হরতাল-অবরোধ পরিস্থিতি স্বাভাবিক

কক্সবাজার সৈকতে হাজারো পর্যটক

নাশকতার ঘটনা কমে আসায় কক্সবাজারে দেশি-বিদেশি পর্যটকের সমাগম বাড়ছে। ঢাকা, চট্টগ্রামের বাইরে সারা দেশে হরতাল কর্মসূচি এখনো বহাল থাকলেও কয়েক দিন ধরে কক্সবাজারে পর্যটক বাড়ছে। হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীরা বলছেন, কক্সবাজারকে হরতালের আওতামুক্ত রাখা গেলে লাখো পর্যটকের ঢল নামবে।

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল-গেস্টহাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার জানান, ২৬ ও ২৭ মার্চ দুই দিনে সৈকত ভ্রমণে আসেন অন্তত ৭৫ হাজার পর্যটক। এ সময় প্রায় ১২ কোটি টাকার ব্যবসা হয়। গতকাল সোমবার কক্সবাজারে অবস্থান করছিলেন ১৫-১৬ হাজার পর্যটক।

গতকাল বেলা ১১টায় সৈকতের লাবণী পয়েন্টে দেখা গেছে, কয়েক হাজার পর্যটক সমুদ্রে গোসল করছেন। সেখানে কথা হয় ঢাকার মগবাজার থেকে আসা ব্যবসায়ী মাহবুব আলমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এখন পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক দেখে পরিবারের সবাইকে নিয়ে সৈকতে ছুটে এসেছি।’

সৈকতের রিম ইকো রিসোর্টের মালিক মোহাম্মদ ইসমাইল জানান, হরতাল-অবরোধ থাকায় গত আড়াই মাস রিসোর্ট খালি ছিল। লোকসান হয়েছে প্রায় ১৬ লাখ টাকা। ২৬ মার্চ থেকে আবার পর্যটক আসা শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, ‘সিটি নির্বাচন উপলক্ষে ঢাকা, চট্টগ্রামে হরতাল প্রত্যাহার হলে আমরা কী অপরাধ করেছি? পর্যটন শহর হিসেবে কক্সবাজারকেও হরতালের আওতামুক্ত রাখা দরকার।’

কক্সবাজারের মারমেইড ইকো বিচ রিসোর্টের মহাব্যবস্থাপক মাহফুজুর রহমান জানান, গত ৫ জানুয়ারি থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত রিসোর্টের ৫২টি কটেজের ৯০ শতাংশ খালি ছিল। এতে কোটি টাকা লোকসান গেছে। এখন অতিথি আসা শুরু হয়েছে।  

সৈকতের হোটেল কল্লোল, মিডিয়া ইন্টারন্যাশনাল, কক্স টুডে, লং বিচ, ওশান প্যারাডাইস, সি প্যালেস, ঝাউতলার সাগরগাঁও, সি কুইনসহ বিভিন্ন হোটেল এখন পর্যটকে ভরপুর।

হোটেল মালিক সমিতি সূত্র জানায়, টানা অবরোধ-হরতালে শহরের তিন শতাধিক হোটেল-মোটেল-গেস্টহাউস-কটেজ বন্ধ ছিল। এ কারণে প্রতিটি হোটেল-মোটেলে দৈনিক ৩০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত লোকসান গুনতে হয়েছে। ছাঁটাই করা হয়েছে ২০ হাজারের বেশি কর্মচারী। পর্যটকের আগমন শুরু হওয়ায় অনেকে চাকরি ফিরে পাচ্ছেন।   

কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্সের সহসভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী জানান, হরতাল-অবরোধের কারণে জেলার হোটেল-মোটেল, রেস্তোরাঁসহ পর্যটনসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে প্রতিদিনের ক্ষতি প্রায় ১৪ কোটি টাকা। এ হিসাবে ৭৪ দিনে ক্ষতি হয়েছে ১ হাজার ৩৬ কোটি টাকা। হরতাল প্রত্যাহার করে আগামী কয়েক মাস পর্যটকদের কক্সবাজার ভ্রমণের সুযোগ নিশ্চিত করা গেলে এই ক্ষতির কিছুটা পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব।