পিলখানা হত্যা মামলা

কাহার আকন্দের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে আদালতের নির্দেশ

পক্ষপাতমূলক তদন্ত করার অভিযোগ এনে পিলখানা হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিআইডির বিশেষ সুপার আবদুল কাহার আকন্দের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
তৃতীয় মহানগর দায়রা জজ আখতারুজ্জামান বহুল আলোচিত এই মামলার রায়ে এ আদেশ দেন। গত ৫ নভেম্বর পিলখানা হত্যা মামলার এ রায় ঘোষণা করা হয়।
রায়ের প্রত্যয়িত অনুলিপি আসামির আইনজীবীদের দেওয়া হয়েছে। আদালতের আদেশের অনুলিপি স্বরাষ্ট্রসচিব ও পুলিশের মহাপরিদর্শকের কাছে পাঠাতেও বলা হয়েছে।
একই আদালত রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি আনিসুল হক ও মোশাররফ হোসেন কাজল আদালতকে অসহযোগিতা করেছেন বলে অভিযোগ করেন। আইনজীবী আনিসুল হক ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়ে আইনমন্ত্রী হয়েছেন। আর মোশাররফ হোসেন কাজল বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি ছিলেন।
আদালতের আদেশে বলা হয়, অবসরপ্রাপ্ত সুবেদার তোরাব আলী বিডিআর বিদ্রোহের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বিদ্রোহের ঘটনা তিনি আন্তরিক ও আনন্দের সঙ্গে উপভোগ করেন। তিনি বিদ্রোহে মদদও দিয়েছেন। তোরাব আলীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্তকারী কর্মকর্তা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদায় করা ছাড়া আর কোনো তথ্য বের করতে পারেননি। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আবদুল কাহার আকন্দ আদালতে জেরার জবাবে বলেন, তোরাব আলীর বিরুদ্ধে আর কেউ কোনো সাক্ষ্য প্রদান করেননি। আদালত রায়ে প্রশ্ন করেন, কেউ সাক্ষ্য না দিলে কিসের ভিত্তিতে তদন্তকারী কর্মকর্তা তোরাব আলীকে পক্ষভুক্ত করলেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিলেন? আদালত মনে করেন, কাহার আকন্দ পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে তোরাব আলীর বিরুদ্ধে কোনো সাক্ষ্য রেকর্ড করেননি। তিনি তদন্তকারীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আদেশ দেন।
জানতে চাইলে কাহার আকন্দ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি এখনো রায়ের কোনো কপি পাইনি। এতে কী আছে, আমি জানি না।’
উল্লেখ্য, রায়ে পিলখানায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে হত্যার দায়ে ডিএডি তৌহিদসহ ১৫২ জনের ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়। আর বিএনপির নেতা নাসির উদ্দীন পিন্টু ও আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা তোরাব আলীসহ ১৬১ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ডসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজার আদেশ হয়েছে ২৫৬ জনের। আর অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হওয়ায় খালাস পান ২৭৭ জন।