নিয়মানুযায়ী আবেদন ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের একাধিক নির্দেশ সত্ত্বেও বরিশালের হিজলা উপজেলার ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা একজন শিক্ষিকাকে বদলি করছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের ১৪ মে উপজেলার দক্ষিণ বড়জালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকের একটি পদ শূন্য হয়। এ পদে বদলির জন্য উপজেলার পারেকহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাহমুদা বেগম জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেন ওই বছরের ২৫ মে। বিষয়টি সুরাহা না হওয়ায় ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে তিনি বরিশাল বিভাগীয় উপপরিচালকের কাছে পুনরায় আবেদন করেন। বিভাগীয় উপপরিচালক মাহবুব এলাহী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে চিঠি দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। তৎকালীন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাসির উদ্দীন আহমেদ তৎকালীন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আইউব আলীকে ব্যবস্থা নিতে বলেন। কিন্তু মাহমুদাকে বদলি না করে ওই বিদ্যালয়ের শূন্য পদে ২০১৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর অন্য একজন শিক্ষককে পদায়ন করা হয়।
মাহমুদা বেগম বলেন, নতুন একজন শিক্ষক যোগ দিয়েছেন শুনে তিনি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে আবেদন করেন। অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে একটি লিখিত নির্দেশনা দিয়ে শিক্ষক শাহজাহান খানকে অন্যত্র বদলি করে তাঁকে ওই বিদ্যালয়ে বদলির জন্য বলা হয়। কিন্তু সুনীল চন্দ্র দেবনাথ তাঁকে বদলি করেননি। এরপর তিনি প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমানের সুপারিশ নিয়ে চলতি বছর তিনবার শূন্যপদে বদলির আবেদন করেন। কিন্তু এখনো তাঁকে বদলি করা হয়নি।
সুনীল চন্দ্র দেবনাথ হিজলায় সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা পদে প্রায় সাত বছর ধরে চাকরি করছেন। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে তিনি ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তার দায়িত্ব পান। তিনি বলেন, ২০১৫ সালের জুলাইয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী শিক্ষা কমিটির অনুমোদন ছাড়া কোনো শিক্ষককে বদলি করা যাবে না। আর শিক্ষা কমিটি অনুমোদন করেনি বলে তাঁকে ওই বিদ্যালয়ে বদলি করা যায়নি। বদলির জন্য শিক্ষা কমিটির অনুমোদনের বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হয় ২০১৫ সালের ৫ জুলাই। কিন্তু মাহমুদা বেগম আবেদন করেন ২০১৪ সালে, এত দিনে কেন তাঁকে বদলি করা হলো না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ওই সময় আমি দায়িত্বে ছিলাম না।’
মাহমুদা অভিযোগ করেন, ‘উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে ঘুষ দিতে পারিনি বলে আমার বদলি আটকে দিয়েছেন তিনি। টাকা দিলে তাঁর কাছে অনেক অনিয়ম নিয়মে পরিণত হয়।’