ত পলাতক ছিল। ৬ ডিসেম্বর রাতে কিশোরেরা যখন চলে যায়, তখন সব সিসিটিভি ক্যামেরা চালু ছিল।

এর আগে গত ২৮ সেপ্টেম্বর যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের এক কিশোরকে চিকিৎসার জন্য বাইরে নিয়ে গেলে সে হারিয়ে যায়। তাকে নজরদারির জন্য সঙ্গে ছিলেন কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রের কমপক্ষে তিনজন কর্মী। শুধু যশোর নয়, পালানোর ঘটনা ঘটেছে টঙ্গীতেও। গত ১৭ নভেম্বর টঙ্গী শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র থেকে আদালতে হাজির করানোর সময় পুলিশের হাত ফসকে এক কিশোর হারিয়ে যায়।

বাংলাদেশে এখন তিনটি শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র। একটি যশোরে আর দুটি গাজীপুরে।

শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে হত্যার অভিযোগও উঠেছে। খবরে বলা হয়েছে, গত ১৩ আগস্ট কথিত ‘বেয়াড়া’ শিশুদের উচিত শিক্ষা দেওয়ার জন্য যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের কর্মীরা ১৮ শিশুর ওপর নির্মম নির্যাতন চালান। এতে তিন কিশোর মারা যায় ও আহত ১৫ কিশোরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় কেন্দ্রের পাঁচ কর্মকর্তা ও সাত বন্দী কিশোরের বিরুদ্ধে মামলা হয়।

শিশু-কিশোরদের সংশোধনের বদলে দেশের শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রগুলো যে অব্যবস্থাপনার নজিরে পরিণত হচ্ছে, তার প্রমাণ ওপরের ঘটনাগুলো। এসব কেন্দ্র থেকে প্রায়ই শিশু-কিশোরদের পালানো, মারধর, আত্মহত্যা, যৌন নির্যাতন, জবরদস্তি ও খুনখারাবির খবর আসে। এ নিয়ে লেখালেখি হয়, তদন্ত কমিটি হয়, কাউকে কাউকে বদলি করা হয়—তারপর সব আগের মতো। ফাঁকে জনবল ঘাটতির অজুহাত দেখিয়ে চাওয়া হয় আরও কর্মী নিয়োগের সুযোগ।

বোরস্টাল থেকে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র

কথিত সন্দেহভাজন, অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত ও বিচারের পর কিশোরদের সংশোধনের জন্য প্রথম সংশোধন কেন্দ্র গড়ে তোলে ব্রিটিশরা। ১৯০২ সালে এ ধরনের প্রথম কেন্দ্রটি প্রতিষ্ঠা হয় ইংল্যান্ডের কেন্ট কাউন্টির গ্রাম বোরস্টালে। এ ধরনের স্কুলে অভিভাবকেরা তাঁদের ‘বেয়াড়া’ সন্তানদের সংশোধনের জন্য পাঠাতে পারতেন।

ঔপনিবেশিক আমলে ব্রিটিশরা তাদের সাম্রাজ্যের যেখানে পেরেছে, সেখানেই বোরস্টাল স্কুল খুলেছে। তৎকালীন ভারতও বাইরে ছিল না। ১৯২৯ সালের ১৪ জুন বিপ্লবী কিশোর যতীন্দ্রনাথ দাসকে লাহোর ষড়যন্ত্র মামলায় পাঠানো হয়েছিল লাহোরের বোরস্টাল জেলে। সেখানেই ৬৩ দিনের অনশনের পর তার মৃত্যু হয়। এ অঞ্চলে ঢাকার কাছে রূপগঞ্জের মোড়াপাড়ার জমিদারদের পরিত্যক্ত বাড়িতে ছিল একরকমের বোরস্টাল স্কুল।

কিশোরদের পালানো, মারধর, আত্মহত্যা, যৌন নির্যাতন, জবরদস্তি ও খুনখারাবির খবর প্রায়ই পাওয়া যায়।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় সংসদ ১৯৭৪ সালে শিশু আইন পাস করার পর ব্রিটিশ ধাঁচের বোরস্টাল স্কুলের দিন শেষ হয়ে যায়। স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭৮ সালে টঙ্গীতে প্রথম প্রতিষ্ঠা করা হয় কিশোর সংশোধন কেন্দ্র। বাংলাদেশে এখন শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র তিনটি। একটি যশোরে আর দুটি গাজীপুরে। গাজীপুরের কোনাবাড়ীর কেন্দ্রটি মেয়েশিশুদের জন্য। যশোর ও টঙ্গীর কেন্দ্র ছেলেশিশুদের জন্য। আসনসংখ্যার দিক থেকে টঙ্গীর কেন্দ্রটি সবচেয়ে বড়।

সেখানে ৩০০টি শিশুকে রাখা যায়। অন্য দুটি কেন্দ্রের প্রতিটিতে ১৫০টি করে আসন রয়েছে। ছেলেশিশুদের কেন্দ্র দুটিতে আসনসংখ্যার অতিরিক্ত শিশুকে রাখার অভিযোগ রয়েছে। দিন দিন তিনটি কেন্দ্রের অবস্থা ক্রমে নাজুকতর হয়ে পড়ছে। তবে জনবলের অভাবের চেয়ে গাফিলতি আর জবাবদিহির অভাবই এসব কেন্দ্রের মূল সমস্যা।

গাফিলতি ঢাকা যাবে কি?

যশোরের শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র থেকে আট শিশুর পালিয়ে যাওয়ার সাম্প্রতিক ঘটনার সরেজমিন হালহকিকত জেনে আর সিসিটিভির ফুটেজ দেখে পুলিশ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে, শিশুদের মূল দালান থেকে আলাদা করে যে জায়গায় রাখা হয়েছিল, সেটি ছিল একটি পরিত্যক্ত পুরোনো ঘর। সংলগ্ন শৌচাগারটিও বেশ পুরোনো। এ শৌচাগারের জানালার গ্রিল ভেঙে চলে যায় আটক কিশোর। জানালা দিয়ে মাঠে নেমে তারা ‘আলাউদ্দিনের চেরাগে ঘষা দিয়ে’ যেন একটি মই খুঁজে পায়। সেটি দিয়ে দেয়াল টপকায় ছেলেরা। তখন পাহারার দায়িত্বে ছিলেন ৮ জন পুলিশ ও ১৬ জন আনসার সদস্য।

ইদানীং কীভাবে যেন মইগুলো বন্দীদের নাগালে পৌঁছে যাচ্ছে। পাঠক নিশ্চয়ই সংবাদমাধ্যমের খবরে জেনেছেন গত ৬ আগস্ট কাশিমপুর কারাগার থেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত কয়েদি কেমন করে দিনে দুপুরে মই দিয়ে দেয়াল টপকে লাপাত্তা হয়ে যান। এর আগে সেই কয়েদি কারাগারে বসেই মই তৈরি করেন। পালানোর সময় তাঁর পরনে কয়েদির পোশাক ছিল না। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কারারক্ষীরা কেউ বাধাও দেননি। তাঁরা মই বানাতে দেখলেও জানতে চাননি সেটা দিয়ে কী হবে।

ফরিদপুরের সেফ হোম থেকে সম্প্রতি পালায় সাত কিশোরী ও তরুণী। শহরের টেপাখোলা এলাকার ‘শান্তিনিবাস’ নামের বৃদ্ধানিবাসটিকে ২০০৬ সালে রূপান্তর করা হয় সেফ হোম হিসেবে।

কাজেই এসব কেন্দ্রের কর্তারা কথায় কথায় লোকবলের ঘাটতি ঘাটতি বলে যে মাতম তোলেন, তার সবটা আমলযোগ্য নয়। যোগ্য লোকের নিয়োগ ও পদায়ন না করাই এখন মূল সমস্যা।

যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র থেকে আটজনের দেয়াল টপকানোর আগে ২৮ সেপ্টেম্বর এক কিশোরের পালানোর ঘটনায়ও গাফিলতি রয়েছে। চিকিৎসকের কাছে নেওয়ার পর কিশোরটিকে গাড়িতে একা রেখে পাহারাদার আনসার, মেডিকেল সহকারী ও চালক চলে যান জলখাবারের সন্ধানে। ফিরে দেখেন সবই আছে, কেবল কিশোরটি নেই। এ গাফিলতি জনবল অভাবের দোহাই দিয়ে ঢাকা যাবে কি?

ফরিদপুরের সেফ হোম থেকে সম্প্রতি পালায় সাত কিশোরী ও তরুণী। শহরের টেপাখোলা এলাকার ‘শান্তিনিবাস’ নামের বৃদ্ধানিবাসটিকে ২০০৬ সালে রূপান্তর করা হয় সেফ হোম হিসেবে। সেখানকার কর্মকর্তারা প্রথমে গুনে দেখেন চারজন নেই, সেটাই প্রচার হয়। এক দিন পর (৫ ডিসেম্বর) জানানো হয়, প্রথম দফার গণনায় ভুল হয়েছিল। চারজন নয়, পালিয়েছেন মোট সাতজন। বলে রাখা ভালো, পালানোর ঘটনার আগের দিন সেফ হোমে নিবাসী ছিলেন মাত্র ৭২ জন। সামান্য এ কয়জনকে গুনতে এমন হেরফের কি শুধু ভুল, নাকি এ সুযোগে আগের গরমিলের হিসাবে মিল আনার চেষ্টা?

কিশোরেরা কেন পালায়

আজ থেকে প্রায় ১৭–১৮ বছর আগে যশোরের শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে গিয়ে দুটি শিশুর সঙ্গে দেখা হয়েছিল। তখন তাদের বয়স হবে ৯ কি ১০ বছর। তারা দুই বন্ধু। ধরা যাক তাদের নাম রতন আর বাবু।

বাবুর নানি ঢাকার নয়াবাজারে রাস্তার ধারে ভাত-তরকারি বেচতেন। বাবু তাঁর সঙ্গে সঙ্গে থাকত। জিন্দাবাহারের কোনো একটা খুপরিতে ঘুমাত তারা। নানির জ্বর-টর হলে বাবু নয়াবাজারে মিনতির কাজ করত। একদিন এক বোঝা নিয়ে এক যাত্রীকে সদরঘাট পৌঁছাতে গিয়ে রতনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। নানি তাদের বন্ধুত্ব পাতিয়ে দেন। একদিন পায়েস রেঁধে সেটা উদ্‌যাপনও করা হয়।

বাবু আর রতন সদরঘাটের মানিকজোড় হয়ে ওঠে। ক্রমে সদরঘাট তাদের ঠিকানা হয়ে দাঁড়ায়। সন্ধ্যায় যাত্রীদের লঞ্চে উঠিয়ে ভোরের যাত্রীদের ধরতে সদরঘাটে থেকে যেতে শুরু করে বাবু। নানিকে একদিন মিটফোর্ড হাসপাতালে রেখে ওষুধের টাকা জোগাড় করতে সদরঘাট যায় বাবু। সেখানে দেখা হয় চেনা এক ব্যক্তির সঙ্গে। তারপরের কথা আর তার কিছু মনে পড়ে না। রতন আর বাবুর জ্ঞান ফেরে যশোর রেলস্টেশনে। তারা তখন একটা থেমে থাকা ট্রেনে।

কীভাবে বাবু আর রতন ঢাকায় ফিরবে? লোকজনের পরামর্শে দুই বন্ধু ঢাকাগামী বাসের সন্ধানে রেলস্টেশন থেকে বাসস্ট্যান্ডে যায়। সেখান থেকে পুলিশ তাদের ভবঘুরে হিসেবে আটক করে পাঠিয়ে দেয় শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে। নানির কাছে ফেরার সব পথ বন্ধ হয়ে যায় বাবুদের। ঘুমাতে পারে না। চোখ বুজলেই নানির মুখ ভেসে ওঠে। রতন বলে, ‘আমরার কী দোষ? আমরা ক্যান আটকা থাকুম?’ সফরসঙ্গী আমলা বাবু-রতনকে বোঝায়, ‘রাস্তার জীবন কি একটা জীবন হলো। শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে কোনো কষ্ট নাই। তিনবেলা খাওয়াদাওয়া, পোশাক–আশাক পাচ্ছ। খেলাধুলার সুযোগও আছে। লেখাপড়াও করা যাবে। কাজ শিখে কারিগরি মিস্ত্রি হতে পারবা।’

এ ঘটনা তুলে ধরার সময় আমাদের চমকে দিয়ে বাবু বলেছিল, ‘সেখানে ভালোবাসা নেই।’ তারপরই ডুকরে কেঁদে উঠে বলে, ‘নানি গো তুই কান্দিস না।’

আইনি জট খুলে শেষ পর্যন্ত বাবু ও রতনকে ঢাকার মুক্ত জীবনে আনা সম্ভব হয়েছিল। সে ভিন্ন কাহিনি। আজকের আলোচ্য বিষয় নয়। শিশুরা কেন শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে থাকতে চায় না, তার খুব সহজ আর গভীর উত্তর ছিল বাবুর কথায়। অনাদর, অবহেলা আর ঘৃণার মধ্যে শিশুরা থাকতে চায় না। তারা পথ খোঁজে বেরিয়ে যাওয়ার।

চাই জবাবদিহি

শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের জন্য রেডিও বিভাগে ‘মীনা পুরস্কার ২০১৫’ পেয়েছিলেন সাংবাদিক ফারহানা পারভিন। প্রশংসিত সেই প্রতিবেদনে তিনি কিশোর কেন্দ্র থেকে মুক্ত হয়ে আসা কিশোর-কিশোরীদের সঙ্গে নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছিলেন।

এক শিশু তাকে বলেছিল, ‘ওখানে খেলার শিক্ষক আছে, সেলাই শেখানোর শিক্ষক আছে, কিন্তু আমার ভালো-মন্দের বিষয়টি বলার মতো কেউ নেই। আমি এমন একজনকে পাইনি যিনি আমাকে বলবেন, এইটা করো না, এটা ভালো না।’ আরেকটি শিশু অকপটে তাঁকে জানিয়েছিল ‘ওখানে অবহেলা অযত্ন আর ঘৃণার মধ্যে থাকতে থাকতে নিজের জীবনের ওপর বিতৃষ্ণা জন্মে। এই বিতৃষ্ণা থেকে জন্ম নেয় নিজেকে নিজে আঘাত করার প্রবণতা। অনেকে এভাবেই শান্তি খোঁজে।’

জবাবদিহিমূলক নীতিমালা ও স্বচ্ছ পরিচালনা পদ্ধতির কোনো বিকল্প নেই

মানসিক সংকটের কোন পর্যায়ে চলে গেলে একটা শিশু নিজেকে নিজেই জখম করতে পারে, তা হৃদয় থাকলেই বোঝা যায়। চাকরি করতে আসা কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়কদের সেই হৃদয় কি আছে? কিশোরদের মানসিক সংকটের গভীর খাদে পড়তে না দেওয়ার জন্য কেতাদুরস্ত মনোবিজ্ঞানী হওয়ার দরকার নেই। একটু মানবিক হলেই চলে। অবশ্য কেউ মানসিক সংকটের খাদে আটকে গেলে সেখান থেকে তাকে টেনে তুলতে মনোবিজ্ঞানী দরকার হতে পারে।

এসব নিয়ে পাঁচ বছর আগে (২০১৫ সালে) সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রতিষ্ঠান পরিচালকের সঙ্গে সাংবাদিক ফারহানা পারভিন কথা বলেছিলেন। প্রতিষ্ঠান পরিচালক তখন জানিয়েছিলেন, আইন অনুযায়ী প্রথমত তাঁরা শিশুদের বয়সভেদে আলাদা রাখা এবং সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে মনোচিকিৎসক নিয়োগের ব্যাপারটাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। তাঁরা পদ বাড়াবেন এবং সেগুলোতে দ্রুত নিয়োগের ব্যবস্থা করবেন। তাঁর আশা ছিল পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে এ প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন হবে।

অবশ্য সাইকো সোশ্যাল কাউন্সিলর নিয়োগের জট খোলেনি। জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফ নিজেদের উদ্যোগে সাময়িকভাবে যশোরসহ সব কটি কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে প্রকল্পভিত্তিক কিছু জনবলের ব্যবস্থা করলেও মূল জনবল কাঠামোয় তাদের কোনো জায়গা নেই। এত দিনেও প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালন পদ্ধতি তৈরি হয়নি। শিশু পরিবার বা শিশুসদন নামে পরিচালিত এতিমখানাগুলো পরিচালনার লিখিত পদ্ধতি আর নিয়মকানুন থাকলেও শিশু উন্নয়নকেন্দ্রগুলো এখনো চলে ‘আগে এটা হয়েছে, আগে এটা হতো’ ধরনের রেফারেন্সে।

সাময়িক মেরামত, অ্যাডহক ব্যবস্থাপনা, বদলি বা সাময়িক বরখাস্ত দিয়ে আখেরে কোনো স্থায়ী সুফল অর্জন সম্ভব নয়। আরও শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র গড়ে তোলার আগে একটা জবাবদিহিমূলক নীতিমালা ও স্বচ্ছ পরিচালনা পদ্ধতির কোনো বিকল্প নেই।

লেখক: গবেষক
nayeem5508@gmail.com